এক নজরে আব্দুল জব্বার

Abdul Jabbar

বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী আব্দুল জব্বার আজ (৩০ আগস্ট) সকালে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বরেণ্য এই শিল্পী সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো পাঠকদের কাছে:

আব্দুল জব্বার ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে গান গাওয়া শুরু করেন। চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান গেয়েছিলেন ১৯৬২ সালে। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হোন।

১৯৬৪ সালে জহির রায়হান পরিচালিত “সংগম” ছবির গানে কণ্ঠ দেন তিনি। ১৯৬৮ সালে “এতটুকু আশা” ছবিতে সত্য সাহার সুরে তাঁর গাওয়া “তুমি কি দেখেছ কভু” গানটি ভীষণ  জনপ্রিয়তা লাভ করে। সেই বছর “পীচ ঢালা পথ” ছবিতে রবীন ঘোষের সুরে “পীচ ঢালা এই পথটারে ভালবেসেছি” ও “ঢেউয়ের পর ঢেউ” ছবিতে রাজা হোসেন খানের সুরে “সুচরিতা যেওনাকো, আর কিছুক্ষণ থাকো” এ দুটি গান তাঁকে এনে দেয় আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা।

১৯৭৮ সালে “সারেং বৌ” ছবিতে আলম খানের সুরে তাঁর গাওয়া “ও রে নীল দরিয়া” গানটিও ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। চলতি বছর (২০১৭) প্রকাশিত হয় “কোথায় আমার নীল দরিয়া” শিরোনামে তাঁর প্রথম মৌলিক অ্যালবাম।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত “সালাম সালাম হাজার সালাম”, “জয় বাংলা বাংলার জয়”-সহ অনেক দেশাত্মবোধক গানের গায়ক হিসেবে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তাঁর গাওয়া “তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়”, “সালাম সালাম হাজার সালাম” এবং “জয় বাংলা বাংলার জয়” গান তিনটি ২০০৬ সালের মার্চ মাস জুড়ে বিবিসি বাংলার আয়োজনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাংলা ২০ গানের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে।

১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা যোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে অনেক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তাঁর গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের সময় ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়য়ের সঙ্গে মুম্বাইয়ের বিভিন্নস্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন আব্দুল জব্বার।

বরেণ্য এ শিল্পী অনেক ছবিতে প্লেব্যাক করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হলো: সংগম (১৯৬৪), নবাব সিরাজউদ্দৌলা (১৯৬৭), উলঝন (১৯৬৭), পীচ ঢালা পথ (১৯৬৮), এতটুকু আশা (১৯৬৮), ঢেউয়ের পর ঢেউ (১৯৬৮), ভানুমতি (১৯৬৯), ক খ গ ঘ ঙ (১৯৭০), দীপ নেভে নাই (১৯৭০), বিনিময়, (১৯৭০), জীবন থেকে নেয়া (১৯৭০), নাচের পুতুল (১৯৭১), মানুষের মন (১৯৭২), স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা (১৯৭৩), ঝড়ের পাখি (১৯৭৩), আলোর মিছিল (১৯৭৪), সূর্যগ্রহণ (১৯৭৬), তুফান (১৯৭৮), অঙ্গার (১৯৭৮), সারেং বৌ (১৯৭৮), সখী তুমি কার (১৯৮০) ও কলমিলতা (১৯৮১)।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা। এরমধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক (১৯৭৩), একুশে পদক (১৯৮০), স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৯৬), বাচসাস পুরস্কার (২০০৩), সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস-আজীবন সম্মাননা (২০১১) ও জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার।

আরও পড়ুন: চলে গেলেন সংগীতশিল্পী আব্দুল জব্বার

Comments

The Daily Star  | English

Interest payments, subsidies soak up almost half of budget

Interest payments and subsidies have absorbed nearly half of Bangladesh’s total budget expenditure in the first seven months of the current fiscal year, underscoring growing fiscal stress and raising concerns over public finances.

2h ago