ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সরাইল পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয় আজকের দিনে
আজ ৮ ডিসেম্বর। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সরাইল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ও সরাইল উপজেলা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একাত্তরের ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হওয়ার পর মিত্রবাহিনীর ৫৭তম মাউন্ট ডিভিশন আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের উজানিসার দিয়ে শহরের দিকে অগ্রসর হয়। শহরের চারপাশে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী শক্ত অবস্থানে থাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পিছু হটতে থাকে।
শহরের চারদিকে মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর শক্ত অবস্থান থাকায় পাকিস্তানি বাহিনীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর রাজাকারদের সহায়তায় হত্যাযজ্ঞ চালায়।
ওই দিন তৎকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কেএম লুৎফুর রহমানসহ কারাগারে আটক থাকা অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে চোখ বেঁধে শহরের কুরুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কলেজ হোস্টেল, অন্নদা স্কুল বোর্ডিং, বাজার ও গুদামসহ বিভিন্ন স্থানে আগুন দেয়।
৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। ৮ ডিসেম্বর বিনা বাধায় মুক্তিযোদ্ধারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই সাধারণ মানুষ 'জয় বাংলা' শ্লোগান দিয়ে মুক্তি বাহিনীকে অভিনন্দন জানান।
ওই দিন সকাল ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তৎকালীন কোর্ট বিল্ডিংয়ে মুক্তিযুদ্ধের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জহুর আহমেদ চৌধুরী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও পুলিশের উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রায় ৩৫টি গণকবর এখনও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার সাক্ষ্য বহন করে।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমান্ড নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তাছাড়া, জেলা প্রশাসন গত শনিবার এ উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও অবহিতকরণ সভা করে।
জেলা প্রশাসক হায়াৎ উদ দৌলা খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম ওবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
এ দিকে, দিবসটি উপলক্ষে গত সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ শহীদ পরিবারকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
Comments