সৌম্যের অলরাউন্ড নৈপুণ্য, মুশফিকের ব্যাটে ঝড়

Soumya Sarkar
৮২ রানের ইনিংসের পথে সৌম্য সরকার। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া খুলনা টাইগার্সের হাল ধরে রেখে বড় ইনিংস খেললেন সৌম্য সরকার। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ঝড় তুলে তার সঙ্গে গড়লেন বড় জুটি। খুলনার পাওয়া বিশাল পুঁজি তাড়া করতে নেমে এনামুল হক বিজয় আশা জাগিয়েছিলেন। পরে মাঝপথেই খেই হারায় তারা। ডুবে মরার অবস্থা থেকে আলাউদ্দিন বাবু শেষ ওভারে তিন ছয় মেরে একটু রোমাঞ্চ এনেছিলেন। তবে পুরো আসরেই এলোমেলো দলটি পরে আর পেরে উঠেনি।

বিপিএলে একের পর এক হারে তলানিতে থাকা সিলেটের ফ্র্যাঞ্চাইজি 'হোম' ভেন্যুতে এসেও বদলাতে পারল না নিজের বিবর্ণ বাস্তবতা। সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খুলনার কাছে তারা হেরেছে ১৫  রানের ব্যবধানে।

আগে ব্যাট করে সৌম্যর ৬২ বলে ৮২ আর মুশফিকের ৩৮ বলে ৬২ রানে ১৮২ রানের পুঁজি পায় খুলনা। রান তাড়ায় সানরাইজার্স করতে পারে ৬ উইকেটে ১৬৭  রান। ব্যাটিংয়ের মতো বল হাতেও অবদান রেখেছেন সৌম্য। ৪ ওভারের কোটা পূরণ করে ২৭ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।

এই হারের পর পরের পর্বে যাওয়ার সম্ভবনা অনেকটাই নিভে গেল সিলেটের। অন্য দিকে ৭ ম্যাচে ৪ জয়ে টেবিলের তিনে থাকল খুলনা।

Soumya Sarkar
উইকেট নিয়ে সৌম্যের উদযাপন। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বিশাল রান তাড়ায় নেমে সিলেট শুরুতে ছিল একটু মন্থর। তবে ডানা মেলতে দেরি হয়নি। প্রথম ১২ বলে ১২ করেছিলেন এনামুল হক বিজয়। এরপর তুলেন ঝড়। ২২ বলে পৌঁছে যান ৪২ রানে।

লেন্ডল সিমন্স করেছেন হতাশ। জড়সড়ো ব্যাট করে ১৭ বলে ১০ রান করে নাবিল সামাদের শিকার হন তিনি।  আগ্রাসী ব্যাট করতে থাকা বিজয়ের সঙ্গে ২৯ রানের জুটি কলিন ইনগ্রামের। তবে স্পিনারদের আক্রমণ থেকে সরিয়ে শিশির ভেজা মাঠে রানের গতি শ্লথ করে দেন। সেই চাপ এনে দেয় উইকেট।

৩৩ বলে ৪৭ করে থিসারা পেরেরার বলে ক্যাচ উঠিয়ে বিদায় নেন বিজয়। মোহাম্মদ মিঠুন এসে ৮ বল খুইয়ে সৌম্যের বলে ছক্কার চেষ্টায় থামান ইনিংস। অধিনায়ক বোপারা ২ বল খেলেই থিসারার বলে ড্রাইভ করে দেন ক্যাচ। থিতু হয়ে ইনগ্রাম ফেরেন ৩৭ রানে। ম্যাচের তখন গতিপথ পরিষ্কার। সেই গতিপথ ধরেই শেষ ওভার পর্যন্ত গেল খেলা। শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে ৩৬ রান দরকার ছিল সিলেটের। কামরুল ইসলাম রাব্বির প্রথম তিন বলেই তিন ছয় মেরে দেন আলাউদ্দিন। বাকি তিন বলে আর মেলেনি সমীকরণ।

এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় খুলনা। রান আউটে কাটা পড়ে ফিরে যান আন্দ্রে ফ্লেচার। তিনে নেমে প্রথম বলেই বিদায় নেন শেখ মেহেদী হাসান।

Mushfiqur Rahim

১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে থতমত দলকে আস্থা দেন ইয়াসির আলি। সৌম্যকে নিয়ে দ্রুত একটি জুটি গড়ে তুলেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে আসে ৩৩ বলে ৪৫ রান। ইয়াসির খেলছেন বেশ সাবলীল। ইনিংসটা বেশ বড় করার সুযোগ ছিল তার। কিন্তু প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা একেএস স্বাধীনকে মারতে গিয়ে ব্যাট-প্যাডে অনেক ফাঁক রেখেছিলেন। তাতে স্টাম্প ভেঙ্গে যায় তার। ১৮ বলে ২৩ করে ফেরেন তিনি।

এরপরই সৌম্য-মুশফিকের বিশাল জুটি। সৌম্য শুরুতে ছিলেন বেশ সতর্ক। রান বাড়িয়েছেন অনেকটা ওয়ানডে মেজাজে। মুশফিকও থিতু হতে নেন সময়। পরে দুজনেই ডানা মেলেছেন, খেলেছেন বড় বড় শট।

সৌম্য ফিফটি স্পর্শ করেন ৪২ বলে, মুশফিক ফিফটি করেন ৩২ বলে। ফিফটির পরের ২০ বলে সৌম্য যোগ করেন আরও ৩২ রান। ৮২ রানের ইনিংসে ৪টি করে চার-ছক্কা মেরেছেন তিনি। ৩২ বলে ফিফটি করা মুশফিক পরে ৩৮ বলে করেন ৬২ রান। ৬ বাউন্ডারির সঙ্গে ২ ছক্কা মেরেছেন খুলনা অধিনায়ক। চতুর্থ উইকেটের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৮৪ বলে ১৩১ আনেন তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৮২/৩ (ফ্লেচার ১, সৌম্য ৮২*, শেখ মেহেদী ০, ইয়াসির ২৩, মুশফিক ৬২* ; গাজী ১/২৭, মোসাদ্দেক ০/৪১, স্বাধীন ১/৩৩, বোপারা ০/৩৪) 

সিলেট সানরাইজার্স:  ২০ ওভারে ১৬৭/৬  (সিমন্স ১০, বিজয় ৪৭, ইনগ্রাম ৩৭ , মিঠুন ২, বোপারা ০, মোসাদ্দেক ৩৯*, অলক ২, আলাউদ্দিন ২৫* ;  খালেদ ১/২৯  , নাবিল ১/২৭, কামরুল ০/৪৬ , শেখ মেহেদী ০/১৪ , থিসারা ২/২৩  , সৌম্য ২/২৭ )

ফল :  খুলনা টাইগার্স ১৫   রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সৌম্য সরকার।

Comments

The Daily Star  | English

People will have to take to the streets for voting rights: Fakhrul

People will have to take to the streets like they did on August 5 to realise their voting rights, said BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir today

27m ago