সুনামগঞ্জ

২০ দিনের ব্যবধানে আবার বন্যা, দিশেহারা হাওড়পাড়ের মানুষ

সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রভাবিত হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি আবারও বেড়ে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। আজ বুধবার সর্বশেষ বিকেল ৩ টার তথ্য অনুযায়ী, সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রভাবিত হচ্ছে।

এরইমধ্যে প্লাবিত হয়েছে- সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারা বাজারসহ ৪টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল। বিগত ২০ দিনের ব্যবধানে আবার বন্যা দেখা দেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সুনামগঞ্জের মানুষ।

সুনামগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়ে গেছে।  শহরের উত্তর আরপিননগর, তেঘরিয়া, বড়পাড়া, মধ্যবাজার, কাজির পয়েন্ট, জগন্নাথবাড়ি রোড, নতুনপাড়া, উকিল পাড়া, ষোলঘর, নবীনগর এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ, স্কুলের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা।

শহরের কিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করায় বাসা থেকে বের হতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। জরুরি প্রয়োজনে বের হতে কোনো এলাকায় কোমর আর কোনো এলাকায় হাটু পানি মাড়িয়ে তারপর বের হতে হচ্ছে।

ফলে, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। চাকরিজীবী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা দাবি করেছেন, সুনামগঞ্জকে বন্যা দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে যেন সাধারণ ছুটি দেওয়া হয়।

এভাবে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে সুনামগঞ্জে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ। এ দিকে জেলার বন্যাকবলিত উপজেলায় এখনো জরুরি ত্রাণ না পৌঁছানোর কারণে বানভাসী মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

মধ্যবাজারের ব্যবসায়ী সুনীল বণিক বলেন, 'সকাল থেকে রাস্তায় পানি আর একটানা বৃষ্টিতে কোনো কাস্টমার নেই। এখানে পরিস্থিতি ভয়াবহ।'

উত্তর আরপিন নগর এলাকার বাসিন্দা জামিলা বেগম বলেন, 'এখনো ঘরে পানি ঢোকেনি। তবে, আর ২-৩ ইঞ্চি পানি বাড়লে আমার ঘরে পানি ওঠে যাবে। টানা বৃষ্টিতে আমরা আগে ক্ষতিগ্রস্ত হই।'

ব্যবসায়ী শামসুল আলম রাজু বলেন, 'টানা বৃষ্টিতে বাসা থেকে বের হতে পারিনি৷ শহরের সব দিকে পানি। কোনো দিকে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। আমি পাইকারি পণ্য সাপ্লাই দেই। আমার কাজের লোকজনও আসতে পারেনি। একদিনে অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।'

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, 'আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যে সুনামগঞ্জে আরও ২ দিন বৃষ্টিপাত থাকবে, এ সময় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।'

সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল এলাকায় সৃষ্ট বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকায় জরুরি ত্রাণসহায়তা পাঠাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলায় ইতোমধ্যে ২০ মেট্রিকটন খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, জরুরি প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Chattogram’s garment factories fear fallout from US tariffs

Owners of Chattogram-based readymade garment factories, many of which do business with buyers in the United States, are worried about a US tariff hike to 35 percent set to take effect on August 1.

11h ago