বাংলাদেশকে আরও শক্ত হতে হবে, স্লেজিং প্রসঙ্গে এলগার
প্রথম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকা বাজেভাবে গালাগালি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। তবে এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ডিন এলগার। তিনি জানান, মাঠে বাংলাদেশের করা স্লেজিংই ফিরিয়ে দিয়েছেন তারা। এই পর্যায়ের ক্রিকেটে যা খুব স্বাভাবিক। এসব নিয়ে অভিযোগ তোলায় মুমিনুলরা এই তীব্রতার ক্রিকেটে অভ্যস্ত নন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
ডারবান টেস্টে ৫৩ রানে গুটিয়ে বিশাল হারের পর মুমিনুল বলেছিলেন, প্রোটিয়া ক্রিকেটাররা তাদের বাজেভাবে গালাগাল দিয়েছেন। পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের আগের দিন বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এলগার জানান তারা বাজে কোন গালি দেননি, করেছেন স্বাভাবিক স্লেজিং, 'আমার মনে হয় না তারা ঠিক বলেছে। আমরা প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলি। যদি কিছু হয়ে থাকে সেটার শিকার আমরাও হয়েছিলাম। আমরাও ব্যাট করার সময় স্লেজিংয়ের শিকার হয়েছিলাম।'
প্রোটিয়া কাপ্তানের মতে এই তীব্রতার ক্রিকেটে মাঠের পাশাপাশি মুখের লড়াইও হয়, সেট সহ্য করার মানসিকতা থাকতে হবে। যা বাংলাদেশের নেই বলে ইঙ্গিত তার, 'এটা টেস্ট ক্রিকেট। এখানে পুরুষ আবহে খেলা হয়। এই পর্যায়ে খেলা হলে কঠোর লড়াই আশা করা হয়। তার মানে এই না যে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের বাজে ভাষা ব্যবহার করব। কারণ আমরা তাদের শ্রদ্ধা করি। আমরা কেবল যা গ্রহণ করেছি সেটাই ফিরিয়ে দিয়েছি। আমার মনে হয় তাদের আরও শক্ত হতে হবে। হয়ত এই পর্যায়ে খেলার জন্য এখনো তারা অভ্যস্ত নয়।'
দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৬৭ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৯৮ রান করে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ইনিংসে তারা জড়ো করে আরও ২০৪ রান। ২৭৪ রানের লক্ষ্য পেয়ে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ৫৩ রানে। প্রতিপক্ষকে ক্রিকেটীয় দক্ষতার পাশাপাশি শরীরী ভাষাতেও তারা হারাতে পেরেছেন, এই ব্যাপারটাকে টেস্ট ক্রিকেটেরই সৌন্দর্য বলে আখ্যা তার, 'হয়ত বাংলাদেশ এই মুহূর্তে একটা মানসিক বাধায় আটকে পড়েছে, যা পুরোপুরি আমাদের হাতে চলে এসেছে। এটাই গেমম্যনশিপের থেকে আসে। আপনাকে প্রতিপক্ষকে হতবুদ্ধি করে দিতে হবে, খেলা থেকে ছিটকে দিতে হবে। এটাই টেস্ট ক্রিকেটের আবেগীয় ও মানসিক দিক যা মানুষ মাঝেমাঝে ভুলে যায়। আপনি যদি আপনার দক্ষতার বক্সে টিক চিহ্ন দেন এবং সামর্থ্যের পুরোটা দেন তাহলে টেস্টে যোগফল ভাল হয়।'
প্রথম টেস্টে আম্পায়ারিং নিয়েও হইচই করেছে বাংলাদেশ। দুই আম্পায়ার মরিস এরাসমাস ও আদ্রিয়ান হোল্ডস্টকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের ইঙ্গিত করেন বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। অধিনায়ক মুমিনুলও তাতে সায় দেন, টুইট করে তার আগে একইরকম কথা বলেন সাকিব আল হাসান। চতুর্থ দিনের খেলা শেষে মাঠে নেমে আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় সেই টেস্ট না খেলা তামিম ইকবালকে।
এই টেস্টে আম্পায়ারদের দেওয়া ৮টি ভুল সিদ্ধান্তের (যা রিভিউতে বদল হয়) চারটি গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। তবু আম্পায়ারিং নিয়ে কোন অভিযোগ নেই তাদের, 'আম্পায়ারিং ছিল কঠিন। আমার মনে হয় না তারা পিচ থেকে সাহায্য পেয়েছে। বিশেষ করে বাউন্সের উঠা-নামা তাদের চ্যালেঞ্জে ফেলেছে। মরিস (এরাসমাস আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ার। আদ্রিয়ান (হোল্ডস্টক) টেস্ট পরিচালনা শুরু করেছেন, অবশ্যই খারাপ আম্পায়ার না। দিনশেষে তারাও মানুষ, কিছু ভুল হতেই পারে। আম্পায়ার যাই সিদ্ধান্ত দেন সেটাকে আমাদের শ্রদ্ধা জানাতে হবে।'
প্রথম টেস্টের পর 'অ্যাবিউজ' এর অভিযোগ তুললেও এদিন মুমিনুল এই অবস্থান থেকে সরে আসার আভাস দেন। এবার তিনি জানান স্লেজিং নিয়ে তাদের কখনই কোন অভিযোগ ছিল না।
Comments