পারকি সমুদ্র সৈকতেই ভাঙা হচ্ছে আটকে পড়া জাহাজটি

ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে ২০১৭ সালের ৩০ মে আটকা পড়া ক্রিস্টাল গোল্ড জাহাজটি চট্টগ্রামের পারকি সমুদ্র সৈকতেই ভাঙা শুরু হয়েছে।

আদালতের নির্দেশে পরিবেশ অধিদপ্তরকে ২ কোটি টাকা জরিমানা দিয়ে আজ শনিবার থেকে ১৯২ মিটার এই জাহাজটি কাটা শুরু করা হয় বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজের পরিচালক মো. আমজাদ হোসেন।

জাহাজ ভাঙার বিষয়ে জানতে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মফিদুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তারা আমাদের ২ কোটি টাকা জরিমানা দিয়েছেন। পারকি সমুদ্র সৈকতে শর্ত সাপেক্ষে ক্রিস্টাল গোল্ড নামে জাহাজটি কাটার জন্য আমরা অনুমোদন দিয়েছি।'

তিনি গত আগস্টে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, '২০১৯ সালে সৈকতে অনুমতি ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ জাহাজটি কাটার অভিযোগে ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করে পরিবেশ অধিদপ্তর।'

সেসময় জাহাজ কাটার কারণে ১ হাজার ৪৯১ শতাংশ সৈকতের জীববৈচিত্র্য নষ্ট এবং সামুদ্রিক জীব ধ্বংস হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

'আমরা তাদের ৩২টি শর্ত দিয়ে জাহাজ কাটার অনুমতি দিয়েছিলাম, কিন্তু ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ উচ্চ আদালতে আপিল করে', বলেছিলেন মফিদুল আলম।

মো. আমজাদ হোসেন বলেন, 'পরিবেশ অধিদপ্তরের ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশের পর আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছিলাম।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পারকি সমুদ্র সৈকত একটি পর্যটন এলাকা। পুরনো এই জাহাজ সৈকতে কাটার ফলে সেখানকার ব্যাপক ক্ষতি হবে। সৈকতের পাশে যে লোকালয় আছে সেখানেও মারাত্মক প্রভাব পড়বে।'

'জাহাজে থাকা পুরোনো বিষাক্ত তেল এবং মবিল সৈকতের পানিতে গিয়ে মিশবে যা সমুদ্রের জীববৈচিত্রকে মারাত্মকভাবে হুমকির মধ্যে ফেলবে, বলেন তিনি।

দীর্ঘদিন সৈকতে আটকে থাকা জাহাজটিকে জাহাজ ভাঙার জন্য নির্ধারিত এলাকায় নিয়ে গিয়ে ভাঙা উচিত ছিল বলে মনে করেন ড. আতিকুর।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পারকি সমুদ্র সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, 'কিছুদিন আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি চিঠি আমরা পেয়েছি। জাহাজটি কাটার ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলাসহ সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণের কথা চিঠিতে উল্লেখ আছে।'

'আমাদেরকে না জানিয়েই আজকে থেকে তারা জাহাজটি কাটা শুরু করেছে,' বলেন শেখ জোবায়ের।

বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, জাহাজটি ক্রিস্টাল গ্রুপের অন্তর্গত ছিল কিন্তু ব্যাংক ঋণ এবং ক্রু সদস্যদের অর্থ দেওয়া নিয়ে আইনি জটিলতার সম্মুখীন হয়ে কোম্পানিটি ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজের কাছে জাহাজটি বিক্রি করে দেয়।

ডেইলি স্টার ক্রিস্টাল গ্রুপের মালিক চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ ২০১৮ সালের শেষের দিকে নিলামে জাহাজটি কিনেছিল, জানান আমজাদ হোসেন।

Comments

The Daily Star  | English

S Alam threatens int'l legal action against govt over asset freezing: FT

Alam says his family's bank accounts were frozen, they were subjected to travel bans, and they lost control of their companies, all while facing investigations for alleged money laundering without formal notification.

21m ago