রোহিঙ্গাদের ৫ জনে ১ জন হেপাটাইটিস-সি আক্রান্ত: গবেষণা
কক্সবাজারে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রতি ৫ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে ১ জন হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে (এইচসিভি) আক্রান্ত। আর রোহিঙ্গা নারীদের মধ্যে প্রতি ৪ জনে ১ জনেরও বেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত।
হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিষয়ে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। 'বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ প্রবণতা: শরণার্থী ও স্থানীয়দের জন্য ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ' শীর্ষক গবেষণাটি পরিচালনা করে ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ (এনএলএফবি)।
গবেষণায় রোহিঙ্গা নারীদের মধ্যে ২৬ শতাংশ, পুরুষদের মধ্যে ১৮ শতাংশ এবং অন্তঃসত্ত্বাদের মধ্যে ৮ শতাংশের এইচসিভি পজিটিভ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশের নাগরিকদের তুলনায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে এইচসিভি সংক্রমণ ১৮ গুণ বেশি বলে এ গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।
লিভারের রোগ প্রতিরোধ, চিকিত্সা, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এনএলএফবি কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের হেপাটাইটিস বি ও হেপাটাইটিস সি এর প্রাদুর্ভাব নিয়ে ২টি গবেষণা পরিচালনা করে। ২০১৭ সালে ৩০০ জন অন্তঃসত্ত্বা নারীর ওপর এবং ২০১৯ সালের ২ হাজার সাধারণ রোহিঙ্গার ওপর গবেষণা চালানো হয়।
হেপাটাইটিস সি ছাড়াও, ৯ শতাংশ পুরুষ, ৫ শতাংশ নারী এবং ৩ শতাংশ অন্তঃসত্ত্বার মধ্যে হেপাটাইটিস বি পাওয়া গেছে গবেষণায়।
শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্কসহ সব বয়সের রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১১ শতাংশ শরণার্থীর মধ্যে হেপাটাইটিস সি এবং ৪ শতাংশের মধ্যে হেপাটাইটিস বি পাওয়া গেছে।
দেশের প্রথম লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলী এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন।
তিনি বলেন, 'হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা নারীর অজান্তেই তাদের সন্তানের শরীরে ভাইরাস পরিবহন হয়। মানুষ নীরবেই হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে ভোগে। দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারে অবস্থানের কারণে রোহিঙ্গাদের মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্তরা স্থানীয়দের জন্য সম্ভাব্য হুমকি।'
ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, 'এ ভাইরাস সংক্রমণের কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও চিকিত্সা সেবা দিতে ক্যাম্পে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সক্ষমতা মূল্যায়ন করা প্রয়োজন এ জন্য অবিলম্বে একটি যথাযথ গবেষণার প্রয়োজন।'
চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডি অফ লিভার ডিজিজেস (এএএসএলডি) জার্নাল ক্লিনিক্যাল লিভার ডিজিজে (সিএলডি) গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।
Comments