লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ১৭০ ইটভাটার ১৩০টিই অবৈধ
লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ১৪টি উপজেলায় ইটভাটা রয়েছে ১৭০টি। এর মধ্যে ৪০টি ইটভাটার বৈধতা থাকলেও বাকি ১৩০টি চালানো হচ্ছে অবৈধভাবে।
বছরের পর বছর ধরে এসব অবৈধ ইটভাটা চালু রাখা হলেও পরিবেশ অধিদপ্তর কিংবা স্থানীয় প্রশাসন থেকে নেওয়া হচ্ছে না কোনো আইনি ব্যবস্থা। অবৈধ ইটভাটার তালিকা তাদের কাছে থাকা সত্ত্বেও রয়েছে নিশ্চুপ।
এ নিয়ে বৈধ ইটভাটার মালিকরা ক্ষুব্ধ হলেও সদম্ভে রয়েছেন অবৈধ ইটভাটার মালিকরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ ইটভাটার মালিকরা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তারা সবদিক সামাল দিয়ে অবৈধ ইটভাটা চালু রাখছেন। এর জন্য তাদেরকে কোনো প্রকার ঝামেলাও পোহাতে হচ্ছে না। অবৈধ এসব ইটভাটা তৈরি করা হয়েছে কৃষি জমির ওপর কিংবা জনবসতি এলাকায়।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তেঁতুলতলা গ্রামের কৃষক মন্তাজ আলী (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অবৈধ ইটভাটার কারণে আমাদের কৃষি জমির ফসল উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। আম, জাম, কাঁটাল, সুপারিসহ বিভিন্ন ফলের উৎপাদন কমে গেছে। প্রতি বছর কৃষিজমির ওপর থেকে বিপুল পরিমাণে মাটি পোড়ানো হচ্ছে এসব অবৈধ ইটভাটায়। অবৈধ ইটভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না স্থানীয়রা।'
লালমনিরহাট সদর উপজেলার ভাটিবাড়ী গ্রামের কৃষক আবুল কাসেম (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কৃষি জমির ওপর অবৈধভাবে গড়ে উঠা ইটভাটার বিরুদ্ধে গ্রামের শতাধিক মানুষ লিখিত অভিযোগ করেও কোনো ফল পায়নি। অবৈধ ইটভাটা এখনো চালু রয়েছে। কী কারণে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা আমরা জানি না।'
রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মেজ-বাবুল-আলম বলেন, 'কুড়িগ্রামে ১১৯টি ইটভাটার মধ্যে ২২টির অনুমোদন রয়েছে এবং লালমনিরহাটে ৫১টির মধ্যে অনুমোদন রয়েছে ১৮টির। অবৈধ ইটভাটার তালিকা স্থানীয় প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। আমাদের জনবল সঙ্কট থাকায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের জনবল ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন।'
অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কেন নেওয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, 'অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩টি অভিযান চালানো হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের জনবল উপস্থিত থাকলে অভিযান বেগবান করা যায়।'
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, 'অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের চাহিদা পাওয়া গেলে তাৎক্ষনিক অভিযান পরিচালিত হবে।'
Comments