চীনে ৬০০ কিমি গতির বিশ্বের দ্রুততম ট্রেন
চীনের পূর্ব শ্যাংডং প্রদেশের কিংডাও শহরে একটি নতুন ম্যাগলেভ বুলেট ট্রেনের উদ্বোধন হয়েছে। ট্রেনটি ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার বা ৩৭৩ মাইল বেগে চলতে পারে।
এটিকে ‘বিশ্বের দ্রুততম ট্রেন’ হিসেবে উল্লেখ করে সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ট্রেনটি তৈরি করছে চীনের সরকারি রেল নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে রোলিং স্টক করপোরেশন (সিআরআরসি)’।
সিআরআরসি এর ডিজিএম ও প্রধান প্রকৌশলী লিয়াং শিয়ানইং চীনের জাতীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অন্যান্য দ্রুতগতির ট্রেনের তুলনায় এই ট্রেনটিতে শব্দ দূষণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম এবং এর রক্ষণাবেক্ষণের খরচও তূলনামুলকভাবে কম।
বর্তমানে চীনের একটি দ্রুতগতির রেলগাড়ি গড়ে ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। আর উড়োজাহাজগুলো চলে ঘণ্টায় ৮০০ থেকে ৯০০ কিলোমিটার গতিতে। এই দুই ধরণের যাতায়াত ব্যবস্থার মাঝের শূন্যস্থান পূরণ করবে কিংডাও শহরে সদ্য উন্মোচিত ম্যাগলেভ ট্রেনটি।
বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য চীনে একটিমাত্র ম্যাগলেভ লাইন চালু আছে। এটি সাংহাই শহরের পুডং বিমানবন্দর থেকে লংইয়াং রোড স্টেশনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে। ৩০ কিলোমিটার (১৯ মাইল) দীর্ঘ যাত্রাটি সম্পন্ন করতে সময় লাগে সাড়ে সাত মিনিট এবং এই ট্রেনটির গতিবেগ ঘণ্টায় ৪৩০ কিলোমিটার (ঘণ্টায় ২৬৭ মাইল)।
বেশ কিছু নতুন ম্যাগলেভ রেললাইন নির্মাণের কাজ চলছে বলে জানা গেছে। সাংহাই ও হ্যাংঝৌ এর মধ্যে একটি এবং চেংডু ও চংকিংয়ের মধ্যে আরেকটি ম্যাগলেভ লাইন চালু করার কাজ চলছে।
‘ম্যাগনেটিক লেভিটেশন’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ‘ম্যাগলেভ’। তড়িচ্চুম্বকীয় শক্তিতে চালিত ট্রেনটি যখন লাইনের ওপর দিয়ে ছুটে যায়, তখন মনে হয় এটি যেন ভেসে যাচ্ছে। ভেসে যাওয়া বোঝাতেই ইংরেজিতে লেভিটেশন শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এর গতিকে বন্দুক থেকে ছুটে যাওয়া গুলির সঙ্গে তুলনা করে ট্রেনটিকে ম্যাগলেভ বুলেট ট্রেন নামকরণ করা হয়েছে।
২০১৯ এ গণমাধ্যমের কাছে এই ট্রেনের একটি প্রোটোটাইপ প্রকাশ করা হয়েছিল। একই বছরে চীন বড় শহরগুলোর মধ্যে ‘৩ ঘণ্টায় যাতায়াতের’ উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনাটিও ঘোষণা করেছিল।
চীন বর্তমানে দ্রুত গতির রেল যোগাযোগ নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছে। দেশটির সব বড় বড় শহরের মধ্যে যাতায়াতের সময় ও খরচ কমিয়ে আনাই চীন সরকারের মূল লক্ষ্য।
Comments