অথচ মিরাজ-আফিফের একাদশে থাকার নিশ্চয়তাই ছিল না
লক্ষ্যটা খুব বড় ছিল না। কিন্তু দলীয় ৪৫ রানেই নেই প্রথম সারির ৬ উইকেট। রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে রেকর্ড জুটি গড়েই দলকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও আফিফ হোসেন। অথচ দুই দিন আগেও এই দুই ক্রিকেটারের নাকি একাদশে থাকারই নিশ্চয়তা ছিল না! ম্যাচ শেষে এমন তথ্যই দিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
কারণটাও অবশ্য যথার্থ। অনেক দিন থেকেই রানে ছিলেন না আফিফ। সংস্করণ ভিন্ন হলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা বিবর্ণ কেটেছে। বিপিএলেও আহামরি কিছু করতে পারেননি। তাই তাকে বাদ দেওয়ার ভাবনা ছিল নির্বাচকদের। আর মিরাজ তো অনেক দিন থেকে ওয়ানডে দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে আছেন। তাই এবার আফগানিস্তান সিরিজে এই দুই খেলোয়াড়ের স্কোয়াডে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিলই।
তবে শেষ পর্যন্ত তাদের ব্যাটেই স্মরণীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে হারায় টাইগাররা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.১ ওভারে ২১৫ রানে আফগানদের গুটিয়ে দেয় তারা। এরপর লক্ষ্য তাড়ায় ফজল হক ফারুকির তোপে পড়ে এক সময়ই হারই দেখছিল স্বাগতিকরা। তবে ধ্বংসস্তূপ থেকে বাংলাদেশকে টেনে বের করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মিরাজ ও আফিফ।
জয় পাওয়ায় খুশি হলেও এই দুই তরুণ না থাকলে কী হতো তা যেন ভেবেই পাচ্ছেন না বিসিবি সভাপতি, 'পরশু দিনও যে এরা (মিরাজ ও আফিফ) খেলবে এমন নিশ্চয়তা ছিল না। একাদশে এরা থাকবে কি-না এর নিশ্চয়তা ছিল না। এখানে অন্য নামও ছিল। চিন্তা করছি, যদি এরা না খেলত, তাহলে কী হতো? আমাদের বাংলাদেশ জিতেছে, খুশি না হওয়ার কোনো কারণ নেই। আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমরা যে জিতব, এটা আমার ধারণা, সবাই তা-ই ভেবেছে। এটা আশ্চর্য হওয়ার বিষয় না।'
রান তাড়ায় শুরুতেই কোণঠাসা হয়ে পড়া বাংলাদেশের ইনিংস যেভাবে মেরামত করেন আফিফ ও মিরাজ, তাতে মুগ্ধ নাজমুল, 'প্রথমে ভেবেছিলাম, ৫০ ওভার খেলতে পারলে জিতব। তবে আমি বলছিলাম, এই দুই জন খেলে যেতে পারে, তাহলে জেতার সম্ভাবনা আছে। তা-ও প্রায় অসম্ভব মনে হয়েছিল। কারণ, যেভাবে আমাদের প্রথম ৬ উইকেট গেল, তাতে মনে হয়েছে, ওদের বল খেলা সম্ভবই না। ওরা (আফিফ ও মিরাজ) যে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলে গেল, কোনো ঝুঁকি না নিয়ে, শুধু আত্মবিশ্বাস নিয়ে, ওদের কখনোই মনে হয়নি ওরা নার্ভাস। যত সময় যাচ্ছিল, তত বিশ্বাসটা জোরালো হচ্ছিল যে ওরা থাকলে জিতব।'
দুই তরুণের ব্যাটে জয় পেয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়েও দুশ্চিন্তা কমেছে বোর্ড প্রধানের, 'যে পরিস্থিতিতে আমরা পড়েছিলাম, এটা সামাল দেওয়ার মতো সাহস ও দৃঢ়তা যে... আমরা জিতব, পারব, বিশ্বাস... এটা যে আমাদের দুই তরুণ দেখিয়েছে, তা অসাধারণ। এটা আমাদের নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের জন্য একটা ভালো খবর। আমাদের সামনে ভবিষ্যৎ ততটা খারাপ না, যতটা ভেবেছিলাম।'
Comments