স্ট্যাম্প শুল্ক বাড়ছে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত

ছবি: সংগৃহীত

এক দশক ধরে অপরিবর্তিত স্ট্যাম্প শুল্কের হার আগামী অর্থবছর থেকে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যাবে। সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেট অর্থায়নের জন্য এই উৎস থেকে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে।

এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থ বিল-২০২২-এ ৪৬ ধরনের কার্যক্রমে স্ট্যাম্প শুল্ক পরিবর্তনের প্রস্তাব করেন।

স্ট্যাম্প বিক্রি থেকে ১৩ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা আদায় করতে চায় সরকার, যা ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি। নতুন এই লক্ষ্যমাত্রা ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রকৃত সংগ্রহ ২ হাজার ৯০৬ কোটি টাকার ৪ গুণ বেশি।

এই লক্ষ্য অর্জনে গত বৃহস্পতিবার সংসদে অর্থমন্ত্রী স্ট্যাম্পের সর্বনিম্ন দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ চুক্তির জন্য ব্যবহৃত স্ট্যাম্পের দাম ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে।

যদি কেউ এক লাখ টাকার বেশি অংশীদারিত্বের চুক্তি করতে চান, তাহলে তাকে চুক্তির জন্য ব্যবহার করতে হবে ৪ হাজার টাকার স্ট্যাম্প। যা, বর্তমানে ২ হাজার টাকা।

বিবাহ বিচ্ছেদ চুক্তি আরও বেশি ব্যয় বহুল হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় স্ট্যাম্পের খরচ আগামী অর্থবছর থেকে ৩০০ শতাংশ বাড়ছে।

বর্তমানে, বিবাহ বিচ্ছেদ নিবন্ধনের জন্য ৫০০ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্প প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রস্তাবিত বিলে এই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার টাকা।

পাওয়ার অব অ্যাটর্নির জন্য একটি চুক্তি সই করতে ৫০০ টাকার স্ট্যাম্পের প্রয়োজন হয়। এই খাতে খরচ ৬০ শতাংশ বেড়ে ৮০০ টাকা হবে। যেকোনো তফসিলি ব্যাংক থেকে ঋণ, অগ্রিম বা অন্য কোনো ঋণ সুবিধা নিতে প্রয়োজনীয় স্ট্যাম্পের খরচ এক হাজার টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার টাকা হবে।

অ্যাফিডেভিট বা হলফনামার জন্য খরচ হবে ৩০০ টাকা, যা বর্তমান খরচের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি।

তবে প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী, ঋণের ক্ষেত্রে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বন্ধক রাখার স্ট্যাম্পের খরচ কমছে।

বর্তমানে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত বন্ধকী দলিলের স্ট্যাম্পের দাম ২ হাজার টাকা। প্রস্তাবিত বিলে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত বন্ধকী দলিলের দাম পড়বে ২ হাজার টাকা।

নতুন বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১২ সালের পর থেকে স্ট্যাম্প শুল্ক পরিবর্তন করা হয়নি। অথচ এটি রাজস্ব আয়ের একটি বড় উৎস হতে পারে।

স্ট্যাম্পের হার বাড়ানোর প্রস্তাব করে তিনি বলেন, 'আমাদের উন্নয়নের বর্তমান অবস্থা, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, বছরের পর বছর মুদ্রাস্ফীতি এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনা করে স্ট্যাম্প শুল্কের হার বেশ কম।'

তিনি আরও বলেন, স্ট্যাম্প শুল্কের নতুন হার এই উত্স থেকে আরও বেশি রাজস্ব আয় করতে সহায়তা করবে এবং স্ট্যাম্প শুল্ককে ব্যবহারিক ও বাস্তবসম্মত করে তুলবে।

Comments

The Daily Star  | English
education in Bangladesh

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

13h ago