শুনানিতে মিরাজ ও চট্টগ্রাম দুই পক্ষেরই ভুল স্বীকার
বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বে ব্যাট-বলের লড়াই ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছিল মাঠের বাইরের বিতর্ক। অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার জেরে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও তার দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। উদ্ভূত সমস্যার সমাধান ইতোমধ্যে হয়ে গেলেও তাদেরকে শুনানিতে তলব করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেখানে দুই পক্ষই নিজেদের ভুল স্বীকার করেছে।
বৃহস্পতিবার বিসিবি কার্যালয়ে মিরাজ ও চ্যালেঞ্জার্স কর্তৃপক্ষকে শুনানিতে ডাকা হয়েছিল। দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে পরদিন শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিসিবি।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ম্যাচ শেষে শুনানিতে অংশ নেন চ্যালেঞ্জার্সের কর্ণধার কেএম রিফাত উজ জামান, চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) ইয়াসির আলম ও মিরাজ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সেক্রেটারি ইসমাইল হায়দার মল্লিক, বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন, বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের প্রধান মেজর (অব.) আবু মোহাম্মদ হুমায়ুন মোর্শেদ ও বিপিএল টুর্নামেন্ট ইন চার্জ সাইফুল আমিন।
বিজ্ঞপ্তিতে ইসমাইল বলেছেন, 'আমরা মিরাজ ও চ্যালেঞ্জার্স কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম জনসমক্ষে তাদের প্রতিক্রিয়ার কারণ খুঁজে বের করার জন্য, যা অযৌক্তিক জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে। খেলোয়াড় ও ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তা, উভয় পক্ষই স্বীকার করেছেন যে তারা পরিণতি বিবেচনা না করেই অযৌক্তিকভাবে কাজটি করেছেন। এটি একটি ভুল বোঝাবুঝির ব্যাপার ছিল যা দলের মধ্যেই বন্ধুত্বপূর্ণভাবে নিষ্পত্তি করা উচিত ছিল। তারা উদ্ভুত জটিলতাকে আরও আরও বাড়তে দেওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং বোর্ড ও এই টুর্নামেন্টের জন্য বিব্রতকর অবস্থা তৈরির দায় স্বীকার করেছে।'
মিরাজ এর আগে দাবি করেছিলেন, সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর মাত্র তিন ঘণ্টা আগে তাকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল। তবে শুনানিতে তার এই দাবি নিয়ে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন বাস্তবতা। মিরাজকে আরও আগেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন ইসমাইল, 'খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করার পর, বোর্ড এই বিষয়ে সন্তুষ্ট হয়েছে যে এটি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার সমস্যা ছিল, যা সমাধান করা হয়েছে। আমরা এটাও বুঝতে পেরেছি যে মিরাজকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত- যা স্পষ্টতই ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত করেছিল- দলটির পরবর্তী ম্যাচ শুরুর যথেষ্ট আগেই ম্যানেজমেন্ট তাকে জানিয়ে দিয়েছিল। খেলোয়াড় ও ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তাদের এই ইভেন্টের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধকে মনে করিয়ে দিয়েছে বোর্ড এবং শৃঙ্খলা ও সততার বিষয়ে বোর্ডের জিরো টলারেন্স নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।'
গত ২৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসের সময় জানা যায় মিরাজের নেতৃত্ব হারানোর বিষয়টি। তার জায়গায় অভিজ্ঞ ক্রিকেটার নাঈম ইসলাম টস করতে নামেন। পরদিন মিরাজ অভিযোগ করেন, চট্টগ্রামের সিওও ইয়াসির আলম তাকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন গণমাধ্যমে। এক পর্যায়ে তিনি টিম হোটেল থেকে বেরিয়ে ঢাকাতেও ফিরে আসতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যায় চ্যালেঞ্জার্স কর্তৃপক্ষ। সেদিন সন্ধ্যায় প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে ইতি ঘটে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের।
Comments