দল আমাকে নির্বাচন করতে বলেনি, নিষেধও করেনি: তৈমূর

তৈমূর আলম খন্দকার। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে বহিষ্কার করা হলেও কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। অন্য কোনো দলে যোগ দেবেন না এবং বিএনপির একজন সমর্থক হিসেবে থেকে রাজনীতি করবেন বলে মন্তব্য করেছেন তৈমূর আলম খন্দকার।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তৈমূর আলম খন্দকার এবং তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিএনপি থেকে বহিষ্কার করার বিষয়ে তৈমূর আলম খন্দকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আপনারা জানেন বিএনপি করার কারণে আমি বহু নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কোথাও কোনো কম্প্রোমাইজ করিনি, বিএনপির রাজনীতি চালিয়ে গেছি। দল আমাকে নির্বাচন করতে না করেনি। রাজনৈতিক দলের বাইরেও আমি  শ্রমজীবী মানুষের সংগঠন করে আসছি। এটা আমি ছাত্র জীবন থেকেই করি। নারায়ণগঞ্জে এই মানুষগুলো বঞ্চিত। তাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে, কোনো পুনর্বাসন করা হয়নি।'

তিনি আরও বলেন, 'বিএনপি মহাসচিব যখন ঘোষণা দিলেন, দল নির্বাচন করবে না, তবে কেউ নির্বাচন করলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে করতে পারবে। তখন নারায়ণগঞ্জের এই বঞ্চিত মানুষগুলো আমাকে এসে ধরলেন। তারা বললেন, এখন তো আপনি নির্বাচন করতে পারেন। এক পর্যায়ে আমি তাদের কথায় রাজি হয়ে যাই। এরপর তারাই সব ব্যবস্থা করলেন, মনোনয়নপত্র নিয়ে এলেন।'

দল থেকে এই নির্বাচন করতে নিষেধ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব কাজ যখন হচ্ছিল তখনও তো দলের কেউ আমাকে ফোন করে বলেনি, নির্বাচন করো না। আমাকে তারা নির্বাচন করার কথা যেমন বলেনি, তেমন এটাও কখনো বলেনি যে নির্বাচন করা যাবে না।'

দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আগে কী আপনাকে জানানো হয়েছিল?—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমাকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আগেও কেউ আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। যদি কেউ করতোও, তাহলেও অবশ্য আমার কিছু করার ছিল না। কারণ ততক্ষণে নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমার জন্য যেভাবে নেমে গিয়েছিলেন, আমার নির্বাচন থেকে ফেরার পথ ছিল না।'

তিনি আরও বলেন, 'দল আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে, এ বিষয়ে কোনো চিঠি পাইনি। খবর জানতে পারি মিডিয়া থেকে।'

বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর রাজনীতিতে অবস্থান কী হবে জানতে চাইলে তৈমূর আলম বলেন, 'আমি মানুষের জন্য কাজ করি। বিএনপির সদস্য পদ না থাকলেও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য একইভাবে কাজ করে যাব। ইভিএমের বিরুদ্ধে আমি জনমত গড়ে তুলব। এটা চুরি না, ডাকাতির বাক্স। আর অবশ্যই খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করব। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম যখন নিষ্ক্রিয় হয়ে গেল তখন আমি খালেদা জিয়া মুক্তি আন্দোলন নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলি। তখন এই সংগঠন থেকে সারা বাংলাদেশ ঘুরেছি, মহাসমাবেশ করেছি।'

বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ ফিরে পেতে তৈমূর আলম খন্দকারের উদ্যোগ কি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেবে নাকি দেবে না, সেটা দলের সিনিয়র কর্মকর্তারা জানেন। তবে, আমি অন্য কোনো দলে যোগ দিব না বা নিজে কোনো দল করব না। বিএনপির একজন সমর্থক হয়েই থাকব।'

'আমার কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। আমার সব অভিযোগ নির্বাচন কমিশন ও পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশ আমার বাড়ির কাজের লোককে পর্যন্ত ধরে নিয়ে গেছে। এখনো তাদের জামিনের জন্য চেষ্টা করছি,' যোগ করেন তৈমূর আলম খন্দকার।

Comments

The Daily Star  | English

$14b a year lost to capital flight during AL years

Bangladesh has lost around $14 billion a year on average to capital flight during the Awami League’s 15-year tenure, according to the draft report of the committee preparing a white paper on the economy.

12h ago