সিরাজগঞ্জে পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ, ৮৪ স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ
যমুনা নদীর পানি কমলেও সিরাজগঞ্জে এখনো পানিবন্দি আছেন ৫ উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। পানিবন্দি থাকায় জেলার ৮৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে যমুনার পানি কমতে শুরু করে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীতে ২৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পানি কমেছে। তবে তা এখনো বিপৎসীমার ওপরে আছে।
শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানি ১৫ দশমিক ৫৪ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয় যা বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার উপরে। সিরাজগঞ্জের হার্ড পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ১৩ দশমিক ৬৫ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।
সরেজমিনে সিরাজগঞ্জের বন্যাকবলিত এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, নদীতে পানি কমলেও পানিবন্দি এলাকাগুলো থেকে এখনও পানি নামতে শুরু করেনি।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব রাউতারা গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাসার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে পানি উঠেছে, রাস্তা ঘাট তলিয়ে গেছে, পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পুরো গ্রামের মানুষ। নদীতে পানি কমলেও এখনও আমাদের গ্রাম থেকে পানি নামতে শুরু করেনি।'
সদর উপজেলার বন্নির চরের বাসিন্দা নাসিমা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদীর তীরবর্তী এ চরাঞ্চলের পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীতে পানি কমলেও পুরো এলাকা থেকে পানি নামতে অনেক সময় লাগবে।'
সিরাজগঞ্জ পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যমুনা নদীর পানি ইতোমধ্যে কমতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে বন্যাকবলিত এলাকাগুলো থেকে পানি নেমে যাবে।'
তবে এ দফায় পানি আর না বাড়লেও, আবারও যমুনায় পানি বাড়ার আশঙ্কা আছে বলে জানান তিনি।
এদিকে বন্যার কারণে জেলার ৮৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম মণ্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানিবন্দি হয়ে পড়ায় এসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসছে না। আমরা বিকল্পভাবে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার চেষ্টা করছি।'
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান জানান, চলতি বন্যায় জেলার ৫ উপজেলার ২৫ ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
বন্যা মোকাবিলায় ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
Comments