সন্ধ্যা হলেই মুন্সিগঞ্জ শহীদ মিনারে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন/ স্টার

অযত্ন-অবহেলায় থাকা মুন্সিগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ এখন মাদকসেবীদের জন্য নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে। পর্যাপ্ত আলো না থাকায় সন্ধ্যার পর থেকেই সেখানে মাদকসেবীদের আনাগোনা শুরু হয়। শহীদ মিনারের বেদির পাশেই পড়ে থাকতে দেখা যায় ফেনসিডিলের বোতল।

আজ শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫০টিরও বেশি ফেনসিডিলের বোতল শহীদ মিনারের বেদির পাশে পড়ে আছে। চারপাশে দুর্গন্ধ।

এ স্থানটিতে রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। তাই সন্ধ্যা হলেই মাদকসেবীরা আসতে শুরু করে ওই এলাকায়। অথচ শহীদ মিনারের অবস্থান শহরের প্রাণকেন্দ্রে। এর পাশেই অবস্থিত জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি। 

প্রায় সারা বছর এ স্থানে ফেনসিডিলের বোতল পড়ে থাকতে দেখা গেলেও পুলিশকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। শুধু ২১ ফেব্রুয়ারি এলেই শুরু হয় শহীদ মিনার ধোয়ামোছা ও সংস্কারের কাজ। প্রতি বছর এভাবেই চলে। বছরের বাকি সময়টায় শহীদ মিনার পড়ে থাকে অযত্ন-অবহেলায়।

মুন্সিগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউল ইসলাম হিরু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফেনসিডিলের বোতল পাওয়া যায়, এটি লজ্জার বিষয়। পবিত্র শহীদ মিনারের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে এভাবে। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।'

মুন্সিগঞ্জ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসাইন জাকির বলেন, 'শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বেশিরভাগ সময় ফেনসিডিলের বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়। দেয়াল, তোরণ না থাকার কারণে বহিরাগতরা সহজেই শহীর মিনারে প্রবেশ করে পরিবেশ দূষিত করছে। এ ব্যাপারে একাধিকবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি আমরা।'

মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার প্যানের মেয়র সোহেল রানা রানু বলেন, 'যে জায়গায় ফেনসিডিলের বোতল পড়ে থাকে, সেখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা এবং প্রবেশপথে একটি গেটের ব্যবস্থার জন্য সরকারি বিভিন্ন অফিসের কাছে অনুদান চাওয়া হবে। আশা করি, আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে এ কাজ করা হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'মাদকসেবীদের আনাগোনা বন্ধ করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত শহীদ মিনারের এরকম অবস্থা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।'

জানতে চাইলে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিনহাজ-উল-ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুলিশ টহল যখন থাকে না, তখন মাদকসেবীরা সুযোগ নেয়। মাদক সেবনের সংবাদ পেলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। ভবিষ্যতে এখানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা যেতে পারে।'

মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, 'এ বিষয়ে আমার জানা নেই। জেনে শিগগির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Fire breaks out at tissue warehouse in Narayanganj

Upon receiving the information, 19 firefighting units from various stations rushed to the scene and are currently working to bring the blaze under control

11m ago