ঘরের মাঠে এসে চট্টগ্রামের হোঁচট

আসরের শুরুটা ছিল হার দিয়ে। এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ঢাকার প্রথম পর্ব শেষে যৌথভাবে শীর্ষে ছিল তারাই। প্রত্যাশা ছিল ঘরের মাঠে ফিরে সে ধারা বজায় রেখে অবস্থান আরও সুদৃঢ় করবে দলটি। কিন্তু সেখানে উল্টো হোঁচট খেয়েছে তারা। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় পুঁজিটা বড় করতে না পারায় খুলনা টাইগার্সের সঙ্গে পেরে উঠল না স্বাগতিকরা।

শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে খুলনা টাইগার্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৩ রান করে স্বাগতিকরা। জবারে ৭ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায় খুলনা। তিন ম্যাচে এটা তাদের দ্বিতীয় জয়। অন্যদিকে চার ম্যাচে এটা চট্টগ্রামের দ্বিতীয় হার।

সাদামাটা পুঁজি নিয়ে অবশ্য শুরুটা ভালোই করেছিল চট্টগ্রাম। শুরুতেই সৌম্য সরকার তুলে নেয় দলটি। করোনাভাইরাস মুক্ত হয়ে এদিন প্রথম মাঠে নেমেছিলেন এ ব্যাটার। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন স্কয়ার লেগে। তবে দ্বিতীয় উইকেটে রনি তালুকদারকে নিয়ে দলের হাল ধরেন আন্দ্রে ফ্লেচার। স্কোরবোর্ডে ৫০ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার।

রনিকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ। তার বলে লংঅন সীমানায় ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন জ্যাক উইলসের হাতে। তবে এর এক বল আগেই ফিরতে পারতেন রনি। বেঁচে গেছেন এডিআরসের সৌজন্যে। নাসুমের বল প্যাডে লাগার ব্যাটে লাগলেও আঙুল তুলেছিলেন আম্পায়ার। 

এরপর ফ্লেচারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। স্কোরবোর্ডে ৪৬ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। পরে চট্টগ্রাম অধিনায়ক মিরাজ ফেরান ফ্লেচারকে। ততোক্ষণে জয়ের ভিত পেয়ে যায় খুলনা। বাকি কাজ সেকুগে প্রসন্নকে নিয়ে প্রায় শেষ করেন মুশফিক। ৪৬ রানের জুটি গড়ে স্কোরবোর্ডে রান সমতা টেনে আউট হন প্রসন্ন।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন ফ্লেচার। ৪৭ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ ক্যারিবিয়ান। মুশফিক করেন অপরাজিত ৪৪ রান। ৩০ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন অধিনায়ক। রনির ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান।

চট্টগ্রামের পক্ষে ২৪ রানের খরচায় ২টী উইকেট পান মিরাজ।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দলকে হতাশ করেন কেনার লুইস। নাবিল সামাদের বলে আগে ব্যাট চালিয়ে শর্ট কভারে দাঁড়ানো ফরহাদ রেজাকে ক্যাচিং অনুশীলন করিয়ে সাজঘরে ফেরেন এ ওপেনার। অবশ্য ইনিংসের প্রথম বলে রিভিউ নিলে ফিরতে পারতেন কামরুল ইসলাম রাব্বির বলেই।

লুইসের বিদায়ের পর অবশ্য জ্যাক উইলসকে নিয়ে ভালো জুটি গড়েছিলেন আফিফ হোসেন। শুরু থেকেই আগ্রাসী ঢঙ্গে ব্যাটে নিয়মিত বাউন্ডারি মারেন তিনি। তার সঙ্গে যোগ দেন আরেক ওপেনার জ্যাক উইলসও। ফলে পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে ৪৬ রান পায় দলটি।

দ্বিতীয় উইকেটে উইলস ও আফিফ ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন। তবে বড় ক্ষতি করার আগে জ্যাক উইলসকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা। অবশ্য অফস্টাম্পের বেশ বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান এ ইংলিশ অলরাউন্ডার।

আর এ জুটি ভাঙতেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে চট্টগ্রাম। সাব্বির রহমান, অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ, বেনি হাওয়েল, শামিম হোসেনের মতো ব্যাটাররা তো সেটই হতে পারেননি। হাওয়েল ছাড়া সবাই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন সীমানায়। এমনকি সেট ব্যাটার আফিফও একই ধারায় ফিরে যান সাজঘরে। ফলে হঠাৎ চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন আফিফ। ৩৭ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ তরুণ। জ্যাক উইলসের ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান। শেষ দিকে ১৯ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন নাঈম। শরিফুল করেন হার না মানা ১২ রান।

খুলনার হয়ে সব বোলারই কম বেশি উইকেট পেয়েছেন। ৪ ওভার বল করে ১৮ রান দিয়ে ৩টি শিকার করেন থিসারা পেরেরা।

Comments

The Daily Star  | English

Manmohan Singh passes away at 92

Former Indian prime minister Manmohan Singh, the architect of India's economic reforms, passed away in New Delhi last night. He was 92.

2h ago