প্রথমবার টেস্টে টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি মুশফিকের
ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে মুশফিকুর রহিম যখন মাঠে যান, তখন ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। তিনি ক্রিজে মানিয়ে নেওয়ার আগেই আরও ২ উইকেট খুইয়ে মহাবিপাকে পড়ে টাইগাররা। ওই অবস্থায় চোখ রাঙাচ্ছিল অল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার জোরালো শঙ্কা। তবে অমিত প্রতিভাবান লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে দুর্দান্ত এক জুটি গড়লেন অভিজ্ঞ মুশফিক। নিখুঁত ব্যাটিংয়ে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির স্বাদ নিলেন তিনি।
সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগার স্পর্শ করেন মুশফিক। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় সকালেই ব্যাট হাতে নেমে পড়ার পর নিবেদন দেখিয়ে ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে তৃতীয় সেশনে তিনি তুলে নেন সেঞ্চুরি। ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন সংস্করণ টেস্টে এটি তার নবম শতরানের ইনিংস।
দিনের ৭৬তম ওভারটি করতে আসেন লঙ্কান অফ স্পিনার রমেশ মেন্ডিস। পঞ্চম ডেলিভারিটি তিনি ফেলেন ভালো লেংথে। অফসাইডে বলটি ঠেলে দিয়েই উল্লাসে মাতেন ৩৪ বছর বয়সী মুশফিক। চওড়া হাসিতে মুষ্টিবদ্ধ হাত বাতাসে ছোঁড়ার পর পরম করুণাময়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মাঠে সিজদাহ দেন তিনি। গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টে একমাত্র ইনিংসে ১০৫ রান এসেছিল তার ব্যাট থেকে।
মুশফিক হাফসেঞ্চুরিতে পৌঁছেছিলেন ১১২ বলে। তিন অঙ্কে যেতে তার লাগে ২১৮ বল। আগের ম্যাচেও মাটি কামড়ে উইকেটে টিকে থাকার দৃঢ়তা দেখিয়েছিলেন তিনি। ওই সেঞ্চুরিটি এসেছিল ২৭০ বলে। যা তার সাদা পোশাকের দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্যারিয়ারের মন্থরতম সেঞ্চুরি। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি পেলেন মুশফিক। এর আগে ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫৯ ও ভারতের বিপক্ষে ১২৭ রান করেছিলেন তিনি। আর এবারই প্রথম টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকালেন তিনি।
মুশফিকের সেঞ্চুরির বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ২৪৮ রান। তার সঙ্গী লিটনও সেঞ্চুরি আদায় করে নিয়ে খেলছেন ১২৭ রানে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন রেকর্ড ষষ্ঠ উইকেট জুটির রান ২২৪। তারা যখন ক্রিজে একসঙ্গে হয়েছিলেন, তখন ৫ উইকেটে ২৪ রান নিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল স্বাগতিকরা।
লঙ্কান বোলারদের হতাশায় পুড়িয়ে প্রতিরোধ গড়ে টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে সব মিলিয়ে ত্রয়োদশ দুইশ রানের জুটি উপহার দিলেন মুশফিক ও লিটন। ষষ্ঠ উইকেটে দলের আগের সর্বোচ্চ জুটির দেখা মিলেছিল ১৫ বছর আগে। সেবারও কীর্তির অংশ ছিলেন মুশফিক, প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কাই। ২০০৭ সালে কলম্বোর পি সারা ওভালে মোহাম্মদ আশরাফুলের সঙ্গে ১৯১ রান যোগ করেছিলেন তিনি।
Comments