‘ভার্চুয়াল অপহরণ’ বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ
গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে একটি 'ভার্চুয়াল অপহরণ' কেলেঙ্কারিতে এক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর পরিবারকে দুই লাখ ৮৮ হাজার ডলার মুক্তিপণ দিতে হয়েছে।
সম্প্রতি, নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে প্রতারণার অন্তত তিনটি ঘটনার খোঁজ পেয়েছে। এরপরই পুলিশ তাদেরকে 'হাই অ্যালার্ট' থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারণাটি সাধারণত শুরু হয় একটি ফোন কলের মাধ্যমে। যাতে দাবি করা হয় যে, শিক্ষার্থীকে একটি অপরাধে জড়িত করা হয়েছে। গ্রেপ্তার, অস্ট্রেলিয়া থেকে নির্বাসন ও আইনি উদ্যোগ এড়াতে প্রতারক চক্রটি নির্দিষ্ট পরিমাণের অর্থ দেওয়ার দাবি করে।
পুলিশের ভাষ্য, যখন চক্রটি বুঝতে পারে শিক্ষার্থী ভীত হয়ে তাদের ফাঁদে আটকা পড়েছে তখন তাকে নানান নির্দেশ মানতে বাধ্য করা হয়।
তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে এবং একটি হোটেল রুম ভাড়া নিয়ে ক্যামেরার সামনে চোখ বেঁধে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই ভিডিওগুলো বিদেশে অবস্থানরত শিক্ষার্থীর মা-বাবার সঙ্গে করা হয় শেয়ার। তারা তাদের অপহৃত সন্তানের 'মুক্তির' বিনিময়ে স্ক্যামারদের কাছে বড় অংকের টাকা পাঠায়।
অভিনব এই 'ভার্চুয়াল অপহরণ' ঘটনায় চীনের একটি পরিবারকে দুই লাখ ৮৮ হাজার ডলার অস্ট্রেলিয়ার বাইরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মুক্তিপণ হিসেবে জমা দিতে হয়েছে।
নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশকে শুধুমাত্র চলতি অক্টোবরেই আরও দুইটি ঘটনার কথা জানানো হয়েছে। ওই ঘটনায় পাঁচ লাখ ডলার মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে।
ডাকাতি ও গুরুতর অপরাধ স্কোয়াডের গোয়েন্দা সুপারিনটেনডেন্ট জোসেফ ডুইহি গণমাধ্যমকে বলেছেন, প্রতারক চক্রটি দ্রুত তাদের কৌশল পরিবর্তন করছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, সংগঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রের ভার্চুয়াল অপহরণগুলো গত দশকে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে এবং তারা সংগঠিত হয়ে উঠছে। কিছু ক্ষেত্রে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে স্ক্যামাররা সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে কয়েক মাস ধরে কথা বলছেন।
তিনি বলেন, 'আমরা এমন কয়েকটি ঘটনাও দেখেছি যেখানে ভুক্তভোগীকে শেষ পর্যন্ত জোরপূর্বক অপরাধী হতে বাধ্য করা হয়েছে। আরও শিক্ষার্থীদের প্রতারণা করার জন্য তাদের হয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'
ভিক্টোরিয়া পুলিশ এ বছরের শুরুতে রাজ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে এমন প্রতারণা সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছিল।
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments