পরিকল্পনা করেই হ্যাটট্রিক তুলে নিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

এনামুল হক বিজয় আউট হলেন বাজে বলেই। লক্ষ্য বড় থাকায় ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হলেন সিলেট অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন। টানা দুই বলে উইকেট তুলে নেওয়ার পর তৃতীয় বলে তখন সামনে রবি বোপারা। অসাধারণ ইয়র্কারে বোল্ড করে দিলেন এ ইংলিশ ব্যাটারকে। পেয়ে গেলেন বিপিএলের অভিষেকেই হ্যাটট্রিক। পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন করেই হ্যাটট্রিক তুলে নেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী।

মৃত্যুঞ্জয় সে ওভারে আসার আগে সম্ভাবনাটা বেশ ভালোভাবেই ছিল সিলেট সানরাইজার্সের। ১৮ বলে চাই ৪৯ রান। কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। মৃত্যুঞ্জয়ের প্রথম দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে জয়ের সম্ভাবনা আরও জোরালো করেন এনামুল হক বিজয়। এরপর সেই নাটকীয় তিন বল। একে একে পেলেন বিজয়, মোসাদ্দেক ও বোপারার উইকেট। হ্যাটট্রিক! ম্যাচ তো তখনই হেলে পড়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দিকে।

শেষ পর্যন্ত সহজেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে স্বাগতিকরা। অথচ আগের দিনই এই মাঠে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে সে অর্থে লড়াইটাও করতে পারেনি। স্কোরবোর্ডেও বড় পুঁজি মিলেনি। এদিন চলতি আসরে প্রথম দল হিসেবে করেন দুই শতাধিক রান। কিন্তু বড় পুঁজির পরও যখন ম্যাচ কঠিন হয়ে যাচ্ছিল, তখন জ্বলে উঠলেন তরুণ মৃত্যুঞ্জয়। যা কি-না তার বিপিএল ক্যারিয়ারেরই প্রথম ম্যাচ।

শেষ পর্যন্ত মৃত্যুঞ্জয়ের হ্যাটট্রিকে সিলেট সানরাইজার্সকে ১৬ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০২ রান তোলে তারা। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৬ রানের বেশি করতে পারেনি সিলেট। সাধারণ সেই হ্যাটট্রিকের জন্য ম্যাচসেরার পুরষ্কারও পেয়েছেন ২০ বছর বয়সী মৃত্যুঞ্জয়।

ম্যাচ শেষে এ তরুণ বলেন, 'সত্যি কথা বলতে গেলে প্রথম দিকে নার্ভাস ছিলাম না। কারণ প্রথম দিকে আমার পরিকল্পনাই ছিলো ইয়র্কারটা ভালোভাবে করবো এবং প্রথম ওভারেই এক্সিকিউশনটা ভালো হয়েছে। তো এই কারণে প্রথম দিকে প্রেশারে ছিল না। আর আমার আত্মবিশ্বাস ছিল যে শেষের দিকে... আশা করি যেহেতু আমার প্রথম দুইটা ভালো হয়েছে, ইয়র্কারগুলো ভালো পড়ছিল, তো এই আত্মবিশ্বাসের কারণে। শেষের দিকেও আত্মবিশ্বাসটা ভালো ছিল যে ইয়র্কারটা ভালো পড়বে এবং সেটা পড়েছেও।'

টানা ইয়র্কার করে যাওয়ার পরিকল্পনাটা অবশ্য অধিনায়কই দিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়কে। তার বাস্তবায়ন দারুণভাবেই করেন এ তরুণ, 'ক্যাপ্টেন অসাধারণ একটা প্ল্যান দিয়েছিলেন যে স্টাম্প টু স্টাম্প ইয়র্কার। প্রথম বলটা হয়তোবা হয়নি বাট চেষ্টা করেছি এবং পরবর্তী বলগুলো ইয়র্কারই হয়েছে এবং যেটা কাজ করেছে।'

আর এমন প্রাপ্তিতে দারুণ উচ্ছ্বসিত এ পেসার, 'প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই স্বপ্ন থাকে পাঁচ উইকেট এবং হ্যাটট্রিক। তবে এইরকম পর্যায়ে প্রথম ম্যাচেই সেটা আশা করিনি। তবে এক্সিকিউশন যেহেতু ভালো হয়েছে সেক্ষেত্রে এটি একটি প্রাপ্তি বলা যায়।'

Comments