আড়াই বছর পর টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের ফিফটি
টি-টোয়েন্টিতে ফিফটি করার স্বাদ কেমন হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান! তা হবেই না বা কেন! ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের পর যে আর এই সংস্করণে হাফসেঞ্চুরি পাচ্ছিলেন না তিনি। বাংলাদেশের এই তারকা অলরাউন্ডারের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটল অবশেষে। বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ঝড়ো ফিফটি করলেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হাফসেঞ্চুরি করেন সাকিব। বাঁহাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর বল ওড়াতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে আফিফ হোসেনের তালুবন্দি হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ঠিক ৫০ রান। ৩১ বলের ইনিংসে তিনি মারেন সমান ৩টি করে চার ও ছক্কা। তিনটি ছক্কায় আবার টানা! বরিশালের ইনিংসের ১৫তম ওভারে সাকিবের তাণ্ডবে এলোমেলো হয়ে যান বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ।
সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৪৫ ইনিংস পর ফিফটি পেলেন সাকিব। তার আগের হাফসেঞ্চুরিটি ছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর এই মাঠেই ত্রিদেশীয় সিরিজে অপরাজিত ৭০ রান করেছিলেন তিনি। সেসময় বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বে থাকা সাকিব ৪৫ বল খেলে মেরেছিলেন ৮ চার ও ১ ছক্কা। তার ব্যাটে চড়েই আফগানদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৩৯ রান তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ।
মাঝে নিষেধাজ্ঞার কারণে এক বছর খেলতে পারেননি সাকিব। শাস্তির মেয়াদ শেষে মাঠে ফিরলেও ফিফটি পাওয়া হচ্ছিল না তার। বেশ কয়েকবার আটকে যান ৪০ পেরিয়ে। আগের ম্যাচেই যেমন খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে আশা জাগিয়ে ইতি ঘটে তার ২৭ বলে ৪১ রানের ইনিংসের। তবে এদিন আর হতাশায় পুড়তে হয়নি তাকে।
টি-টোয়েন্টিতে রানে ফেরার তীব্র তাগিদ যে সাকিবের মধ্যে রয়েছে, তার প্রমাণ মেলে এবারের বিপিএলের শুরু থেকেই। ঢাকা পর্বে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলনে ব্যাট হাতে কঠোর পরিশ্রম করেন তিনি। চলমান চট্টগ্রাম পর্বেও সবার আগে মাঠে পৌঁছে বাড়তি খাটুনি করতে দেখা যায় তাকে। কোনো কোনো দিন অনুশীলনে বোলিং, ফিল্ডিং বাদ দিয়ে কেবল ব্যাটিং নিয়েই ঘাম ঝরান তিনি।
ক্রিস গেইলের বিদায়ের পর ইনিংসের সপ্তম ওভারে উইকেটে যান সাকিব। পরের ওভারে কভার দিয়ে অফ স্পিনার আফিফকে চার মেরে পান প্রথম বাউন্ডারি। উইল জ্যাকস ও মেহেদী হাসান মিরাজের ওভারেও একটি করে চার আদায়ের পর তিনি কচুকাটা করেন নাসুমকে। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বলে টানা হাঁকান ছক্কা। প্রথমটি কাউ কর্নার দিয়ে, দ্বিতীয়টি লং অন দিয়ে আর শেষটি একদম বোলারের মাথার ওপর দিয়ে সোজাসুজি।
২৪ বলে ২৯ রানে থাকা সাকিব ফিফটি স্পর্শ করেন ৩০ বলে। কিন্তু এরপর আর টেকেননি। ১৭তম ওভারে আক্রমণে গিয়েই তাকে ফেরানো মৃত্যুঞ্জয় কাঁপিয়ে দেন বরিশালকে। আগের ম্যাচে বিপিএল অভিষেকে হ্যাটট্রিক করা এই তরুণ নিজের পরের ওভারে তুলে নেন ৩ উইকেট। তার তোপে ভালো অবস্থান থেকে পা হড়কে ৫ বল বাকি থাকতে বরিশাল গুটিয়ে যায় ১৪৯ রানে। শেষ ৭ উইকেট দলটি হারায় মোটে ১৯ রান যোগ করতে।
Comments