বাইসাইকেল শপ

আহমেদ সাদাত মোমেন বাইসাইকেল শপ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জায়ান্ট বাইসাইকেলের বাংলাদেশের পরিবেশক। ব্র্যান্ড বাইসাইকেল বলতে যা বোঝায় তা প্রথম বাংলাদেশে আসে তারই হাত ধরে। আর তার পরিবেশিত জায়ান্ট ব্র্যান্ডের বাইসাইকেল বাইসাইকেলপ্রেমীদের মধ্যে অসম্ভব জনপ্রিয়। যেহেতু আমরা আমাদের আনন্দধারার এই সংখ্যা করছি ভ্রমণ নিয়ে, আর মূল বিষয়বস্তু বাইসাইকেল তাই আহমেদ সাদাত মোমেনের মুখ থেকেই শুনলাম এই বিষয়ে তার যাত্রার কথা। ছবি : শাহরিয়ার কবির হিমেল

 

ব্যবসায়িক চিন্তা নিয়েই মূলত বাইসাইকেলের ব্যবসা শুরু করা। মানুষের চাহিদা সেটা এগিয়ে নিয়েছে। সময়ের সঙ্গে ইচ্ছা হয় কোনো একটি ভালো ব্র্যান্ডের প্রডাকশন দেশে করা। এটা ইচ্ছা বাস্তবায়নের কাজ চলছে। জায়ান্টের সারা পৃথিবীতে মাত্র পাঁচটি কারখানা আছে। সেখান থেকেই সারা পৃথিবীতে তারা পণ্য সরবরাহ করে। এমনকি অনেক বড় কোম্পানির সাইকেলও এই কোম্পানির কারখানায় তৈরি হয়। দোকানের শুরুতে আমরা তিনটি ব্র্যান্ডের সাইকেল এনেছিলাম। কিন্তু এই ব্র্যান্ডের পণ্যের দাম এখানকার মানুষের সাধ্যের মধ্যে থাকে। বাইসাইকেল শপ বিডি নামে শুরু করেছিলাম আমাদের দোকান। এখনো এই নামের সঙ্গেই জায়ান্টের বিপণন করছি।

আমাদের মার্কেট বেশ ভালোই বলব। গত আড়াই বছরে যে চাহিদা পাচ্ছি তাতে আমরা খুশি। যেহেতু এই সাইকেলগুলোর দাম বাজারের সাধারণ সাইকেলের তুলনায় বেশি, তাই একটি নির্দিষ্ট গ্রুপের মানুষকেই আমরা শুধু পাচ্ছি। যারা সাইকেলের ব্যাপারে সৌখিন তারাই মূলত আমাদের গ্রাহক। অনেক সাইকেল চালানোর পর সাইকেলের ব্র্যান্ড সম্পর্কে যারা সচেতন হয় মূলত তারাই আসে আমাদের কাছে এবং এই ক্ষেত্রে আমাদের তেমন কোনো প্রতিযোগীও নেই।

আহমেদ সাদাত মোমেন
অনেকেই এখন সাইকেল চালিয়ে অফিসে যায়, এটি স্বাস্থ্যের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের জন্যও ভালো। ছবি : শাহরিয়ার কবির হিমেল

শীতের সময়টা সাইকেলিংয়ের অনেক বেশি কাজ হতো। এবার দেখছি তা একটু কম। দৈনন্দিন কাজের চাপের কারণেই হয়তো সাইকেলিংয়ের ওপর মানুষের ঝোঁকটা একটু কমে গেছে, কিন্তু কিছু গ্রুপ আছে যারা নিয়মিতভাবেই তাদের কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সাইকেলের বিক্রি এখন কিছু কমে গেলেও পার্টস বিক্রি হচ্ছে। সাইকেলের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য সরকারের কিছু সহযোগিতা প্রয়োজন। অনেকেই এখন সাইকেল চালিয়ে অফিসে যায়, এটি স্বাস্থ্যের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের জন্যও ভালো। কিন্তু আমাদের দেশের আবহাওয়া সাইকেল চালিয়ে অফিসে যাওয়ার পর সেখানে ফ্রেশ হওয়ার পরিপূর্ণ সুযোগ সব অফিসে থাকে না। যার কারণে অনেকে আগ্রহ থাকার পরও সাইকেলের দিকে যাচ্ছে না।

সাইকেলিং গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য গ্রুপগুলো কাজ করে যাচ্ছে। গ্রুপের কোনো সদস্য যদি হেলমেট ছাড়া সাইকেল চালায় এবং যদি কারো নজরে আসে তাহলে তার ছবি তুলে নিজেদের গ্রুপে শেয়ার করছে যাতে সে সচেতন হয়ে যায়। কেননা কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে হেলমেট মাথায় আঘাত লাগার ঝুঁকি কমায়। আমাদের দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থার যে অবস্থা তাতে সাইকেলের জন্য একটা আলাদা লেন রাখা দরকার। এতে করেও দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকটাই কমবে।

সাইকেল নিয়ে প্রথম কাজ শুরু করার সময় আমরা একটা সাইকেল রাইড করতাম শুক্রবারে। আমাদের পরিচিতজনের মাধ্যমে এবং ফেসবুক গ্রুপে এই প্রচারণা করতাম। শুক্রবার ভোর ৫টায় প্রায় ৩০-৪০ জনের একটা গ্রুপ নিয়ে আমরা এই রাইড করতাম। যেকোনো সাইকেল নিয়ে এই রাইডে আসতে পারত সাবাই। সবাই একসঙ্গে রাইড শেষে নাশতা করতাম। সাইকেলের প্রতি যাদের ভালোবাসা আছে তারাই মূলত আসত। এখনো মাসে একবার আমরা এটা করি। আমাদের এই রাইডে ফার্স্ট এইডের সব ব্যবস্থাসহ একটি গাড়ি থাকে নিরাপত্তার জন্য।

গত ১৬ ডিসেম্বর বিডি সাইকেলিস্টের উদ্যোগে গিনেজ বুকে নাম লেখানোর জন্য যে প্রচেষ্টা তা আমার খুব ভালো লেগেছে। তাদের মধ্যে এত বড় জায়গায় ওঠার জন্য কাজ শুরু হয়ে গেছে। এমন ভাবে সাইকেলিং আরো সামনে এগোবে বলে আমার বিশ্বাস।

Comments

The Daily Star  | English

New uniform, monogram sans boat on the cards for police

According to police sources, a new monogram for the Bangladesh Police has already been determined. It will no longer feature a boat

5h ago