১০ বছর পর সিরিয়ায় সৌদি ত্রাণবাহী উড়োজাহাজ
ভূমিকম্পদূর্গত সিরিয়ায় সৌদি আরবের একটি ত্রাণবাহী উড়োজাহাজ অবতরণ করেছে।
আজ মঙ্গলবার সিরিয়ার পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি জানায়, ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান গৃহযুদ্ধের মাঝে সিরিয়ায় সৌদি আরবের কোনো উড়োজাহাজ অবতরণ করেনি।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সিরিয়া ও তুরস্কে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে অসংখ্য বিদেশী উড়োজাহাজ সিরিয়ায় পৌঁছেছে। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ২ দেশ মিলিয়ে ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম না প্রকাশের শর্তে কর্মকর্তা বলেন, 'এটাই ১০ বছরেরও বেশি সময়ের মাঝে সৌদি আরবের কোনো উড়োজাহাজের সিরিয়ার ভূখণ্ডে অবতরণের প্রথম ঘটনা'।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সানা জানিয়েছে, ত্রাণ হিসেবে পাঠানো ৩৫ টন খাদ্য নিয়ে সৌদি উড়োজাহাজ আলেপ্পো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অপর এক কর্মকর্তা সুলেমান খলিল এএফপিকে জানান, সৌদি আরব থেকে ত্রাণ নিয়ে বুধবার ও বৃহস্পতিবার আরও ২টি উড়োজাহাজ আসবে।
সর্বশেষ ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ায় সৌদি ফ্লাইট অবতরণ করে।
প্রায় ১ দশক ধরে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে পশ্চিমা বিশ্ব প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারকে একঘরে করে রেখেছে। ফলে, চলমান সংকটে ত্রাণ ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়ার আন্তর্জাতিক উদ্যোগগুলোতে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
২০১১ সালে আরব লীগ সিরিয়ার সদস্যপদ স্থগিত করে। সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু দেশ সিরিয়ার সঙ্গে কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
২০১২ সালে সৌদি আরব প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে।
তা সত্ত্বেও, ইতোমধ্যে রিয়াদ সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে আলাদা করে ত্রাণ পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে।
শনিবার দেশটি সিরিয়ার বিদ্রোহীদের দখলে থাকা উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে ১১ ট্রাক ত্রাণ পাঠায়। সৌদি আরবের সরকারি সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানায়, এতে ১০৪ টন খাদ্য ও তারপুলিন রয়েছে।
এ পর্যন্ত সিরিয়ায় মোট ৩ হাজার ৭০০র চেয়েও বেশি মানুষ মারা গেছেন।
সরকার নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পো প্রদেশের ২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
২০১১ সাল থেকে শুরু করে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ মানুষ মারা গেছেন এবং দেশের যুদ্ধ-পূর্ববর্তী জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তাদের অনেকেই পাশের দেশ তুরস্কে আশ্রয় নেন।
সোমবারের ভূমিকম্পের আগেও দেশটির বেশিরভাগ জনগোষ্ঠী মানবিক সহায়তার অপেক্ষায় ছিলেন। সর্বশেষ এই দুর্যোগে তাদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
Comments