শ্রীলঙ্কা: প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ভাই মাহিন্দাকে সরাতে রাজি প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া
শ্রীলঙ্কায় সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখে বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরাতে রাজি হয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।
এপি জানায়, আজ শুক্রবার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দেশটির সংসদ সদস্য মৈথ্রিপালা সিরিসেনা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, 'নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণার জন্য একটি জাতীয় কাউন্সিল গঠন এবং পার্লামেন্টে সব দলকে নিয়ে একটি মন্ত্রিসভা গঠনের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে সম্মত হয়েছেন।'
মৈথ্রিপালা সিরিসেনা শ্রীলঙ্কার একজন সরকারদলীয় আইনপ্রণেতা। চলতি মাসের শুরুর দিকে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কায় সরকার পতনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হলে তিনি আরও ৪০ জন আইনপ্রণেতার সঙ্গে পদত্যাগ করেন।
চূড়ান্ত আর্থিক সংকটের কারণে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। শ্রীলঙ্কা ইতোমধ্যেই বিদেশী ঋণের অর্থ প্রদান স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন। এই বছর শ্রীলঙ্কাকে ৭ বিলিয়ন ডলার বিদেশী ঋণ পরিশোধ করতে হবে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে ২৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। অন্যদিকে, দেশটির বৈদেশিক রিজার্ভ ১ বিলিয়ন ডলারেরও কম।
আর্থিক সংকটের মুখে দেশটির আমদানি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খাদ্য, জ্বালানি, রান্নার গ্যাস এবং ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসেরও সংকট শুরু হয়েছে।
শ্রীলঙ্কায় গত ২০ বছরের বেশিরভাগ সময়ই প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই আধিপত্য বিস্তার করেছে রাজাপাকসে পরিবার। বিক্ষোভকারীরা এই সংকটময় পরিস্থিতির জন্য রাজাপাকসে পরিবারকেই দায়ী করেছেন।
গত মার্চ থেকে রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে জোরালো বিক্ষোভ চলার মধ্যেই বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রীর পদে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। তিনি একটি ঐক্য সরকার তৈরির প্রস্তাবও করেছিলেন, কিন্তু বিরোধী দলগুলো রাজাপাকসে পরিবারের নেতৃত্বে ঐক্য সরকারে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
অন্যদিকে আন্দোলনের মাঠে সক্রিয় থাকলেও নিজেদের মধ্যকার বিভক্তি ও দুর্বলতার কারণে দেশটির বিরোধী দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন ও পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি।
গতকাল বৃহস্পতিবারও দেশটিতে ধর্মঘট পালিত হয়েছে।
Comments