লিখেছি অনেক, এত জনপ্রিয় হবো ভাবিনি: রকিব হাসান

রকিব হাসান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে বইপড়ুয়াদের কাছে কৈশোরের নিত্যসঙ্গী তিন গোয়েন্দা। এই গোয়েন্দা কাহিনীর জনপ্রিয় লেখক রকিব হাসান। তার জন্ম ১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর, কুমিল্লায়। বাবার চাকরির সুবাদে ছেলেবেলা কেটেছে ফেনীতে। তার প্রথম বই ছদ্মনামে প্রকাশিত হয়। স্বনামে প্রথম প্রকাশিত অনুবাদ বইটি ছিল 'ড্রাকুলা'।

সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত তার সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়েছে ছোটদের জন্য লেখা গোয়েন্দা সিরিজ। লিখেছেন আরও দুটো সিরিজ, 'তিন বন্ধু' ও 'গোয়েন্দা কিশোর মুসা রবিন'। তার লেখা কিশোর সিরিজটি প্রথম আলো পত্রিকার জরিপে বাংলাদেশের কিশোরদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাঠযোগ্য সিরিজ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রকিব হাসান তার লেখালেখি ও বর্তমান জীবন নিয়ে কথা বলেছেন।

দ্য ডেইলি স্টার: কেমন আছেন?

রকিব হাসান: অতটা ভালো না। শরীরটা এই ভালো, এই খারাপ অবস্থায় আছি।

ডেইলি স্টার: লিখতে পারেন?

রকিব হাসান: না, লিখতে পারি না। তবে পড়তে পারি।

ডেইলি স্টার: একেবারেই লিখতে পারেন না?

রকিব হাসান: হাই পাওয়ারের লেন্স ব্যবহার করে পড়া যায়। কিন্তু লেখা যায় না। লিখতে গেলে হাত কাঁপে, শব্দ-বাক্য ঠিকমতো লেখা যায় না। চোখে ভালো করে দেখে অক্ষর বসাতে পারি না। কীভাবে যে অসুস্থ হয়ে গেলাম, ভাবতেই খারাপ লাগে এখন।

ডেইলি স্টার: কী অসুখ আপনার?

রকিব হাসান: ডায়াবেটিস, চোখে সমস্যা, শরীরের দুর্বলতা।

ডেইলি স্টার: কতদিন ধরে লিখতে পারেন না?

রকিব হাসান: প্রায় ২ থেকে ৩ মাস হবে। না লিখতে পেরে খুব কষ্টে আছি।

ডেইলি স্টার: এই পর্যন্ত আপনার কতগুলো বই প্রকাশ হয়েছে?

রকিব হাসান: আমার জানা নেই, মনে হয় ৪০০ হবে। ছেলেরা বইয়ের হিসাব রাখে। আমি এসব রাখতে পারি না এখন।

ডেইলি স্টার: কেউ দেখা করতে আসে? মানে বই পড়ে আড্ডা দিতে কোনো পাঠক?

রকিব হাসান: না, এসবে আমি আগ্রহী না।

ডেইলি স্টার: প্রকাশকরা আসে, দেখা করে?

রকিব হাসান: খুব একটা আসে না। মাঝেমাঝে দুয়েকজন আসে। কিন্তু, তারা তো একটা উদ্দেশ্য নিয়ে আসে। আমি তাদের আগ্রহ পূরণ করতে পারি না।

ডেইলি স্টার: কীভাবে সময় কাটে?

রকিব হাসান: বই পড়ে। অসুস্থ মানুষের আর কী কাজ? একা একা ভাবি, বই পড়ি, সময় পার করি।

ডেইলি স্টার: কী বই পড়েন?

রকিব হাসান: হাতের কাছে যা পাই তাই। নতুন বই সংগ্রহ করতে পারি না, আগের সংগ্রহের বইগুলোই পড়ি।

ডেইলি স্টার: কোরবানি ঈদ নিয়ে কোনো স্মৃতি কী মনে পড়ে?

রকিব হাসান: ঈদ নিয়ে কোনো স্মৃতি মনে পড়ে না। তা ছাড়া, ঈদ মানে আনন্দ, মরা মানুষের কোনো আনন্দ থাকে? আমি এখন যে অবস্থায় আছি, বলা যায় অসহায়-এতিমের মতো আছি।

ডেইলি স্টার: কোনো অপ্রাপ্তি আছে, মানে হাহাকার বোধ হয় জীবনে?

রকিব হাসান: না, সেরকম কিছু নেই। এই বয়সে অনেককে বৃদ্ধাশ্রমে কাটাতে হয়। আমার সে দুর্গতি হয়নি। একটা ঠিকানা আগে করে নিয়েছি, তাতে ভালো আছি। লিখেছি অনেক, এত জনপ্রিয় হবো, ভাবিনি।

ডেইলি স্টার: দেশে কিশোর অপরাধ বাড়ছে, শিক্ষার্থী শিক্ষককে হত্যা করছে, ঘরে-বাইরে তৈরি হচ্ছে মূল্যবোধের সংকট। এই পরিস্থিতি নিয়ে কী বলবেন?

রকিব হাসান: আমি খবর দেখি না, এসব কিছু জানি না। তাই বলতেও পারছি না।

Comments

The Daily Star  | English
What’s in the new budget?

Budget to set 10 priorities

Facing inflation fatigue and fiscal strain, Bangladesh’s interim government is betting on discipline over expansion in a new budget built around 10 priorities to stabilise the economy.

8h ago