মালয়েশিয়ায় শিকলে বাঁধা অপহৃত বাংলাদেশি উদ্ধার
মালয়েশিয়ায় অপহৃত এক বাংলাদেশিকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। অপহরণের ৪ দিন পর পরিত্যক্ত একটি ভবন থেকে ৪৫ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় একটি শ্রমিক হোস্টেল থেকে ৩৪ ও ৪৩ বছর বয়সী ২ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তারকৃত ও উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিদের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। তবে, বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।
এ নিয়ে গত ১৫ দিনের মধ্যে মালয়েশিয়ায় ২ প্রবাসী বাংলাদেশিকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে অপহৃত বাংলাদেশি সোহেল মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
গতকাল শুক্রবার কুয়ালালামপুর সেন্টুল জেলা পুলিশের প্রধান এসিপি বেহ এং লাই স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, সেরি কামবাগানের পরিত্যক্ত একটি শ্রমিক কোয়ার্টার থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় ওই বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ২ বাংলাদেশির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সূত্র ধরে অপহৃত বাংলাদেশিকে উদ্ধার করতে সেখানে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ।
অপহরণকারীরা অপহৃতের মোবাইল ব্যবহার করে বাংলাদেশে তার পরিবারকে ফোন দিয়ে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণ না দিলে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় তারা।
এরপর মালয়েশিয়া থানায় অভিযোগ দায়েরের পর বাংলাদেশিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে পুলিশ।
গত ১০ অক্টোবর অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ২ বাংলাদেশি ও ৩ মালয়েশিয়ানসহ মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ক্লাং উপত্যকা থেকে আটক মালয়েশিয়ানদের মধ্যে ৩৩ বছর বয়সী স্বামী-স্ত্রী ও ৫৬ বছর বয়সী এক নারী রয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে অপহরণের সময় ব্যবহৃত ৬টি মোবাইল ফোন ও একটি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ৭ অক্টোবর ৫ জনের চক্রটি ওই বাংলাদেশিকে অপহরণ করে।
অপহরণকারী ২ বাংলাদেশিকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে এবং স্থানীয় ৩ নাগরিককে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
অপহরণের জন্য দণ্ডবিধির ৩৬২ ধারায় মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান এসিপি বেহ এং লাই।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হলে কাউন্সিলর জি এম রাসেল রানা বলেন, 'সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে মিশনকে এখনো কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। তবে মিশন থেকে বিস্তারিত জানতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।'
এর আগে অপহরণের ১১ দিন পর গত ৬ অক্টোবর প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী সোহেল মিয়ার (৩৯) মরদেহ উদ্ধার করে মালয়েশিয়া পুলিশ। মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা দিয়েও তাকে রক্ষা করতে পারেনি পরিবার।
সেলাঙ্গর রাজ্যের সেরিকাম বাগানের তামিং জায়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের একটি কারখানার পেছনের জঙ্গল থেকে সোহেল মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তখন পুলিশ জানিয়েছিল, তার মরদেহে পচন শুরু হয়েছিল এবং হাত ও মুখ টেপ দিয়ে বাঁধা ছিল।
এ অপহরণ ঘটনায় আটক ৪ প্রবাসী বাংলাদেশির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সূত্র ধরে সোহেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সোহেলের মরদেহ উদ্ধারের আগে বাংলাদেশের বরগুনা থেকে আটক নাসির উদ্দিনের কাছ থেকে মুক্তিপণের ৫ লাখ উদ্ধার করে র্যাব।
লেখক: মালয়েশিয়াপ্রবাসী সাংবাদিক
Comments