নিউমার্কেটে সংঘর্ষ: নাহিদ-মোরসালিন হত্যা মামলায় অগ্রগতি নেই
দেড় মাসেরও বেশি সময় পেড়িয়ে গেলেও নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে নিহত ডেলিভারিম্যান নাহিদ (১৮) হত্যা মামলার প্রধান সন্দেহভাজনকে এখনও খুঁজে পায়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
একই সংঘর্ষে নিহত দোকানদার মোরসালিন (২৬) হত্যার ঘটনা তদন্তেও কোনো অগ্রগতি নেই।
নাহিদ হত্যা মামলার প্রধান সন্দেহভাজন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ইমন বাশার পলাতক রয়েছেন। পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এখনও তাকে খুঁজে পায়নি। ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইমন গত ১৯ এপ্রিল সংঘর্ষের সময় নাহিদকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন।
পরবর্তীতে হাসপাতালে নাহিদের মৃত্যু হয়।
ডিবির রমনা বিভাগের উপকমিশনার এইচএম আজিমুল হক গত বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তার (ইমন) সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো আপডেট নেই। তিনি দেশে আছেন কি না তাও আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি।'
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু প্রধান সন্দেহভাজন এখনও পলাতক রয়েছে, অভিযোগপত্র জমা দিতে সময় লাগবে।
গত ১৮ এপ্রিল রাতে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ পরের দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এতে নিহত হন ২ জন এবং সাংবাদিক, শিক্ষার্থী ও পুলিশসহ আহত হন ৬০ জনেরও বেশি।
নাহিদ ও মোরসালিন হত্যা মামলা তদন্ত করছে ডিবি।
এই সংঘর্ষের ঘটনায় মোট ৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় ২৪ জনকে অভিযুক্ত করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে বেশিরভাগই বিএনপি ও দলটির সহযোগী সংস্থার সদস্য। এ ছাড়া, ৫টি মামলায় অজ্ঞাতনামা এক হাজার ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য ইমনকে গ্রেপ্তার করা গুরুত্বপূর্ণ। ঘটনার পর তার কলেজ হোস্টেল থেকে ইমনের ২টি মোবাইল ফোন জব্দ করেছে ডিবি।
নাহিদ হত্যা মামলায় ঢাকা কলেজের ৬ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভিডিও ফুটেজ ও ছবিতে দেখা যায়, নুরজাহান সুপার মার্কেটের সামনে নাহিদ নিথর অবস্থায় পড়ে ছিলেন। সেই সময় কালো হেলমেট পরিহিত এক যুবক তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে হেলমেট পরিহিত ওই যুবককে ইমন বলে শনাক্ত করে পুলিশ।
তদন্তকারীদের সন্দেহ, যেহেতু তার বাড়ি সীমান্তবর্তী জেলায়, তাই তার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই দিন দুপুরের দিকে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনে সংঘর্ষে ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হন মোরসালিন। কে বা কারা তাকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে তা তারা এখনও শনাক্ত করতে পারেনি। কর্মকর্তারা নিশ্চিত নন যে এই ঘটনাটি ইচ্ছাকৃত ছিল কিনা।
সংঘর্ষে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর নিউমার্কেটের ২টি দোকানের মালিক বিএনপি নেতা মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়ার আগে মকবুল গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশ বিএনপি ও দলটির সহযোগী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছে।
Comments