দেশে প্রথমবারের মতো বুক না কেটে ভালভের ভেতর ভালভ প্রতিস্থাপন

ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার ও তার দল। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে দেশে প্রথমবারের মতো বুক না কেটে হার্টে টিএভিআর পদ্ধতিতে পুরনো অ্যাওটিক ভালভের ভেতরে নতুন ভালভ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

গত ১৭ এপ্রিল ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার ও তার দল সফলভাবে এই কাজটি সম্পন্ন করেন। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো বুক না কেটে, বুকের হাড় না কেটে সফলভাবে ভালভের ভেতরে ভালভ স্থাপন সম্পন্ন হলো।

এই সফলতার পর যেসব রোগী ১০ থেকে ১৫ বছর আগে ভালভ স্থাপন করেছেন এবং এখন প্রতিস্থাপন করতে হবে, তাদের আর দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

এই অপারেশনটি সম্পন্ন হয়েছে ৭৫ বছর বয়সী এক রোগীর। হার্টের অ্যাওটিক ভালভ সরু হওয়ায় ২০১১ সালে তিনি বুক কেটে অ্যাওটিক ভালভ প্রতিস্থাপন করেন। পরবর্তীতে হাঁটার সময় বা সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামার সময় শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তিনি কার্ডিয়াক সার্জারি চিকিৎসকের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করেন। পরীক্ষা শেষে দেখা যায়, তার অ্যাওটিক ভালভ পুনরায় সরু হয়ে গেছে এবং চিকিত্সা হিসেবে আবার তাকে বুক কেটে ভালভ প্রতিস্থাপন করতে হবে।

তবে, দ্বিতীয়বারের মতো বুক কেটে ভালভ প্রতিস্থাপনে রাজি হননি এই রোগী। দেশে ও বিদেশে বিকল্প সন্ধান করে তিনি খোঁজ পান, জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার বাংলাদেশে টিআরভিআর পদ্ধতিতে হার্টে অ্যাওটিক ভালভ প্রতিস্থাপন করেন।

ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টিআরভিআর পদ্ধতিতে হার্টে অ্যাওটিক ভালভ প্রতিস্থাপন নিয়মিতভাবে করলেও এই প্রথমবারের মতো পুরনো ভালভের ভেতরে ভালভ প্রতিস্থাপন করা হলো।'

সাধারণত বুক কেটে অ্যাওটিক ভালভ স্থাপন করার পর ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই এটি কার্যকারিতা হারায় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুনরায় বুক কেটে ভালভ প্রতিস্থাপন করতে হয়। তবে, আর্থিকভাবে সামর্থ্যবানরা দেশের বাইরে গিয়ে টিআরভিআর পদ্ধতিতে বুক না কেটে এই অপারেশন করে আসেন, যা বেশ ব্যয়বহুল।

টিআরভিআর পদ্ধতিতে অ্যাওটিক ভালভ প্রতিস্থাপনে এক ঘণ্টার মতো সময় লাগে। এর জন্য রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় না এবং অপারেশনের ৩ দিন পর রোগী বাসায় চলে যেতে পারেন। এই পদ্ধতিতে অপারেশনের ৭ দিন পরিই রোগী তার কাজে যোগ দিতে পারেন। ফলে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এই পদ্ধতি।

ডা. প্রদীপ কুমার ও তার দল সফলভাবে এই অপারেশন করে যাচ্ছেন এবং জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে এর খরচও তুলনামুলক কম।

Comments