মুশফিকের বীরোচিত সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের ৩৬৫

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

শ্রীলঙ্কার পেসারদের তোপে ২৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছিল ধ্বংসস্তূপে। সেই মহাবিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তুলতে ব্যাট হাতে বীরত্ব দেখালেন মুশফিকুর রহিম। প্রথমে লিটন দাসের সঙ্গে রেকর্ড জুটি গড়লেন তিনি। এরপর এই অভিজ্ঞ তারকা একাই লড়লেন লেজের দিকের ব্যাটারদের নিয়ে। তার কল্যাণে প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রানের ভালো সংগ্রহ পেল বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির পর স্বাগতিকদের ইনিংস টেকে ২০ বল। ৯ উইকেটে ৩৬১ রান নিয়ে খেলতে নেমে তারা যোগ করতে পারে আর ৪ রান। ইবাদত হোসেন রানআউটে কাটা পড়লে থামে মুমিনুল হকের দল। টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৩৫৫ বলে ১৭৫ রানে। তার ব্যাট থেকে আসে ২১ চার।

প্রথম দিনের ৫ উইকেটে ২৭৭ রান নিয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। এদিন বাকি উইকেটগুলো খুইয়ে তারা যোগ করে আরও ৮৮ রান। এর সিংহভাগই আসে মুশফিকের ব্যাট থেকে।

সকালে উইকেট থেকে সুইং আদায় করে নেন লঙ্কান পেসার কাসুন রাজিথা। পাশাপাশি দেখা মেলে অসমান বাউন্সের। দেখেশুনে সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পর দিনের অষ্টম ওভারে বিপদ নেমে আসে বাংলাদেশের। অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে ব্যাট ছুঁইয়ে দ্বিতীয় স্লিপে কুসল মেন্ডিসের হাতে ধরা পড়েন লিটন। বুকে ব্যথা নিয়ে প্রথম দিন মধ্যাহ্ন বিরতির আগে বেরিয়ে যাওয়া এই লঙ্কান ক্রিকেটার সকালেই মাঠে ফেরেন।

২৪৬ বলে লিটনের রান ১৪১। তার ব্যাট থেকে আসে ১৬ চার ও ১ ছক্কা। আউট হওয়ার আগে মাহমুদউল্লাহর রেকর্ড নিজের করে নেন তিনি। টেস্টে সাত নম্বরে নেমে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এখন তার। ২০১৮ সালের নভেম্বরে মিরপুরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৩৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ।

শুরুর মহাবিপর্যয়ের পর মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে গড়া লিটনের অসাধারণ জুটি থামে ২৭২ রানে। টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে এটি যে কোনো উইকেটে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বোচ্চ। ৩৫৯ রানের জুটি নিয়ে তালিকার সবার উপরে থাকা জুটিতেও রয়েছে মুশফিকের নাম। ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই জুটিতে তার সঙ্গী ছিলেন সাকিব আল হাসান।

নাঈম হাসান চোট পাওয়ায় একাদশে সুযোগ মিলেছে মোসাদ্দেকের। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের পর প্রথমবার টেস্টে নেমেছেন তিনি। তবে প্রত্যাবর্তনের উপলক্ষকে স্মরণীয় করতে ব্যর্থ এই অলরাউন্ডার। ৩ বল খেলে আউট হন শূন্য রানে। অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকভেলার তালুবন্দি হন মোসাদ্দেক। তাকে ঝুলিতে পুরে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেটের স্বাদ নেন রাজিথা।

দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর মুশফিক বাংলাদেশের কাণ্ডারি হয়ে ছিলেন ক্রিজে। তুলনামূলক দ্রুতগতিতে রান তোলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে চারশ ছোঁয়া সংগ্রহ পেতে তার দিকে তাকিয়ে ছিল স্বাগতিকরা, সম্ভাবনা ছিল ডাবল সেঞ্চুরিরও। তবে সঙ্গীর অভাবে সেসব পূরণ হয়নি।

মুশফিকের সঙ্গে ৪৯ রানের অষ্টম উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ার পর বিদায় নেন তাইজুল ইসলাম। পেসার আসিথা ফার্নান্দোর বাউন্সারে পরাস্ত হয়ে ডিকভেলার হাতে ক্যাচ দেন তিনি। তাইজুলের রান ৩৭ বলে ১৫। নিজের পরের ওভারে আসিথা একই রকমের ডেলিভারিতে কুপোকাত করেন সৈয়দ খালেদ আহমেদকেও। ২ বল খেলে ডাক মারেন তিনি।

দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে রান আউট হয়ে বিদায় নেওয়া ইবাদতও রানের খাতা খুলতে পারেননি ২০ বল খেলে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসে যা ষষ্ঠ শূন্য। অর্থাৎ ১১ ব্যাটারের মাত্র পাঁচজন রানের দেখা পান।

সফরকারী শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা কোনো প্রভাব রাখতে ব্যর্থ বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে। ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে দুই পেসার মিলে নেন ৯ উইকেট। রাজিথার শিকার ৬৪ রানে ৫ উইকেট। আসিথা ৪ উইকেট নেন ৯৩ রানে।

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Discrimination Students Movement

Students to launch political party by next February

Anti-Discrimination Student Movement and Jatiya Nagorik Committee will jointly lead the process

11h ago