মৃত্যুঞ্জয়ের শেষ ওভারের ঝলকে চট্টগ্রামের রোমাঞ্চকর জয়

mrittunjoy chowdhury
মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

জীবন পাওয়া ইনিংসটা টেনে নিয়ে দলকে খেলায় রেখেছিলেন তামিম ইকবাল। মাঝে শুভাগত হোম এসে ঝড় তুলে দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন জয়ের কিনারে। সেখান থেকে শেষটা টানতে পারেননি তামিম আর নাঈম শেখ। মৃত্যুঞ্জয়ের চৌধুরীর ঝলকে দারুণ এক জয় তুলে নিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মিনিস্টার ঢাকাকে ৩ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম। আগে ব্যাট করে শামীম পাটোয়ারির ফিফটিতে ১৪৮ রান করেছিল চট্টগ্রাম। পুরো ২০ ওভার খেলে ঢাকা করতে পারে ১৪৫ রান।

প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খেলে ৫৬ বলে ৭৩ রানে অপরাজিত থাকেন তামিম। তবে দলের তা আর কাজে লাগল না। চট্টগ্রামের ম্যাচ জেতানোর নায়ক বাঁহাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয়। ৪ ওভার বল করে মাত্র ২১ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি। শেষ ওভারে দেন মাত্র ৫ রান। 

Chattagram Challenger

শেষ ওভারে দরকার ছিল ৯ রান। মৃত্যুঞ্জয়ের  প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে যান কাইস আহমেদ। জাতীয় দলের ওপেনার হলেও  নাঈমকে নামানো হয় আট নম্বরে। ক্রিজে এসে পরের দুই বলে কোন রান নিতে পারেননি তিনি। পরের বল হয় ওয়াইড, চতুর্থ বলে তিনি এক রান নিয়ে স্ট্রাইক দেন তামিমকে। স্ট্রাইক পেয়ে তামিমও পারেননি। শেষ বলে ম্যাচ জিততে  ছক্কার দরকার ছিল ঢাকার। মৃত্যুঞ্জয়ের বিমারেও কাজে লাগাতে পারেননি নাঈম। বাড়তি আরেকটি বল পেয়েও হতাশ করেন এই বাঁহাতি।

১৪৯ রান তাড়ায় শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে ঢাকা। তৃতীয় ওভারে মোহাম্মদ শাহজাদকে তুলে নেন শরিফুল ইসলাম। তিনে নেমে মারার তালে থাকা ইমরানুজ্জামানকে ফেরান নাসুম আহমেদ। পাওয়ার প্লে কাজে লাগানোর জন্য মাশরাফি মর্তুজাকে চারে নামিয়ে দিয়েছিল ঢাকা। তিনি টিকতে পেরেছেন কেবল তিন বল।

২১ রানেই তাই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে ঢাকা।  পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেটে আসে ২৮ রান। তামিম ছিলেন খোলসবন্দি। তার সঙ্গে মিলে শুরুতে দ্রুত রান আনতে পারছিলেন না মাহমুদউল্লাহও।

Tamim Iqbal
৭৩ রান করেও দলকে জেতাতে পারেননি তামিম ইকবাল। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মেহেদী হাসান মিরাজ ধুঁকতে থাকা তামিমকে ফেরাতে পারতেন। ২১ বলে ২১ করার সময় তামিম মিরাজের বলে দিয়েছিলেন সহজ স্টাম্পিংয়ের সুযোগ। আকবর আলির ব্যর্থতায় বেঁচে যান তামিম। ওই ওভারেই মারেন দুই চার।

জীবন পাওয়া তামিম পরে বদলে যান আমূলে। খেলতে থাকেন সাবলীল গতিতে। ম্যাচ হয়ে যায় সহজ। মাহমুদউল্লাহ ধুঁকতে ধুঁকতে টিকেছিলেন। তার অস্বস্তি থামে মিরাজের বলে। এরপর খেলায় ফিরতে থাকে চট্টগ্রাম। তামিম ফিফটি পেরিয়ে মাঝে কিছু শট খেলে দলকে রাখেন ম্যাচে। 

শেষ তিন ওভারে ম্যাচ জিততে ঢাকার দরকার ছিল ৩২ রান। ওই সময় ১১ বলে ২২ রান করে ম্যাচ সহজ করে দিয়েছিলেন শুভাগত। শুভাগত যখন ফিরছেন ম্যাচ শেষ করতে ঢাকার চাই ১১ বলে ১৪ রান। ওই অবস্থা থেকে ম্যাচটা বের করতে পারেনি তামিম-নাঈম।

এদিন একাদশ ও অধিনায়কত্ব নিয়ে আবার এক নাটকীয়তার পর ব্যাট করতে নেমে বাজে শুরু পায় চট্টগ্রাম। অধিনায়কত্ব হারানোর পর এই ম্যাচে একাদশেও জায়গা হারিয়েছিলেন নাঈম ইসলাম। তার বদলে নেমে জাকির হাসান নামেন ওপেনিংয়ে। আফিফ হোসেন হন নতুন অধিনায়ক। 

তাদের শুরুটা হয় বাজে। ফজল হক ফারুকির ভেতরে ঢোকা বলে শুরুতেই স্টাম্প উড়ে যায় জাকিরের। এরপর আফিফ-উইল জ্যাকসের জুটিতে লড়াইয়ে ফেরে তারা। তবে দুজনের কেউই তেমন বিস্ফরোক হতে পারছিলেন না।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৩৫ বলে ৪০ রান। থিতু হওয়া জ্যাকস আরাফাত সানির বলে ক্রিজ থেকে বেরিয়ে স্টাম্পিং হয়ে ফেরেন। আফিফেরও একই হাল। শুরুটা পেয়েও আরও একবার বড় করতে পারেননি ইনিংস। দ্রুত ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ, আকবর আলিরা।

শামীমের সঙ্গে মিলে বেনি হাওয়েল পরে দলের চেহারা বদলে দিয়েছেন। শুরুতে শামীম ছিলেন কিছুটা সতর্ক। পরে মেলেছেন ডানা।

৬ষ্ঠ উইকেটে দুজনে যোগ করেন ৪১ বলে ৫৮ রান। ৩৪ বলে ফিফটি পূরণ করেই ফেরেন শামীম। শেষ তিন ওভারে দলকে যথেষ্ট রান পাইয়ে দেন হাওয়েল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর 

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স:   ২০ ওভারে ১৪৮/৬  (জাকির ১, জ্যাকস ২৬, আফিফ ২৭, মিরাজ ২, শামীম ৫২ , আকবর ৯, হাওয়েল  ২৪*, মৃত্যুঞ্জয় ০*  ;  মাশরাফি ১/২৪, ফারুকি ১/৩২, সানি ১/১৬, ইবাদত ১/৩৪, কাইস ১/৩৩, মাহমুদউল্লাহ ১/৫)

মিনিস্টার ঢাকা:   ২০ ওভারে ১৪৫/৬  (তামিম  ৭৩* , শাহজাদ ৭, ইমরান ৮, মাশরাফি ০ , মাহমুদউল্লাহ ২৪, শুভাগত ২২, কাইস ১ , নাঈম ২*  ; শরিফুল ২/২৪ , নাসুম ১/১৫ , মৃত্যুঞ্জয় ২/২১, মিরাজ ১/২৯, হাওয়েল ০/৪১, জ্যাকস ০/৯ )\

ফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৩ রানে জয়ী।

 

Comments

The Daily Star  | English

People will have to take to the streets for voting rights: Fakhrul

People will have to take to the streets like they did on August 5 to realise their voting rights, said BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir today

26m ago