কেরানীগঞ্জ কারাগারে বিনা বিচারে বন্দি ৬ হাজার

স্টার ফাইল ছবি

কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের মোট বন্দির সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। তবে তাদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার বন্দি নিম্ন আদালতে বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে জেল আপিল নিষ্পত্তি না হওয়ায় কারাগারে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

কারো কারো ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেলেও, সংশ্লিষ্ট আদালতের নথি এখনো কারা কর্তৃপক্ষের কাছে না পৌঁছানোয় বন্দি আছেন।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির (এসসিএলএসি) চেয়ারম্যান বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম কেরানীগঞ্জ কারাগার পরিদর্শনে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে এসব তথ্য জানান।

এসসিএলএসি সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম আজ শুক্রবার কেরানীগঞ্জ কারাগার পরিদর্শনে গেলে তার সামনে ১০০ জন বন্দিকে হাজির করা হয়। এ সময় তিনি প্রায় ২০ জন কারাবন্দির বক্তব্য শোনেন।

পরিদর্শন ও শুনানি শেষে তিনি বন্দিদের আইনি সমস্যার বর্ণনাসহ একটি প্রতিবেদন তার কার্যালয়ে পাঠাতে কেরানীগঞ্জ কারাগারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

তিনি বন্দিদের জানান, এসসিএলএসি দরিদ্র ও নিঃস্ব বন্দিদের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে তাদের মামলা চলাকালে আইনি সহায়তা এবং নিম্ন আদালতে তাদের মামলা পরিচালনার সময় বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ দেবে।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম কারাগারে বন্দিদের পশুপালন, তাঁতের কাপড় ও লুঙ্গি তৈরি, জুতা তৈরি, শরীরচর্চা, ফুটবল ও ক্রিকেট প্রশিক্ষণ নিতে দেখেন।

তিনি কারাগারের বিভিন্ন কক্ষ ও রান্নাঘর পরিদর্শন করেন এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমকে জানানো হয়, কারাগারে বিপুল সংখ্যক কয়েদিকে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অর্থ উপার্জনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

এ সময় এসসিএলএসি কর্মকর্তা এবং জেলা ও দায়রা জজ ফারাহ মামুন এবং সমন্বয়কারী রিপন পালসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এসসিএলএসি ২০১৫ সাল থেকে বিনা খরচে দেশের বিভিন্ন জেলার কারাগারের বন্দিসহ দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত বিচার প্রার্থীদের আইনি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আসছে।

এ পর্যন্ত দরিদ্র দোষী সাব্যস্ত বন্দিদের করা মোট ৮৭১টি জেল আপিলের মধ্যে ৬৩১টি আপিল এসসিএলএসির উদ্যোগে নিষ্পত্তি হয়েছে।

আইন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের নিম্ন আয়ের এবং ঝুঁকিপূর্ণ নাগরিকদের আইনি সেবা নিশ্চিত করতে ২০০০ সালে সরকার আইনি সহায়তা আইন প্রণয়ন করে।

এই আইনের অধীনে জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থার অধীনে সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব জেলায় লিগ্যাল এইড কমিটি কাজ করছে।

এই সংস্থার মাধ্যমে সরকার এ পর্যন্ত দেশের প্রায় ৭ লাখ দরিদ্র ও অসহায়দের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

7h ago