প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে ঢাকা কলেজ নিয়ে যা বললেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ। তিনি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গতকাল ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের  সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন। 
বাংলাদেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ। তিনি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গতকাল ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের  সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন। 

'কিছুদিন ধরে কেন যেন মন টানছিল আমার ছাত্রজীবনের অনেক সুখস্মৃতি জড়িত ঢাকা কলেজের নর্থ হোস্টেল একবার ঘুরে আসব। কলেজে পড়ার দুবছর। ১৯৬৩-১৯৬৫ সালে হোস্টেলের যে ঘরটিতে একটানা থেকেছিলাম, দোতলার সেই ২১৬ নম্বর ঘরটিতে এখন কারা থাকে, কিভাবে থাকে জানতে ইচ্ছা হচ্ছিল। ভেবেছিলাম তাদের সাথে বসে একটু স্মৃতিচারণ করে আসবো। কিন্তু তা বোধহয় আর হল না।'   

'সংবাদমাধ্যমগুলোতে কয়েকদিন ধরে ঢাকা কলেজের ছাত্র আর নিউ মার্কেটের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সংবাদ নিয়ে শিরোনাম হচ্ছে। একজন নিরীহ পথচারী কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ হোসেনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার ছবি দিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন বেরিয়েছে। জীবজগতের মধ্যে মানুষই যে সবচেয়ে নৃশংস হতে পারে এই জানা কথাটা নিজের চেনাজানা পরিবেশের মধ্যে নতুন করে ঘটতে দেখলে মনে ধাক্কা লাগে। বিশেষ করে যখন অভিযুক্তদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। অবশ্য এ ধরনের ঘটনার সংবাদ নতুন কিছু নয়, এতদিনে গাসহা হয়ে যাবার কথা। এই সেদিনও তো বুয়েটের ছাত্র আবরারকে ছাত্রাবাসের ভেতরেই দলীয় ছাত্র সংঘটনের কর্মীরা নৃশংস ভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। যে ছাত্রসমাজকে দিয়ে আমরা দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরির স্বপ্ন দেখছি, তাদের মধ্যে কী ধরনের দানবদের আমরা লালন পালন করছি।'

'আর একবার হোঁচট খেলাম যখন দেখলাম যে সংবাদে অভিযুক্ত ছাত্রদের নর্থ হোস্টেলের আবাসস্থল হিসাবে যে দুটি রুমের নাম এসেছে তার একটি ২১৮; হোস্টেলের ইস্ট উইং-এ আমার তখনকার ঘরের এক ঘর বাদ দিয়ে এ ঘরটি। আমার সময়ে এ ঘরে যে ছাত্ররা থাকত তারা আমার এক কালের খুব কাছের মানুষ; সবাই পরবর্তী জীবনে নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। একজন বুয়েটে শিক্ষকতা শেষে অবসরে গেছেন, আরেকজন বুয়েট থেকে পাশ করার পর একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকুরী নিয়ে সর্বোচ্চ পদ থেকে অবসর নিয়েছেন, আরেকজন কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির শিক্ষকতা করে সেখানেই বসবাস করছেন। হোস্টেলের সব ঘরের বাসিন্দাদের সম্বন্ধেই এরকমটি বলা চলে। কারণ ঢাকার বাইরে থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করা সবচেয়ে মেধাবী ছাত্ররাই ঢাকা কলেজের হোস্টেলে থাকত। সেসব ঘরগুলোতে এখন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কারা থাকে চিন্তা করলে গা হিম হয়ে আসে।'

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi-Americans eager to help build new Bangladesh

July uprising and some thoughts of Bangladeshi-Americans

NRBs gathered in New Jersey showed eagerness to assist in the journey of the new Bangladesh forward.

6h ago