সমালোচনা এখন আর ভাবায় না লিটনকে

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ব্যাট হাতে দুরন্ত ছন্দে থাকা লিটন দাসকে সমালোচনা আর ভাবায় না। কারণ, তার কাছে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের চাওয়া যে অনেক বেশি সেটা অনুধাবন করতে পেরেছেন। পাশাপাশি এই তারকা উইকেটরক্ষক ব্যাটার ব্যর্থতা থেকেই সফলতার রসদ খুঁজে নিতে শিখেছেন। তার সকল মনোযোগ এখন নিয়মিত অনুশীলন এবং সেখানে যে পদ্ধতি অনুসরণ করে উন্নতির সিঁড়িতে চড়েছেন, সেসবের দিকে।

মঙ্গলবার মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিনে খুব বেশি সময় ক্রিজে থাকা হয়নি লিটনের। আগের দিনের ১৩৫ রানের সঙ্গে আর মাত্র ৬ রান যোগ করতে পারেন তিনি। এদিন সকালে শ্রীলঙ্কার পেসার কাসুন রাজিথার বলে স্লিপে কুসল মেন্ডিসের তালুবন্দি হওয়ার আগে ২৪৬ বল মোকাবিলায় ১৬ চার ও ১ ছক্কা মারেন তিনি।

চলতি বছর টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় দুইয়ে আছেন লিটন। ২০২২ সালে ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন সংস্করণে ষষ্ঠ ম্যাচ খেলতে নামা এই ক্রিকেটার ৯ ইনিংসে ৫৬.২২ গড়ে করেছেন ৫০৬ রান। দুটি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি রয়েছে তার নামের পাশে। ৫ টেস্টে ৭৫১ রান নিয়ে তার উপরে আছেন কেবল অস্ট্রেলিয়ার উসমান খাওয়াজা।

লিটনের বিদায়ের পর বাংলাদেশকে টানেন আরেক সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম। ফলে শুরুর ধকল কাটিয়ে প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান তোলে তারা। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে শক্ত অবস্থানে থেকে দিন শেষ করেছে সফরকারীরা। স্বাগতিক বোলারদের হতাশ করে তারা করেছে ২ উইকেটে ১৪৩ রান। ২২২ রানে পিছিয়ে থেকে আগামীকাল তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে ও নাইটওয়াচম্যান রাজিথা।

১০ ওভার বাকি থাকতে দিনের খেলার ইতি ঘটার পর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে আসেন লিটন। তিনি যখন উইকেটে গিয়েছিলেন, তখন ২৪ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে কাঁপছিল দল। তবে মুশফিকের সঙ্গে রেকর্ড জুটিতে নান্দনিক ব্যাটিংয়ে সেই চাপ আলগা করে ফেলেন তিনি। মাঠের ভেতরের চাপ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মাঠের বাইরের চাপ নিয়ে নিজের ভাবনা জানান লিটন, 'সমালোচনা- এই জিনিসটা হবে। আমার যেহেতু জীবনটা ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে, ভালো খেললে আপনারা বাহবা দিবেন বা জনগণ বাহবা দিবে। খারাপ খেললে একই জিনিসটা (প্রতিক্রিয়া) দিবে। কারণ, তারা চায় আমি পারফর্ম করি। এই জিনিসটা এখন আর আমাকে ভাবায় না।'

ক্যারিয়ারের প্রথম ২৫ টেস্টে তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগার অধরা ছিল লিটনের। এরপর গত ছয় মাসে নিজের সবশেষ ৮ ম্যাচে তিনি পেয়েছেন তিনটি সেঞ্চুরি। সাদা পোশাকে ঝলমলে সময় পার করতে থাকার পেছনে আত্মনিবেদন, পরিশ্রম ও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণকে কৃতিত্ব দেন তিনি, 'আমি চেষ্টা করি, আমি কতখানি মনযোগী, অনুশীলনের পদ্ধতিটা আমি নিয়মিত অনুসরণ করছি কিনা। আমি যদি আমার প্রক্রিয়া অনুসরণ না করি, তাহলে নিজের কাছে দোষী (থাকব) যে আমি করছি না। প্রক্রিয়া অনুসরণ করার চেষ্টা করি, বাকিটা উপরওয়ালার হতে।'

ব্যাট হাতে বাজে সময় গেলে লিটনকে সমর্থন যোগান কে? এই প্রশ্নে তার জবাবে মিশে থাকল গভীর জীবনবোধ, 'কেউ কাউন্সেলিং করে না। মানসিকভাবে শক্ত আসলে (কেউ) তখনই হয়, যখন কেউ ব্যর্থ হয়। মানুষ উন্নতিটা ওখান থেকেই করে। আপনি ব্যর্থ না হলে বুঝবেন না আপনার মানসিকতা কোনদিকে যাচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Strikes on Iran mark Trump's biggest, and riskiest, foreign policy gamble

The dramatic US strike, including the targeting of Iran’s most heavily fortified nuclear installation deep underground, marks the biggest foreign policy gamble of Trump’s two presidencies and one fraught with risks and unknowns.

1h ago