কুষ্টিয়ায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট

কুষ্টিয়াতে কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। ছবি: আমানুর রহমান

শেষ মুহূর্তে কুষ্টিয়ার কোরবানির পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার পশু কেনা-বেচা চলছে জেলার ৬টি উপজেলার হাটে। হাটের বাইরেও চলছে কেনা-বেচা।

এবার জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ঈদের বেচা-কেনার মান সন্তোষজনক। কেনা বা বেচা নিয়ে ক্রেতা বা বিক্রেতার কারো তেমন ক্ষোভ দেখতে পাওয়া যায়নি।

তবে, একটি বিষয়ে বিক্রেতারা জানিয়েছেন- এবার জেলাতে বাইরে থেকে ক্রেতা কম এসেছে। বড় বড় গরুর একটি বড় অংশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে গেছে। বাকি পশুগুলো স্থানীয়ভাবেই বেচা-কেনা হচ্ছে।

জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর কোরবানির বাজারে বিক্রির জন্য প্রায় ১ লাখ গরু ও মহিষ, ৮০ হাজার ছাগল ও ভেড়া প্রস্তুত। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা।

জেলা পশু সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে সব পশু বিক্রি হয়ে যাবে কিনা এখনো বলা যাচ্ছে না।

মিরপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এস এম মাহমুদুল হক বলেন, 'এ বছর প্রান্তিক খামারিরা তাদের বিক্রয়যোগ্য সব পশু বিক্রি করতে পারবে কিনা সেই শঙ্কা আছে। অনেক খামারি ব্যাংক বা এনজিও থেকে ঋণও নিয়েছেন। এছাড়া প্রান্তিক খামারিরা নিজ বাড়িতে গরু পালন করেছেন। উপজেলায় এ বছর সাড়ে ২১ হাজার গরু, মহিষ এবং প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ছাগল, ভেড়া আছে বিক্রয়যোগ্য।'

কুষ্টিয়া শহরের আমলাপাড়া এলাকার পশু খামারি অসীম উদ্দিন জানান, এবার ৩টি দেশীয় জাতের ষাঁড় বড় করেছিলেন। তার মধ্যে দুটি গরু ইতোমধ্যে বিক্রি করে দিয়েছেন। দাম নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট।

কুষ্টিয়া জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান জানান, এ বছর কোরবানির জন্য কুষ্টিয়া জেলার ৬টি উপজেলায় বিক্রির জন্য যে পরিমাণ পশু প্রস্তুত ছিল, স্বাভাবিক সময়ে জেলার চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন এর ৬৫ শতাংশ।

তিনি জানান, এ জেলার বেশিরভাগ পশুর চাহিদা ঢাকা ও চট্টগ্রামে। কিন্তু, এবারে হাওর অঞ্চলে বন্যার কারণে চট্টগ্রামে কম গেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ইতোমধ্যে ৮০ শতাংশ পশু বিক্রয় হয়ে গেছে বলে খামারি জানিয়েছেন।

বিভিন্ন ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এবারও পূর্বের সময়গুলোর মতো খামারিরা ব্যাংক থেকে সহায়তা নিয়েছিলেন। এটি এই অঞ্চলজুড়ে একটি সাধারণ প্রবণতা। সাধারণত খামারিরা পশু পালনের মৌসুমের শুরুতে ব্যাংক লোন নিয়ে পশু ক্রয় করে এবং ঈদে পশু বিক্রয়ের পর লোন পরিশোধ করে থাকে।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কুষ্টিয়ার মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মুনসুর রহমান বলেন, 'পশু মোটাতাজাকরণে খামারিরা বিভিন্ন ব্যাংক স্বল্পমেয়াদী ঋণ দিয়ে থাকে। কৃষি ব্যাংকও লোন দিয়েছে।'

তিনি জানান, তার ব্যাংক এ খাতে খামারিদের প্রায় ৬০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে।

এছাড়া অন্যান্য ব্যাংক, এনজিও এবং অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানও ঋণ দিয়েছে বলে তিনি জানান। যার পরিমাণ প্রায় ৪শ কোটি টাকা হতে পারে বলে এই ব্যাংক কর্মকর্তার অনুমান।

তিনি জানান, প্রতি বছর ঈদের পরদিন এসব অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান প্রান্তিক পর্যায়ে কালেকশন বুথ (হালখাতা) স্থাপনে মাধ্যমে প্রদত্ত ঋণের টাকা সংগ্রহ করে। ঋণ গ্রহীতা খামারি ও চাষিরা বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ঋণের টাকা পরিশোধ করে থাকেন।  

Comments

The Daily Star  | English

Nahid warns against media intimidation, vows stern action

The government will take stern action against those trying to incite violence or exert undue pressure on the media or newspapers, said Information Adviser Nahid Islam today

1h ago