অস্ট্রেলিয়ায় লকডাউন বিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতা
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, মেলবোর্ন ও ব্রিসবেনে লকডাউন বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে আজ শনিবার বিক্ষোভকারীদের এ সংঘর্ষের খবর প্রকাশিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সবগুলো জাতীয় পত্রিকায়।
লকডাউন বিরোধী সবচেয়ে বড় সমাবেশটি হয়েছে ভিক্টোরিয়া রাজ্যের মেলবোর্ন শহরে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ছয় পুলিশ কর্মকর্তার আহতের খবর পাওয়া গেছে। ওই ছয় পুলিশ কর্মকর্তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ সময় বিক্ষোভরত ২১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশনা লঙ্ঘনের জন্য গ্রেপ্তারকৃতদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার ৪৫২ ডলার করে জরিমানা করা হবে।
রাজ্যে করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর প্রতিবাদে চার হাজারেরও বেশি মানুষ আজ শহরে জড়ো হয়েছিল।
ভিক্টোরিয়া পুলিশের একজন মুখপাত্র নাইন নিউজকে বলেন, 'যারা জড়ো হয়েছিলেন, তাদের অধিকাংশই সহিংসতার কথা মাথায় রেখেই এসেছিলেন।'
সকালে ভিক্টোরিয়ার পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হওয়ার আগেই সেখানে প্রায় ৭০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
এর আগে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী ড্যানিয়েল অ্যান্ড্রুজ সতর্ক করে বলেছিলেন, 'যদি মানুষ লকডাউনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে, তবে আগামী সপ্তাহে এখানেও সিডনির মতো অবস্থা হবে। সিডনিতে প্রতিদিন শতশত নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।'
নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের রাজধানী সিডনিতেও আজ দুপুরে লকডাউন বিরোধী একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তবে, পুলিশ সতর্কতার সঙ্গে সমাবেশটি ছত্রভঙ্গ করতে সক্ষম হয়।
গতকাল নিউ সাউথ ওয়েলসের পুলিশ বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড এলিয়ট সতর্ক করে বলেছিলেন, 'কেউ অবৈধ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করলে "আইনের পূর্ণ শক্তি" ব্যবহার করা হবে।'
জনগণকে অনুরোধ করে তিনি বলেন, 'কেউ যেন এই সমাবেশে উপস্থিত হয়ে নিজেদের ও পরিবারকে ঝুঁকির মধ্যে না ফেলেন।'
সিডনিতে অন্তত দেড় হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশকে সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থায় রাখা হয়। সিডনি শহরের প্রবেশ পথগুলো অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। নগরীতে প্রবেশের ক্ষেত্রে যানবাহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
পুলিশের জারি করা নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়, শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টার মধ্যে ট্যাক্সি, রাইডশেয়ার ও যাত্রী সেবাগুলো সিডনি শহরে যাত্রীদের নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।
আজ শনিবার বিকেলে এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, ৪৭ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের অপরাধে ২৬১ জনকে জরিমানার নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী ডেভিড এলিয়ট বিক্ষোভের ঘটনায় হতাশ হয়ে বিষয়টিকে অপমানজনক বলে উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া, ব্রিসবেন শহরেও লকডাউন বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে হাজার হাজার জনতার উপস্থিতি থাকলেও, সেখানে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ এটিকে 'শান্তিপূর্ণ সমাবেশ' বলেছে।
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments