চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে মিরাজের দ্বন্দ্বের অবসান

ম্যাচ শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার জের ধরে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ছেড়ে ঢাকায় ফিরতে চেয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি দলটির প্রধান অপারেটিং অফিসার (সিওও) ইয়াসির আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেছিলেন, মিথ্যাচার করেছেন এই কর্মকর্তা। এ নিয়ে দিনভর নাটকীয়তা চলে চট্টগ্রামে। তবে দুই পক্ষের মধ্যকার সমস্যা মিটে গেছে। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে দ্বন্দ্বের ইতি টেনেছেন মিরাজ।

রোববার রাতে মিরাজের সঙ্গে চট্টগ্রামের টিম হোটেলে (পেনিনুসলায়) বৈঠক করেন ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিক ও আখতার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিফাত উজ জামান। এরপর গণমাধ্যমের কাছে দুজনেই জানিয়েছেন, বিরোধের অবসান হয়েছে।

মিরাজের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণ উল্লেখ করে বিবৃতিতে রিফাত বলেন, 'কিছু মিস কমিউনিকেশন ছিল, মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল। মিস কমিউনিকেশনটা একটু বেশি ছিল। কমিউনিকেশন না হওয়ার কারণে এখানে মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিংও হয়েছে। সব মিলিয়ে এখানে কয়েকটা ঘটনা ঘটে গেছে। অনেক অনেক সময় না, অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে এগুলো ঘটে গেছে। শেষ কয়েক দিন ধরে একটা কমিউনিকেশন গ্যাপ ছিল এখানে।'

'টিম ম্যানেজম্যান্ট যারা দলটাকে পরিচালনা করে তাদের সঙ্গে, অধিনায়কের সঙ্গে, যেহেতু শেষ অধিনায়ক মিরাজই ছিল তার সঙ্গে পুরো ম্যাচ নিয়ে যে পরিকল্পনা থাকত এবং ম্যাচের পর ফল নিয়ে কিছু মিসকমিউনিকেশন ছিল। সেখানকে অনেকটা বিস্ময়করভাবে একজন অধিনায়ক হয়েছেন, যিনি সহ-অধিনায়ক ছিলেন। মিরাজের সঙ্গে যে সহ-অধিনায়ক ছিল সে-ই আবার অধিনায়ক হয়েছেন। এই জিনিসগুলো মিরাজ প্রপারলি ব্রিফড ছিল না।'

'কিন্তু সার্বিকভাবে তার (মিরাজ) কোনো সমস্যা নেই। সে বলেছে, আমি যদি জানতাম তাহলে, এটা তো বড় কিছু না। বিপিএল এটা হয় কিন্তু এটা হওয়ার তো একটা ধরন আছে। এতে আমি শকড। সে বলেছে, আমি তো পরিষ্কারভাবে জানতাম না। যদি আমি জানতাম তাহলে তো আমি শকড হতাম না। আমার জন্য অনেক শকিং ছিল ম্যাচের দিন জানানো হয়েছে যখন। আর তার এই কথায় আমি  পুরোপুরি একমত।'

তবে এসব বিষয়ের প্রভাব ম্যাচে পড়বে না বলেই বিশ্বাস করেন ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিক, 'পরিবারের মধ্যে একটু মিসকমিউনিকেশন, ঝগড়াঝাঁটি এগুলো হয়েই থাকে। যেটাই হয়েছে, এখন আমরা খুব খুশি। কালকের ম্যাচের জন্য আমরা খুব মনোযোগ দিচ্ছি। কালকের দিনটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।... এর মধ্য এই রকম একটা সময়ে এমন ঘটনা ঘটে যাওয়ায়, এটাকে মানসিক চাপ বলতে পারেন। সেই জায়গা থেকে এখন আমরা অনেকটাই রিল্যাক্সড। আমরা কথা বলেছি, কথা বলে বুঝতে পেরেছি, কি হয়েছে। এবং এখন মিরাজ, আমরা খুব খুশি। সে দলের বিশেষ একজন।'

এ প্রসঙ্গে মিরাজ বলেছেন, 'যেভাবে সব হয়েছিল, আমি অপমানিত বোধ করছিলাম। উনাদের ফ্র‍্যাঞ্চাইজি, উনারা যাকে ইচ্ছে অধিনায়ক বানাবেন, যাকে ইচ্ছে খেলাবেন। তারা না চাইলে তো আমি খেলতেও পারব না। আমি তো নেতৃত্ব চেয়ে নিইনি। যেভাবে ম‍্যাচ শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আমাকে দলের ম‍্যানেজার (ফাহিম মুনতাসির সুমিত) বলেন, আমি আর নেতৃত্বে নেই, এটা খুব শকিং ছিল আমার জন‍্য।'

শেষ পর্যন্ত এ দ্বন্দ্ব মেটায় খেলতে রাজী হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের স্পিন অলরাউন্ডার মিরাজ। তবে অধিনায়কত্বে ফিরছেন না বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি, ' আমি এই দলে একজন খেলোয়াড় হিসেবে খেলে যাব। কিন্তু উনারা কখনও যদি অধিনায়ক করতেও চান, আমি (রিফাত) ভাইয়ার সামনেই বলছি, নেব না।'

 

Comments