বার্ধক্যের ছাপ কমাতে ঘরে বসে করতে পারেন ৩ ফেস ইয়োগা
আমাদের মুখমণ্ডলের চারপাশে দুই ডজনেরও বেশি পৃথক পেশি রয়েছে। তবে, পেশীগুলো শক্তিশালী কিংবা টোন করার জন্য জিমগুলোতে তেমন কোনো যন্ত্রপাতি পাওয়া যায় না। আবার অনেকে ঠিকমতো ত্বকের যত্ন নেওয়ার সময় পান না। ফলে বিভিন্ন অংশে ভাঁজ দেখা দেয় এবং বার্ধক্যের ছাপ পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কেউ যদি নিয়মিত ফেসিয়াল ইয়োগা করে থাকেন, তাহলে তার ত্বকে রক্তসঞ্চালন নিয়মিত হবে এবং ত্বক থাকবে সজীব ও প্রাণবন্ত।
অনেক পার্লার আছে, যেখানে গিয়ে ফেসিয়াল ইয়োগা বা ম্যাসাজ করাতে বড় অংকের টাকা ব্যয় হয়। অথচ কয়েকটি সহজ ব্যায়ামের মাধ্যমে চাইলে সেটা আপনি নিজের ঘরে বসেই করতে পারবেন।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে দ্য হাফিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে কোনো নড়াচড়া বা মুভমেন্ট না করার কারণে মুখের বিভিন্ন অংশে যদি রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো না হয় তাহলে ত্বকের পেশিগুলোতে জড়তা চলে আসে। যোগ ব্যায়ামের সাহায্যে সে সব জড়তা কাটানো যায় এবং মুখমণ্ডল দেখতে আরও বেশি লম্বাটে ও সুন্দর দেখায়।
মুখের এ ধরনের ব্যায়াম নিয়ে অনেক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। যেটা প্রমাণ করে এই ব্যায়াম কতটা কার্যকরী। প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট মুখমণ্ডলের যোগ ব্যায়াম করতে পারলেই অনেক ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে ত্বকে যে ভাঁজ পড়ে এই ইয়োগাগুলোর মাধ্যমে সেগুলো অনেকটা দূর করা যায়। তার কারণ, ব্যায়ামের মাধ্যমে মুখমণ্ডলের বিভিন্ন অংশের রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং মাংশপেশিতে নিয়মিত এই ম্যাসাজ করলে চোখের আশেপাশের অংশ কিংবা ঠোঁটের চারপাশের ভাঁজগুলো আস্তে আস্তে কমে যায়। ফলে ত্বক অনেকটাই টানটান ও কোমল দেখায়।
গবেষণায় পাওয়া বিভিন্ন ব্যায়ামগুলো থেকে সবচেয়ে কার্যকরী বিষয়গুলো নিয়ে আজ আলোচনা করবো। এইগুলোর চর্চার করে। আপনি ফেসিয়াল ইয়োগা চর্চা শুরু করতে পারেন।
চিক লিফট
হাতের ২ আঙুল আপনার গালের দুপাশে রাখুন। এরপর আলতো করে আঙুলের সাহায্যে গাল সামান্য ওপরের দিকে উঠান। এর পরে মুখ খুলে ইংরেজি অক্ষর 'ও' এর শেপ করে রাখুন। ১০ সেকেন্ড রাখার পর আবারও একইভাবে এই ব্যায়াম করুন। তখনই দেখবেন আপনার গালে একটা চাপ পড়ছে। এই চাপের সাহায্যেই আপনার গাল আর নিচের দিকে আসবে না।
চিক স্কালপ্টিং
মুখ না খুলে অর্থাৎ দাঁত না দেখিয়ে ঠোঁটকে গালের দিকে শক্তি প্রয়োগ করুন হাসি দিয়ে। এরপরে ঠোঁটের দুপাশ দিয়ে সেই দুই অংশ গালের মাংশপেশী পর্যন্ত টেনে ধরুন। এভাবেই ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত ধরে রাখুন। পর পর কয়েকবার করুন।
লায়ন পোজে
প্রথমে কোনো স্থানে আরামদায়কভাবে বসুন। এরপর আপনার হাত সামনের দিকে এনে ফ্লোরের সঙ্গে লাগিয়ে স্ট্রেচ করুন। ফেস নিচের দিকেই রাখুন। একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিন এবং নিঃশ্বাস বের করার সময় সিংহের মতো গর্জন করুন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছুদিন এই ব্যায়াম করলে বিশেষ উপকার পাওয়া যাবে।
কয়েকটি বিষয় মনে রাখা জরুরি যে, কোনো ব্যায়ামের মতোই ফেসিয়াল ইয়োগারও নিয়মিত চর্চা খুবই জরুরি। প্রয়োজন হলে আপনি কম সময় করতে পারেন কিন্তু আপনাকে প্রতিদিন এই ফেসিয়াল ইয়োগা চর্চা করতে হবে। প্রথমে ৩টি দিয়ে শুরু করতে পারেন। পরে চাইলে আরও বেশি সময় নিয়ে এই ব্যায়াম চর্চা করেতে পারবেন। কোনো কিছুই কম সময়ে দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল পাওয়া যায় না। তাই ধৈর্য সহকারে চর্চা করলে আপনি অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবেন।
তথ্যসুত্র: হাফপোস্ট, ডেইলি মেইল
গ্রন্থনা: আরউইন আহমেদ মিতু
Comments