যৌথ প্রযোজিত ছবির ‘প্রতারণা’ নিয়ে উত্তাল চলচ্চিত্র ঐক্য পরিবার
“চলচ্চিত্র ঐক্য পরিবার”-এর সদস্যরা আজ দুপর ১২টায় বিএফডিসির সামনে অবস্থান নেন। যৌথ প্রযোজিত সিনেমা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগে প্রথমে তাঁরা বিএফডিসির ভেতর তারপর এর সামনে সমাবেশ করেন। এ সময় চলচ্চিত্র তারকাদের উপস্থিতি ও স্লোগানে গোটা এলাকা সরব হয়ে উঠে।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা ফারুক, মিশা সওদাগর, রিয়াজ, জায়েদ খান, রুবেল, পপি, পরীমনি, সুব্রত, আলীরাজ, বাপ্পী, ইমন, সাইমন, কায়েস আরজু, অমৃতা, শান, শিমুল খানসহ চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সমিতির নেতাদের মধ্যে ছিলেন পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম খোকন, পরিচালক শাহীন সুমন এবং প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরুসহ অনেকেই।
অভিনেতা ফারুক বলেন, “আমাদের চলচ্চিত্র মানুষের কথা বলে, স্বাধীনতার কথা বলে। ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প বিকশিত হতে শুরু করে। সেই চলচ্চিত্র আজ ভিনদেশিদের দালালদের কালো থাবায় কুলষিত। আমাদের সেন্সর বোর্ড আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের কথা না ভেবে আর কারও কথা ভাবলে আমরা তা মানবো না। এখন চলচ্চিত্রের মানুষদের মুখে থু থু দিচ্ছে ভিনদেশি দালালরা। অনেক সহ্য করেছি, আর না। এবার আমরা রুখে দাঁড়াবো।”
পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, “ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক শ্রেণির মানুষ আমাদের চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করতে যাচ্ছে। এফডিসিকে বাঁচাতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, “চলচ্চিত্রকে বাঁচানোর জন্যে আমরা রাস্তায় নেমেছি। চার থেকে পাঁচ লাখ মানুষ চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত। তাঁদের বাঁচাতে হলে এই অনিয়মের যৌথ প্রযোজনা বন্ধ করতে হবে।”
বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, “বঙ্গবন্ধুর এফডিসি, এখানে কোনো ব্যক্তির একক ক্ষমতার প্রভাব চলতে দেওয়া যাবে না। চলচ্চিত্র পরিবার আমরা আজ এক হয়েছি। এখান থেকে সকল অনিয়ম দূর করবোই।”
শিল্পী সমিতির সহসভাপতি অভিনেতা রিয়াজ বলেন, “আমরা কিছুতেই যৌথ প্রযোজিত প্রতারণার ছবি মেনে নিবো না। আন্দোলন মাত্র শুরু হয়েছে। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাবো। এই অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাবো।”
অভিনেত্রী পপি বলেন, “যৌথ প্রযোজনায় ছবি আমরা চাই না। যদি যৌথ প্রযোজনায় ছবি করতে হয় তবে নীতিমালা অনুসারে করতে হবে। এভাবে প্রতারণা করে ছবি করা যাবে না।”
সমাবেশে পরীমনির মন্তব্য, “আমাদের এভাবে রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হবে ভাবতে পারিনি। চলচ্চিত্রকে ভালোবেসে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছি। এর শেষ দেখতে চাই। সব ধরনের অনিয়ম বন্ধ হোক এটাই চাই।”
এরপর, দুপুর ১টার দিকে বিএফিডিসির সামনে থেকে “চলচ্চিত্র ঐক্য পরিবার”-এর সদস্যরা ইস্কাটনে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সামনে গিয়ে অবস্থান শুরু করেন। সেখানে এক প্রতিবাদ সমাবেশে খল অভিনেতা ও প্রযোজক ডিপজল বলেন, “সেন্সর বোর্ডে যাঁরা আছেন তাঁরা আমাদেরই মানুষ। তাঁরা যে কাজ করছেন সেটা খুব অন্যায়। আমাদের দেশের কোনো স্যাটেলাইট চ্যানেল-সিনেমা ভারতে চলে না। তাহলে এদেশে ভারতীয় চ্যানেল, ছবি কেন চলবে? আমাদের দেশে যারা ভারতীয় ছবি দেখেন তারা এটা বর্জন করুন। শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে এদেশে ভারতের ছবি চলতে দেবো না। যদি যৌথ প্রযোজনার নামে প্রতারণার ছবি চলে তবে সিনেমা হল সিল-গালা করে দেওয়া হবে।”
এদিকে, আন্দোলনকারী চলচ্চিত্র ঐক্য পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জরুরি আলোচনায় বসেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সেখানে উপস্থিত রয়েছেন অভিনেতা ফারুক, অঞ্জনা, মিশা সওদাগর, পপি, জায়েদ খান, বদিউল আলম খোকনসহ আরও কয়েকজন।
Comments