ফিচার

কোরবানির সরঞ্জাম

মাংস কাটা এবং কোরবানির পশু জবাই করার বিভিন্ন ধাপে ছুরি, দা, চাপাতি এসব তো ব্যবহার করা হয়ই। কোরবানি ঈদে এসবের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করে এ সময় রাজধানী ঢাকাসহ প্রত্যন্ত জনপদের কামারপল্লীগুলো অনেকটাই ব্যস্ত সময় পার করে। দগদগে আগুনে গরম লোহায় ওস্তাদ-সাগরেদের পিটাপিটিতে মুখর হয়ে উঠেছে কামারশালা। আবার এসব ধাতব সরঞ্জামাদি শান দিতে শানের দোকানগুলোতেও ভিড় ক্রমেই বাড়তে থাকে সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে। ভ্রাম্যমাণ শানদানিদেরও অনেক ভালো সময় কাটে এই মৌসুমে। রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ পাইকারি কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারের কামারশালাগুলোর ব্যস্ততা এখন সবচেয়ে বেশি। ঈদে হাজার হাজার গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ, উট, দুম্বা ইত্যাদি পশু কোরবানি করা হয়ে থাকে। এসব পশু জবাই থেকে শুরু করে রান্নার চূড়ান্ত প্রস্তুতি পর্যন্ত দা-বঁটি, ছুরি-ছোরা, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার আবশ্যকীয় হয়ে যায়।


ঈদের আগেই পশু জবাই করার ছুরি, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি, চাপাতি, প্লাস্টিক ম্যাট, চাটাই, গাছের গুঁড়িসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখতে হবে। ছুরি বা চাপাতি পাবেন আপনার আশপাশের কামারশালা বা এ জাতীয় দোকানগুলোতে। চাটাই ও গাছের গুঁড়ি পাবেন গরুর হাটেই। অনেক ভ্রাম্যমাণ দোকানি এসব কিছু বিক্রি করে থাকেন।
দরদাম : বাজারে বিভিন্ন দামের ছুরি, বঁটি, চাপাতি, কাঠের গুঁড়ি পাওয়া যায়। তবে দরদাম করে কেনাই ভালো। বাজার ঘুরে দেখা গেল পশু জবাইয়ের বড় ছুরির দাম ১ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। ছোট ছুরির দাম ২৫০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত। বড় ছুরিগুলো পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে। দেশি চাপাতিগুলো কেজি হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ওজনের চাপাতির দাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়া বিদেশি চাপাতির দাম পড়বে ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। বঁটি প্রতিটির দাম পড়বে ৩০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। হাড় কাটার ছোট চাইনিজ কুড়াল পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। গাছের গুঁড়ি বা খাইটা পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। মাংস রাখার পলি ও প্লাস্টিক ম্যাটের দাম পড়বে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। বিভিন্ন ধরনের চপিং বোর্ড কেনা যাবে ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। হ্যান্ড মিট কাটার পাওয়া যাবে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়। জীবাণু ও দুর্গন্ধনাশক তরল ও ফ্লোরেক্স বোতলপ্রতি দাম পড়ে ১৮০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
প্রাপ্তিস্থান : ছুরি, বঁটি, চাপাতিসহ প্রয়োজনীয় সব জিনিসই পাবেন কারওয়ানবাজার, নিউমার্কেট, গুলশান-১ ডিসিসি মার্কেট, চকবাজার, কাপ্তান বাজার, খিলগাঁও বাজার, মিরপুর-১সহ সিটি করপোরেশনের সব মার্কেটেই। আগেভাগেই এসব প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ সংগ্রহ করে রাখলে ঈদের দিন আর বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হবে না।
কিছু টিপস
১. ঈদের আগে আগে ধার দেয়া কিংবা নতুন ছুরি কেনার কাজটি না করে বরং আগেভাগেই সেরে রাখুন। এতে করে শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো হবে না, আবার চড়া দামও গুনতে হবে না।
২. ঈদের আগের দিনই পশু জবাই করার ছুরি, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি, চাপাতি, প্লাস্টিক ম্যাট, চাটাই, গাছের গুঁড়িসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখতে হবে। ছুরি বা চাপাতি পাবেন আপনার আশপাশের কামারশালা বা এ জাতীয় দোকানগুলোতে। চাটাই ও গাছের গুঁড়ি পাবেন গরুর হাটেই। অনেক ভ্রাম্যমাণ দোকানি এসব কিছু বিক্রি করে থাকেন।
৩. কোরবানির ঈদে অনেকেই খেয়াল করেন না, মাংস তৈরি হয়ে গেলে তা বাসায় নিয়ে আবার প্রক্রিয়াকরণ করতে হয়। এ সময়ও বেশ কিছু অনুষঙ্গের বেশ প্রয়োজনীয়তা লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে অন্যতম চপিং বোর্ড, মিট হ্যামার, কিমা মেশিন ইত্যাদি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ঈদের দিন মাংস নিয়ে খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হয় না। তাই সুবিধামতো কাজগুলো ধীরে ধীরে সারিয়ে রাখুন।
 শাখাওয়াত হোসেন সাফাত
ছবি : সংগ্রহ

Comments

The Daily Star  | English

Customs operations resume at Ctg port after 2-day shutdown

Operations have resumed, including both import and export activities

1h ago