জন্মদিনে ফিরে দেখা সুবীর নন্দী

বাংলা গানের শ্রোতাদের বহু জনপ্রিয় গান উপহার দেওয়া কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীর ৬৮তম জন্মদিন আজ মঙ্গলবার।
সুবীর নন্দী (১৯৫৩ – ২০১৯)। ছবি: ফাইল ফটো

বাংলা গানের শ্রোতাদের বহু জনপ্রিয় গান উপহার দেওয়া কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীর ৬৮তম জন্মদিন আজ মঙ্গলবার।

২০১৯ সালের ৭ মে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে যাওয়া এই শিল্পী ৫ বছর আগে দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন তার প্রিয় গান ও তাকে অনুপ্রাণিত করা শিল্পীদের প্রসঙ্গে।

তার গাওয়া গানগুলোর মধ্যে প্রিয় কিছু গানের কথা জানতে চাইলে কিছুক্ষণ চুপ থেকে তিনি বলেছিলেন, 'আমার গাওয়া প্রতিটা গানই সমান প্রিয়। তবে, কিছু গান আছে যেমন- 'চাঁদে কলঙ্ক আছে যেমন', 'পাখি রে তুই দূরে থাকলে' ও 'আমার দুচোখ অনন্ত মেঘ'। এই গানগুলো বুকের কোথায় যেন ছুঁয়ে থাকে।' 

আর তাকে অনুপ্রাণিত করা শিল্পীদের তালিকায় রেখেছিলেন কে এল সায়গল, পঙ্কজ কুমার মল্লিক, জগজিৎ সিং, মান্না দে ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। 

সুবীর নন্দী তার দরদমাখা কণ্ঠের মাধ্যমে মুগ্ধ রাখতেন শ্রোতাদের। এখনো তিনি সুরের এক অদ্ভুত মায়াজাল ছড়িয়ে রেখেছেন শ্রোতাদের মনের গহীনে।

১৯৫৩ সালের ৩০ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সুবীর নন্দী। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব কেটেছে চা বাগানে।

সুবীর নন্দীর কণ্ঠে অমর গানগুলোর মধ্যে রয়েছে: 'দিন যায় কথা থাকে', 'আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়', 'পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই', 'আশা ছিল মনে মনে', 'মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই', 'হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে' ও 'বন্ধু তোর বরাত নিয়া'।

এ তালিকায় আরও আছে: 'বন্ধু হতে চেয়ে তোমার', 'কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো', 'চাঁদে কলঙ্ক আছে যেমন', 'পাখি রে তুই দূরে থাকলে', 'আমার দু'চোখ অনন্ত মেঘ, 'পাহাড়ের কান্না দেখে', 'আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি', 'একটা ছিল সোনার কইন্যা' এবং 'ও আমার উড়াল পঙ্খীরে' গানগুলো।

সুবীর নন্দীর সংগীতে হাতেখড়ি মা পুতুল রানীর কাছে। পরে ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন তিনি। সিলেট বেতারে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে। ১৯৭০ সালে ঢাকা রেডিওতে 'যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়' শিরোনামের গানটিতে কণ্ঠ দেন। গানটি রচনা করেন মোহাম্মদ মুজাক্কের। সুরারোপ করেন ওস্তাদ মীর কাসেম।

সুবীর নন্দী প্রথমবারের মতো ১৯৭৬ সালে 'সূর্যগ্রহণ' চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দেন। ১৯৮১ সালে তার একক অ্যালবাম 'সুবীর নন্দীর গান' ডিসকো রেকর্ডিং থেকে প্রকাশিত হয়।

সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৯ সালে সুবীর নন্দীকে 'একুশে পদকে' ভূষিত করে। তিনি ৫ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে: 'মহানায়ক' (১৯৮৪), 'শুভদা' (১৯৮৬), 'শ্রাবণ মেঘের দিন' (১৯৯৯), 'মেঘের পরে মেঘ' (২০০৪) ও 'মহুয়া সুন্দরী' (২০১৫)।
 

Comments

The Daily Star  | English

Personal data up for sale online!

A section of government officials are selling citizens’ NID card and phone call details through hundreds of Facebook, Telegram, and WhatsApp groups, the National Telecommunication Monitoring Center has found.

1h ago