বার্ল-জঙ্গুইর ঝড়ে বাজে অবস্থা থেকে জিম্বাবুয়ের জুতসই পুঁজি
১৩তম ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ৬৭ রান। তিন অঙ্ক স্পর্শ করা নিয়েই তখন সংশয়ে স্বাগতিকরা। রায়ান বার্ল আর লুক জঙ্গুইর ঝড়ে সেই রান গিয়ে থামল দেড়শো ছাড়িয়ে। এই পথে নাসুম আহমেদের এক ওভারে ৫ ছক্কায় ৩৪ তুলে নেন বার্ল।
বার্ল-জঙ্গুইর ঝড়ে শেষ ৬ ওভারে জিম্বাবুয়ে তুলেছে ৮০ রান। টস জিতে আবারও আগে ব্যাটিং বেছে জিম্বাবুয়ে করেছে ১৫৬ রান।সাতে নামা বার্ল দলের হয়ে ২৮ বলে করেছেন সর্বোচ্চ ৫৪ রান। ২০ বলে ৩৫ করেছেন জঙ্গুই।
মঙ্গলবার হারারে স্পোর্টস ক্লাবে ব্যাট করতে নেমেই ঝড় শুরুর চেষ্টা করেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার রেজিস চাকাভা ও ক্রেইগ আরভিন। এক বাউন্ডারিতে মোস্তাফিজুর রহমানের প্রথম ওভার থেকে আসে ৬ রান। শেখ মেহেদীর পরের ওভারে এক ছক্কায় ৮ আসার পর আগের ম্যাচের হিরো অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনকে এলোমেলো করে দেন তারা। মোসাদ্দেকের ওভার থেকে ২ চার ও ১ ছক্কায় তুলে নেন ১৫ রান।
পরের ওভারেই পথ হারাতে থাকে জিম্বাবুয়ে। নাসুমের প্রথম হলেই শর্ট কাভারে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেয় বিপদজনক হতে থাকা চাকাভা।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারেই সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় জিম্বাবুয়ে। শেখ মেহেদীর পর পর দুই বলে ফিরে যান ওয়েসলি মাধভেরে আর সিকান্দার রাজা। মাধভেরে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে হন বোল্ড। ক্রিজে এসেই রানের খাতা খোলার অস্থিরতায় কাবু হন আগের দুই ম্যাচের ফিফটি করা রাজা।
পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৪৫। এরপর ক্রমশ পড়তে থাকে স্বাগতিকদের। ব্যাট করার জন্য দারুণ উইকেট অহেতুক উইকেটও হারাতে থাকে তারা।
নবম ওভারে মোসাদ্দেক হোসেনের বলে বাজে শটে আত্মাহুতি দিয়ে ফিরে যান শন উইলিয়ামস। মাহমুদউল্লাহর বলে আরও দৃষ্টিকটুভাবে বিদায় হন ক্রেইগ আরভিন। এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেছিলেন আরভিন। উইকেট কিপার এনামুল হক বিজয় বলটা ধরতে পারেননি প্রথম দফায়। ফেরারও চেষ্টা করেননি আরভিন। বিজয় পরে বল ধরে স্টাম্প উপড়ে নেন। ৫৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।
চরম বিপাকে পড়া জিম্বাবুয়েকে টানতে মিল্টন শুম্ভাকে নিয়ে হাল ধরেন বার্ল। শুম্বা টেকেননি বেশিক্ষণ। ১১ বল খুইয়ে ৪ রান করে মোস্তাফিজের বলে কিপারের গ্লাভসে ধরা দেন তিনি।
৬৭ রানে ৬ উইকেট হারানো স্বাগতিকরা তখন তিন অঙ্ক স্পর্শ করা নিয়ে শঙ্কায়। লুক জঙ্গুইকে নিয়ে তখনই ঘুরে দাঁড়ানো শুরু বার্লের।
১৫তম ওভারে নাসুম আহমেদকে পিটিয়ে ৫ ছক্কা আর এক ৪ চারে ৩৪ তুলে নেন বার্ল। বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েন নাসুম। বার্লকে মারতে দেখে জঙ্গুইও তাল মেলান। হাসান মাহমুদের পরের ওভার থেকে আসে ১০ রান। শেখ মেহেদীর ১৭তম ওভার থেকে ১৭ রান তুলে নেন তারা।
১৯তম ওভারে ক্যাচ তুলে যখন জঙ্গুই বিদায় নিচ্ছেন তখন দেড়শোর কাছে দলের রান। সপ্তম উইকেটে এসে গেছে ৩১ বলে ৭৯ রানের জুটি। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সপ্তম উইকেট বা তার নিচের জুটিতে এত কম বলে এত বড় রানের জুটি আর দেখা যায়নি।
এই জুটিতে ২০ বলে ৩৫ করে অবদান জঙ্গুইর। হাসানের ওই ওভারে বিদায় নেন বার্লও। আরেকটি ছক্কার নেশায় ২৮ বলে ৫৪ রানে শেষ হয় তার ইনিংস।
শেষ অবধি এই দুজন ক্রিজে না থাকায় কিছুটা স্বস্তি পায় বাংলাদেশ। শেষ দুই ওভারে আসে কেবল ১০ রান। মূলত ১৪ থেকে ১৮ - এই চার ওভারে আসে ৭০ রান। উইকেট ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো হওয়ায় এই রান তাড়া করা খুব বেশি কঠিন হওয়ার কথা নয় বাংলাদেশের।
Comments