নৌঘাঁটিতে মাহিন্দার পরিবার, বিক্ষোভকারীদের ঘেরাও
শ্রীলঙ্কার সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশটির নৌবাহিনীর এক ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তাদের ঘিরে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা।
এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
সূত্র জানায়, দ্বীপরাষ্ট্রটির উত্তর-পূর্বাংশের ত্রিনকোমালির এক নৌঘাঁটিতে মাহিন্দা রাজাপাকসে ও তার পরিবারের সদস্যদের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তারা আরও জানান, রাজধানী কলম্বো থেকে প্রায় ২৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এ নৌঘাঁটি। এ মুহূর্তে সরকারবিরোধীরা নৌঘাঁটির চারপাশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন।
নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় বুধবার পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।
কারফিউ কার্যকর করতে রাজপথে হাজারো সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮ ব্যক্তি নিহত ও ২ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার ভোরে সেনা অভিযানের মাধ্যমে মাহিন্দা রাজাপাকসেকে তার বাসভবন থেকে উদ্ধার করা হয়। পদত্যাগের পর থেকেই কলম্বোয় তার রাষ্ট্রীয় বাসভবনের বাইরে সরকারবিরোধীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সতর্কতামূলক ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।
একজন শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এএফপি জানায়, মাহিন্দা রাজাপাকসের বাসভবনের কম্পাউন্ডে কমপক্ষে ১০টি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধীদল সামাগি জানা বালাওয়েগায়া (এসজেবি) আজ প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের আওতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব নাকচ করেছে। তারা প্রেসিডেন্টকেও পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে।
ইতোমধ্যে শান্তিপূর্ণ সরকারবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে মাহিন্দা রাজাপাকসেকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে এসজেবি।
দেশজুড়ে বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানের উপায় হিসেবে তার ভাইকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বলেন।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পরও দেশটিতে বিক্ষোভ থামেনি।
ঋণের জালে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে খাদ্য, জ্বালানি, রান্নার গ্যাস ও ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট চরমে পৌঁছেছে।
শ্রীলঙ্কায় গত ২০ বছরের বেশিরভাগ সময়ই প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই আধিপত্য বিস্তার করেছে রাজাপাকসে পরিবার। বিক্ষোভকারীরা এ সংকটময় পরিস্থিতির জন্য মূলত এই পরিবারকেই দায়ী করছেন।
Comments