নিউজউইকে বাংলাদেশের অর্জনের গল্প

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত সাময়িকী নিউজউইকে ট্রান্সকম গ্রুপ নিয়ে প্রকাশিত দুই পৃষ্ঠার প্রতিবেদন। ছবি: প্রথম আলোর সৌজন্যে
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত সাময়িকী নিউজউইকে ট্রান্সকম গ্রুপ নিয়ে প্রকাশিত দুই পৃষ্ঠার প্রতিবেদন। ছবি: প্রথম আলোর সৌজন্যে

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত সাময়িকী নিউজউইকের সর্বশেষ সংস্করণে বাংলাদেশের অভাবনীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে সাফল্য নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।

'বাংলাদেশ: একটি নবীন রাষ্ট্রের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে দ্রুত যাত্রা' শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে বাংলাদেশ। দেশটি তার দ্বিতীয় অর্ধশতকে প্রবেশ করছে শক্ত অবস্থান নিয়ে। বাংলাদেশ বর্তমানে এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর একটি।

নিউজউইকের মতে, অর্থনীতির প্রধান খাতগুলোতে ধারাবাহিক উন্নয়নের পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি রয়েছে বাংলাদেশের। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শক্তিশালী নেতৃত্ব দিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির দ্রুত রূপান্তর ঘটিয়েছেন।

এ ছাড়া বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে বলে মত প্রকাশ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদন অনুসারে, দেশি উদ্যোক্তাদের হাত ধরে শিল্প খাতের উন্নয়ন বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কৃষির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে একটি শিল্প-প্রধান রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে নিয়ে গেছে।

নিউজউইক আরও জানায়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শিল্প খাতের অবদান ২০১০ সালে ২০ শতাংশেরও কম ছিল, যা ২০১৮ সালে বেড়ে ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে।

এছাড়া প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) উৎপাদন খাতের অবদান ১৯৮০ সালের পর থেকে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। ৯০ এর দশকের তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে ২০ গুণ।

নিউজউইকের আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ অংশে এই প্রতিবেদনটি ছাপা হয়।

প্রতিবেদনে ট্রান্সকম গ্রুপ সহ আরও বেশ কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়, যারা দেশের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭৩ সালে নতুন করে শুরু হয় ট্রান্সকমের যাত্রা।

বাংলাদেশের বড় ও দ্রুত বর্ধনশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম ট্রান্সকমের রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, এফএমসিজি পণ্য, খাদ্য ও পানীয়, গণমাধ্যম, ইলেকট্রনিক্স, লজিসটিকস ও ডিস্ট্রিবিউশন খাতে উপস্থিতি।

২০১২ সালে লতিফুর রহমান ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা, সুনাম আর সততার স্বীকৃতি হিসেবে অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড জেতেন। এই পুরষ্কারটি ব্যবসা-বাণিজ্যের নোবেল হিসেবে খ্যাত।

ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন রহমান বলেন, 'একটি গ্রুপ হিসেবে আমরা কেমন, তা উঠে আসে ২০১২ সালে আমাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির মাধ্যমে।'

সিমিন রহমান আরও বলেন, 'এখান থেকেই আমরা শক্তি পাই। এ আদর্শই আমাদের চেয়ারম্যান আমাদের জন্য রেখে গেছেন।'

'এসব মূল্যবোধের সঙ্গে প্রতিটি খাতে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি ও ধরে রাখার ব্যাপারে আমাদের স্পষ্ট লক্ষ্য রয়েছে এবং অবশ্যই সেখানে গুণগত মানের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না',- যোগ করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে ট্রান্সকমের পদচিহ্ন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতেও বিস্তৃত হয়েছে।

বিশ্বখ্যাত পানীয় পেপসি ব্র্যান্ডের ফ্র্যাঞ্চাইজের পাশাপাশি ট্রান্সকম এখন ওয়ার্লপুলের সরঞ্জাম, ল'রিয়েলের প্রসাধনী তৈরি করছে এবং ফ্রিটো–লে, কেএফসি, পিৎজা হাট, অ্যাবোট ও মার্সের মতো আন্তর্জাতিক কোম্পানির স্থানীয় অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।

ট্রান্সকমের অঙ্গসংগঠন এসকায়েফ ফার্মাসিউটিকালস লিমিটেড দেশের ফার্মাসিউটিকালস খাতের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান।

২০২০ সালে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিলে এসকায়েফ জরুরি অনুমোদন সাপেক্ষে ভাইরাস প্রতিরোধকারী ওষুধ তৈরি করে, যেটি পরবর্তীতে ৪৯টি দেশে রপ্তানি হয়।

ট্রান্সকমের ব্যবসায়িক কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হচ্ছে ডিজিটাল উন্নয়ন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এ মুহূর্তে ২০ হাজার মানুষ কাজ করছেন ট্রান্সকমে।

নিউজউইক তাদের প্রতিবেদনে নির্মাণ ও আবাসন প্রতিষ্ঠান কনকর্ড গ্রুপ, দেশের অন্যতম শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এনভয় গ্রুপ এবং জ্বালানি, আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবা খাতের প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড গ্রুপের কথাও উল্লেখ করে।

এছাড়াও, প্রতিবেদনে সিমেন্ট, কনক্রিট রেডি-মিক্স, জ্বালানি ও টেলিযোগাযোগ খাতের প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স গ্রুপ, অবকাঠামো-জ্বালানি ও বিমা খাতের প্রতিষ্ঠান শিকদার গ্রুপ, এলইডি বাতি ও বৈদ্যুতিক মিটার নির্মাতা হোসাফ গ্রুপ এবং বীজ, গবাদিপশু, রেশম ও পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান মাল্টিমোড গ্রুপের কথাও উল্লেখ করা হয়।

 

Comments

The Daily Star  | English

Cyber protection ordinance: Draft fails to shake off ghosts of the past

The newly approved draft Cyber Protection Ordinance retains many of the clauses of its predecessors that drew flak from across the world for stifling freedom of expression.

9h ago