চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গেও সেই একই চিত্র
খুলনা টাইগার্সকে ১৪৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে পারল চট্টগ্রাম ভাইকিংস। এবারের বিপিএলে দিনের প্রথম ম্যাচ হিসেবে খারাপ নয়। কারণ প্রথম ম্যাচটা এবার লো স্কোরিংই হয়ে আসছিল। কিন্তু চট্টগ্রামের উইকেটের কারণেই প্রত্যাশাটা ভিন্ন ছিল ক্রীড়ামোদীদের। কিন্তু সে প্রত্যাশার সিকিভাগও পূরণ করতে পারলো না স্বাগতিকরা।
শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৩ রান করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
টি-টোয়েন্টি মানেই ধুমধাড়াক্কা চার-ছক্কার খেলা। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দর্শকরা সেটা না দেখলেও তা নিয়মিতই দেখে থাকেন চট্টগ্রামে। এই মাঠ বরাবরই ব্যাটিং স্বর্গ। বিপিএলের সর্বোচ্চ ছয়টি স্কোর উঠেছে এই মাঠেই। উইকেট বিচারে তাই লক্ষ্যটা বেশ সাদামাটাই খুলনার জন্য।
অথচ নিজেদের ঘরের মাঠের প্রাণবন্ত উইকেটে শুরুতে রান দারুণ ছন্দেই তুলছিল চট্টগ্রাম। কিন্তু এরপর কী যেন হয়ে যায় দলটির। রানের গতি বাড়াতে গিয়ে একের এক ব্যাটার বিলিয়ে আসলেন উইকেট। শেষদিকে অভিজ্ঞ ব্যাটার নাঈম ইসলাম কিছুটা দায়িত্ব নিতে না পারলে একশ তুলতেই কষ্ট হয়ে যেত তাদের।
ঘরের মাঠে এদিন শুরুতেই দলকে হতাশ করেন কেনার লুইস। তাকে নিজের প্রথম বলেই বোকা বানান কোভিড মুক্ত হয়ে প্রথম মাঠে নামা নাবিল সামাদ। তার বলে আগে ব্যাট চালিয়ে শর্ট কভারে দাঁড়ানো ফরহাদ রেজাকে ক্যাচিং অনুশীলন করান তিনি।
অবশ্য ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হতে পারতেন তিনি। কামরুল ইসলাম রাব্বির বল লেগেছিল প্যাডে। আম্পায়ার আঙুল না তুললেও রিপ্লেতে দেখা যায় আউট ছিলেন তিনি। রিভিউ না নেওয়ায় সে যাত্রা বাঁচলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি এ ক্যারিবিয়ান।
লুইসের বিদায়ের পর নেমেই আগ্রাসী ঢঙ্গে ব্যাট চালাতে থাকেন আফিফ হোসেন। সে ওভারে একটি চার মারা এ ব্যাটার পরের ওভারে মারেন একটি করে চার ও ছক্কা। পরের ওভারে দুটি চার মেরে শুরু করেন আরেক ওপেনার জ্যাক উইলসও। ফলে রানের চাকা ছিল সচল। পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে ৪৬ রান পায় দলটি।
পাওয়ার প্লে শেষে অবশ্য রানের গতিতে কিছুটা লাগাম দিতে পারে খুলনা। টানা ২১ বলে আসে আসেনি কোনো বাউন্ডারি। দ্বিতীয় উইকেটে জ্যাক উইলস ও আফিফ ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন। তবে বড় ক্ষতি করার আগে জ্যাক উইলসকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা। অবশ্য অফস্টাম্পের বেশ বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান এ ইংলিশ অলরাউন্ডার।
আর এ জুটি ভাঙতেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দলটি। সাব্বির রহমান, অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ, বেনি হাওয়েল, শামিম হোসেনের মতো ব্যাটাররা তো সেটই হতে পারেননি। হাওয়েল ছাড়া সবাই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন সীমানায়। এমনকি সেট ব্যাটার আফিফও একই ধারায় ফিরে যান সাজঘরে। ফলে হঠাৎ চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন আফিফ। ৩৭ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ তরুণ। জ্যাক উইলসের ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান। শেষ দিকে ১৯ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন নাঈম। শরিফুল করেন হার না মানা ১২ রান।
খুলনার হয়ে সব বোলারই কম বেশি উইকেট পেয়েছেন। ৪ ওভার বল করে ১৮ রান দিয়ে ৩টি শিকার করেন থিসারা পেরেরা।
Comments