৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাসের সুযোগ
যে কোনো দেশের নাগরিক ৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসের সুযোগ পেয়ে থাকেন। এই প্রোগ্রামকে 'গোল্ডেন টিকিট' হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
ব্যবসায় উদ্ভাবন ও বিনিয়োগকে লক্ষ্য করে বিনিয়োগকারীকে কমপক্ষে ৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। অনুমোদিত বিনিয়োগে তাদের অবশ্যই কিছু প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে হবে এবং ভিসা থাকাকালে সেই বিনিয়োগটি ধরে রাখার নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
মূল আবেদনকারীর জন্য ভিসা ফি ৯ হাজার ১৯৫ ডলার। অতিরিক্ত ফি দিয়ে আবেদনকারী পরিবারের অন্য সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
ভিসার জন্য ইংরেজি ভাষার প্রয়োজনীয়তা ও বয়স সীমা নেই। ১৮ বছরের বেশি বয়সী যে কেউ আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন গৃহীত হলে তারা অস্ট্রেলিয়ায় ৫ বছর পর্যন্ত থাকতে পারবেন। নির্দিষ্ট কিছু প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
এই ভিসার অন্যান্য ধারায় রয়েছে—বিনিয়োগকারীকে অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবসা স্থাপন ও অস্ট্রেলিয়ানদের নিয়োগ দিতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও'নিল বলেছেন, 'আমি মনে করি এই ধরনের ভিসা অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি, বাজেট ও অস্ট্রেলিয়ান সমাজের জন্য সুবিধার কারণে ধরে রাখা উচিত।'
'গোল্ডেন টিকিট' প্রোগ্রামটি ২০১২ সালে জুলিয়া গিলার্ড সরকার চালু করেছিল। এরপর এটি বেশ কিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে।
স্বরাষ্ট্র দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রোগ্রাম শুরুর পর থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ২ হাজার ৩৪৯টি ভিসা দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ১১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে।
মোট ভিসা আবেদনের প্রায় ৮৪ দশমিক ৮ শতাংশ চীন থেকে এসেছে এবং সমস্ত আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। প্রদত্ত ভিসার ৩ দশমিক ৬ শতাংশ এসেছে হংকং থেকে।
অস্ট্রেলিয়ান স্কাই নিউজ জানিয়েছে, ৭ হাজারেও বেশি চীনা নাগরিককে 'গোল্ডেন টিকিট' ভিসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৩৭০ চীনা নাগরিক ও ৫ হাজারেরও বেশি তাদের পরিবারের সদস্য রয়েছে। এসব পরিসংখ্যান নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র অধিদপ্তর।
স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কম্বোডিয়ার হুন সেন সরকারের ১০ ধনী সদস্য গত ৫ বছরে বিনিয়োগকারী ভিসা পেয়েছেন।
চলতি মাসে রাজধানী ক্যানবেরায় 'জবস অ্যান্ড স্কিলস' সম্মেলনে এই আর্থিক বছরের জন্য প্রকল্পের সংখ্যা অর্ধেক করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও'নিল বলেছেন, 'এরা এমন লোক যারা সাধারণত তাদের জীবনের শেষ পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ায় বিনিয়োগ করতে আসেন। মূলত তারা অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী হয়ে অবসর নিতে আসেন। এ জন্য এই ভিসার উদ্দেশ্য আমাদের জন্য খুব বেশি কার্যকরী হয় না।'
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments