প্রবাস চোখে স্বদেশ: বাংলাদেশের মন্ত্রী এমন কেন?

ছবি: লেখকের সৌজন্যে

আমরা যারা প্রবাসে থাকি তারা দেশকে দেখি নৈর্ব্যক্তিকভাবে। একটি পাখি যেমন অনেক উঁচু থেকে তাকিয়ে দেখে ভূমির সব কিছু, আমাদের দেখাটাও তেমন। কিছু দেখি, কিছু দেখি না। যা দেখি তাও সব সময় স্পষ্ট নয়। এজন্যই যখন দেশে আসি তখন খুব কাছে থেকে সব কিছু দেখার ইচ্ছে হয়, দেখার চেষ্টা করি। প্রবাসে বসে দেশকে যেভাবে দেখি তার সঙ্গে অনেক কিছুই মেলে না।

দেশে এসে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের বাসভবনে একদিন দীর্ঘ সময় কাটালাম। পদ্মা নদীর ওপারে দক্ষিণ বাংলার অধিকাংশ জেলায় কোনো মন্ত্রী নেই। ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, নড়াইল, বরিশাল বাগের হাট, কুষ্টিয়া, পাবনা, রাজবাড়ি, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী ও বগুড়া জেলার একমাত্র মন্ত্রী তিনি।

অনেকেই বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় নিজের জীবন বাজি রেখে শেখ হাসিনার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কারণে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর 'আশীর্বাদ' পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, '৫০ বছরে তার এলাকায় যে উন্নয়ন হয়েছিল, গত ৫ বছরে হয়েছে তার থেকেও অনেক গুণ বেশি। অনেক প্রবীণ নেতা যারা বিভিন্ন মেয়াদে মন্ত্রী ছিলেন তারাও আমাদের এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। আমি করছি।'

'শেখ হাসিনার নেতৃত্ব পুরো দেশকেই উন্নয়নের শিখরে নিয়ে গেছে,' যোগ করেন তিনি।

শ ম রেজাউল করিম দেশের টেলিভিশন টকশো'র একজন তারকা। মুগ্ধ হয়ে তার কথা শোনেন দর্শকরা।

তিনি বলেন, 'আমি পৃথিবীর প্রায় ৩৫টি দেশে ভ্রমণ করেছি। কিন্তু, বাংলাদেশের মতো একজনের প্রতি আরেকজনের যে ভালোবাসা, সহমর্মিতা তা কোথাও দেখিনি। এ এক অসামান্য দেশ। রাস্তার পাশে বাঁশি বাজিয়ে সাপ খেলা দেখানো কিংবা বট গাছের ছায়ায় বসে একতারা বাজিয়ে বাউলের গান করা পৃথিবীর আর কোথায় আছে?'

গত বছর যখন সারা বিশ্বের মানুষ লকডাউনে ঘরবন্দি তখন অস্ট্রেলিয়া থেকে ছোট একটি ম্যাসেজ পাঠিয়েছিলাম মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে। ছোট্ট করে লিখেছিলাম- আপনার একটি একক ইন্টারভিউ নিতে চাই। সম্মতি দেবেন আশা করছি।

আমাকে বিস্মিত করে তিনি কয়েক মিনিট পরই ফোন করলেন। বাংলাদেশের মূলধারার মিডিয়ার অনেকের সঙ্গেই আমার ঘনিষ্ঠতা আছে। তারা জানালেন, 'রেজা ভাই' এমনই। মিডিয়াকে খুব সম্মান করেন, গুরুত্ব দেন।

এবার দেশে এসে তার বাসভবনে গিয়ে সেটা বুঝতে পারি। আন্তরিকতায় ঘুরে দেখালেন পুরো বাসভবন। বিশাল খেলার মাঠ, সম্মেলন কক্ষ, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, ভিআইপি লাউঞ্জ, ইনডোর গেম অডিটোরিয়াম।

তিনি জানান, মন্ত্রীদের বাসভবনের মধ্যে তার বাসভবনটিই অনেক খোলামেলা।

আমি যখন ফিরে আসছিলাম তিনি বললেন, আপনি অস্ট্রেলিয়া ফেরার আগে আমরা আরও সময় নিয়ে আরেক দিন বসবো।

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

'State intelligence agency' is attempting to form political party, Rizvi alleges

Doubts are growing as to whether there are subtle efforts within the government to weaken and break the BNP, he also said

3h ago