স্কুল মাঠে সেই ফার্নিচার মেলা অবশেষে বন্ধ হলো
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল বিরাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ মাত্র ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ৩ মাসের জন্য ভাড়া নিয়ে বসানো হয়েছিল ফার্নিচার মেলা।
এ ঘটনায় দ্য ডেইলি স্টারসহ বেশ কিছু গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পরও থামেনি মেলা।
২ মাস একটানা চলার পরে অবশেষে মেলা তুলে দিতে ব্যবস্থা নিয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম পারভেজ গতকাল রোববার ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে একদিনের মধ্যে ফার্নিচারের সব দোকান তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
পরে আজ সোমবার সকাল থেকে সরানো হয় অবৈধ ফার্নিচার মেলা।
স্কুলের শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা জানিয়েছিলেন, মেলার কারণে শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলা করতে পারছিল না।
স্কুল মাঠে কেন মেলা বসানো হয়েছে জানতে চাইলে এক মাস আগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. রোকনুজ্জামান সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, 'স্কুলের মাঠে মেলা হয় এটা ঐতিহ্য। ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি নিয়েই মেলা হচ্ছে।'
অন্যদিকে বিরাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতামাসুল ইসলাম শিল্পী বলেছিলেন, 'এই মেলার অনুমোদন আমি দেইনি। স্কুল কর্তৃপক্ষই মেলা বসিয়েছে।'
২০০৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কোনো ধরনের মেলা, সার্কাস বা বাণিজ্যিক বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া যাবে না।
বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি জেলা প্রশাসক অলিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে আমি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি।'
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেনের কাছে সম্প্রতি মেলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন, 'স্কুল খুললেই আমরা সেখানে যাবো মেলা বন্ধ করতে।'
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ আলম পারভেজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখানে অনেক দিন ধরে নিয়ম না মেনে বিদ্যালয়ের মাঠে ফার্নিচার মেলা হচ্ছিল। বিদ্যালয়ের মাঠে এ ধরনের বাণিজ্যিক মেলার আয়োজন করা সম্পূর্ণ নিষেধ।'
'স্কুল খোলার পর গতকাল আমি নিজে গিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে একদিনের মধ্যে মেলা সরিয়ে নিতে বলি। এমন নির্দেশনার পর আজ তারা স্কুল মাঠ থেকে মেলাটি সরিয়ে নিয়েছে,' বলেন তিনি।
বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতেই মেলা উঠিয়ে দেওয়া হলো বলেও উল্লেখ করেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা।
Comments