যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা: জেনে নিন হেলথ ইনস্যুরেন্স সম্পর্কে

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের তুলনায় বাইরের দেশগুলোতে স্বাস্থ্যবিমা বা হেলথ ইনস্যুরেন্সের বিষয়গুলো একদমই ভিন্ন। একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর যে বিষয়গুলো ভালোভাবে জেনে রাখা প্রয়োজন, তার মধ্যে ফান্ডিং পলিসির পরেই রয়েছে হেলথ ইনস্যুরেন্স।

যেহেতু পরিবার-পরিজন ছেড়ে বিদেশ-বিভূঁইয়ে ভিন্ন একটি সংস্কৃতিতে থাকতে হয়, তাই এখানে সামান্য অসুস্থতাও ঝামেলার মনে হতে পারে। আর সিমেস্টার চলাকালীন যখন প্রচুর কর্মব্যস্ততা থাকে, তখন অসুস্থতা অনেক বড় বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 

তাই সব মিলিয়ে আমরা যারা ভিন দেশে পড়তে আসি, তাদের নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে হেলথ ইনস্যুরেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া প্রয়োজন। বেশিরভাগ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে তথ্য দেওয়া থাকলেও সেগুলো আসলে পর্যাপ্ত নয়। তাই এই বিষয়ে বিভাগের ডিরেক্টর বা কোর্ডিনেটরের সঙ্গে সরাসরি ই-মেইল বা অনলাইন মিটিংয়ের মাধ্যমে জেনে নেওয়া প্রয়োজন।

একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিমার পলিসি একেক রকম। যেমন ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকি একজন গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীর শতভাগ হেলথ ইনস্যুরেন্স পূরণ (কাভার) করে থাকে। শিক্ষার্থীকে কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্যয় এই ইনস্যুরেন্সের জন্য করতে হয় না। প্রতি সিমেস্টারের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেরাই এই খরচের পরিমাণটা দিয়ে থাকে। 

আবার আমার কিছু সহকর্মীদের অনেকেই যারা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে, তাদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রতি সিমেস্টার ফির সঙ্গেই জমা দিতে হয়। 

সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য উন্নত দেশগুলোতে চিকিৎসার খরচ অনেক ব্যয়বহুল। তাই এখানে বিমা ছাড়া এককালীন ব্যয়ে চিকিৎসা খরচ বহন করা হয় না, শুধু প্রয়োজনীয় বা ইমারজেন্সি কারণ ছাড়া। এ কারণে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে বিভাগে যোগদান করার সময়ে এও জেনে নেওয়া প্রয়োজন, এই বিমার আওতায় কী ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়, তার কতখানি খরচ বহন করা হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাথমিক চেকআপসহ অন্যান্য ভ্যাকসিনেশন, ডাক্তারের অ্যাপয়নমেন্ট এই বিমার আওতাধীন।
 
প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই নিজস্ব হেলথকেয়ার থাকে, যেখান থেকে শিক্ষার্থী নিয়মিত কনসালটেশন করতে পারে। প্রতিটি হেলথকেয়ারেই ফার্মেসি থাকে, যেখানে অনেক কমমূল্যে ওষুধ কেনার সুবিধা দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। তবে শহরের অন্যান্য হাসপাতালগুলো এই বিমার আওতাভুক্ত হয় না। 

আরেকটি বিষয় যা আমরা অনেকেই জানি, এখানে ডেন্টাল আর ভিশন অর্থাৎ চোখের যে কোন বিমা সাধারণ স্বাস্থ্যবিমার আওতাধীন নয়। তাই ডেন্টাল আর ভিশনারি দুটোর জন্যই আলাদাভাবে ইনস্যুরেন্স কিনে নিতে হয়। এই প্যাকেজগুলো সাধারণত ১২ মাসের জন্য হয়ে থাকে। তবে অধিকাংশের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, ডেন্টাল আর ভিশন এই দুটোর কনসাল্টেশন দেশ থেকে করে নেওয়াটা অনেক সুলভ। 

এ ছাড়া কিছু কমিউনিটি ক্লিনিক আছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের পে-স্টাবের ভিত্তিতে কম খরচে প্রাথমিক চিকিৎসার সুবিধা দেওয়া হয়। যারা ওখানে আগে থেকেই পড়াশোনা করছেন বা দীর্ঘদিন পরাবসে আছেন, তাদের কাছ থেকে এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জেনে নিতে হয়। 

শুধু যারা শিক্ষার্থী তাদেরই নয়, এসব শিক্ষার্থীর পরিবারের জন্য কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বিমার ব্যবস্থা করে থাকে। সে ক্ষেত্রে খরচের পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা বেশি হয়। এবং এই বিষয়গুলো নিয়ে আগে থেকেই যোগাযোগ করে ভালোভাবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন।

 

নাদিয়া রহমান: প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh trade deficit July-August FY25

Trade deficit narrows 2.6% in July-April

The country’s trade deficit narrowed by 2.60 percent in the first ten months of the current fiscal year compared to the same period a year ago, thanks to a rise in export earnings coupled with subdued imports..During the July-April period of fiscal year (FY) 2024-25, the trade gap was $18.

5h ago