ফ্লেচার-সৌম্যের ব্যাটে ম্লান মিঠুনের লড়াই
আরও একবার ব্যাটিং ব্যর্থতায় চরম বিপর্যয়ে পড়ল সিলেট সানরাইজার্স। এবার খাদের কিনার থেকে দলকে উদ্ধারে ত্রাতা হলেন মোহাম্মদ মিঠুন। খেললেন ৭২ রানের ইনিংস। তাতে লড়াইয়ের একটা পুঁজি পেয়েছিল তারা। তবে দুর্বল বোলিং আক্রমণ নিয়ে লড়াই জমাতে পারেনি মোসাদ্দেক হোসেনের দল। খুলনা টাইগার্সের দুই ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার আর সৌম্য সরকারের ঝলকেই ম্যাচ হয়ে পড়ে একপেশে।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৯ উইকেটে জিতেছে খুলনা। সিলেটের ৫ উইকেটে ১৪২ রানের জবাবে ১ উইকেটে ১৪৪ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে তারা। দলের হয়ে ৪৭ বলে সর্বোচ্চ ৭১ রান করে অপরাজিত থাকেন ফ্লেচার। ৩১ বলে ৪৩ করে ফেরেন সৌম্য। তিনে নেমে ৯ বলে অপরাজিত ২২ করে দ্রুত খেলা শেষ করে দেন থিসারা পেরেরা। রান রেট বাড়িয়ে নিয়ে খুলনা ম্যাচ জেতে ৩৪ বল আগে।
রান তাড়ায় নেমে খুলনার দুই ওপেনার ফ্লেচার ও সৌম্য আনেন উড়ন্ত শুরু। সিলেটের দুর্বল বোলিং আক্রমণ গুঁড়িয়ে পাওয়ার প্লের মধ্যেই তারা এনে ফেলেন ৬৫ রান।
পাওয়ার প্লের পরও দুজনের ব্যাটে তরতরিয়ে আসতে থাকে রান। ৩৪ বলে ৫০ স্পর্শ করেন ফ্লেচার। সৌম্যও ছিলেন সে পথে। সহজেই পেতে পারতেন ফিফটি, খেলছিলেন দারুণ। কাভার ড্রাইভ, স্লগ সুইপ, পুল মারেন দেখার মতো। তার সুন্দর ইনিংস থামে দৃষ্টিকটু আউটে। মারমুখী ইনিংসে সৌম্য মারেন ৬ চার আর ১ ছক্কা।
নাজমুল ইসলাম অপুর অনেক শর্ট বল ছক্কায় উড়িয়ে দেওয়া যেত যে কোনো দিক দিয়ে। সেই বলে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ক্যাচ উঠিয়ে দেন সৌম্য। ফ্লেচার অবশ্য আর থামেননি। রান রেট বাড়ানোর তাগিদে দ্রুত খেলা শেষ করার দিকে মন দেন এই ক্যারিবিয়ান।
আগের ম্যাচে দুই ওপেনারই ছিলেন খোলসে বন্দি। তাদের কারণে রান তাড়ায় ভুগেছিল দল। খোলস ছেড়ে বেরিয়ে দুজনই এদিন মেলে ধরেন ডানা। তাদের ব্যাটে নাগালে থাকা লক্ষ্য হয়ে যায় অনেক সহজ। ৯৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর ম্যাচে কোনো উত্তাপ ছিল না। বাকিটা সময় ছিল আনুষ্ঠানিকতার।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় সিলেট। আসেনি জুতসই শুরু, পড়তে থাকে উইকেট। তৃতীয় ওভারে এনামুল হক বিজয় খালেদ আহমেদের বলে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। আরেক ওপেনার লেন্ডল সিমন্স শুরু থেকেই ছিলেন জড়সড়। খেলতে থাকেন একের পর এক ডট বল। নিজের উপর চাপ বাড়িয়ে এই ওপেনার ফেরেন ১৯ বলে মাত্র ৬ রান করে। পারেননি আরেক বিদেশী কলিন ইনগ্রামও।
তিনে নামা মিঠুনই ধরে রাখেন সিলেটের হাল। ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক মোসাদ্দেকের সঙ্গে ৬৮ রানের জুটি গড়েন তিনি। ৩০ বলে ৩৪ করা মোসাদ্দেকও শিকার হন খালেদের।
মিঠুন থিতু হতে দেন সময়। এগোচ্ছিলেন রানে-বলে তাল রেখে। তবে ৩০ পেরুনোর পর ডানা মেলতে থাকেন তিনি। ৪২ বলে স্পর্শ করেন ৫০। পরের ৯ বলে যোগ করেন আরও ২০ রান। তার ব্যাটেই দেড়শর কাছে যেতে পারে সিলেট। তবে সেই রান খুলনার কাছে পরে হয়ে যায় বেশ মামুলি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সিলেট সানরাইজার্স: ২০ ওভারে ১৪২/৫ (সিমন্স ৬, বিজয় ৪, মিঠুন ৭২, ইনগ্রাম ২, মোসাদ্দেক ৩৪, মুক্তার ৫*, নাদিফ ৬*; খালেদ ২/২০, নাবিল ১/১০, কামরুল ১/৩১, শেখ মেহেদী ০/৮, প্রসন্ন ০/২২, থিসারা ০/৩০, সৌম্য ১/১৬)
খুলনা টাইগার্স: ১৪.২ ওভারে ১৪৪/১ (ফ্লেচার ৭১*, সৌম্য ৪৩, থিসারা ২২*; সিরাজ ০/১৮, গাজী ০/১৫, মুক্তার ০/৩১, অপু ১/৩৯, মোসাদ্দেক ০/২০, জুবায়ের ০/২০ )
ফল: খুলনা টাইগার্স ৯ উইকেটে জয়ী।
Comments