মোসাদ্দেকের পাঁচ উইকেটে সাদামাটা লক্ষ্য পেল বাংলাদেশ
পরিচয়টা ব্যাটার হিসেবেই। দলের প্রয়োজনে বোলিংটাও করে থাকেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। পার্টটাইম বোলার হিসেবেই। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যেন বিশেষজ্ঞ বোলারই বনে গেলেন তিনি। তার ঘূর্ণির মায়াজালে ভেঙে পড়ে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইন আপ। তবে অভিজ্ঞ ব্যাটার সিকান্দার রাজার ব্যাটে সাদামাটা পুঁজি পেয়েছে স্বাগতিকরা।
রোববার হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৫ রান করেছে জিম্বাবুয়ে।
বল হাতে মোসাদ্দেকের ঘূর্ণিতেই লড়াই করে বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারে ১৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে যেখানে উইকেট নিয়েছেন মাত্র সাতটি, সেখানে এদিনই পেলেন পাঁচটি। ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে খরচ করেন মাত্র ২০ রান। ২৪ বলের ১৫টিই ডট দিয়েছেন তিনি। ফলে দলীয় ৩১ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে। মূলত তার ব্যাটেই লক্ষ্যটা হাতের নাগালে রাখে বাংলাদেশ। এই মাঠেই প্রথম ম্যাচে ২০৫ রান তুলেছিল স্বাগতিকরা।
এদিন পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন আনেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। দুই প্রান্তে স্পিন দিয়ে শুরু করেন। শুরুটা করেন মোসাদ্দেককে দিয়ে। আর অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান শুরুতেই দেন মোসাদ্দেক। প্রথম বলেই উইকেট। যদিও বলে আহামরি কিছুই ছিল না। জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে খেসারৎ দেন রেগিস চাকাভা। উইকেটের পেছনে দারুণ ক্যাচ লুফে নেন সোহান।
একই ওভারে আবার আঘাত হানেন মোসাদ্দেক। এবার ফেরান ওয়েসলি মাধেভেরেকে। প্রথম ম্যাচে এই ব্যাটারের দারুণ এক ফিফটিতে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল টাইগাররা। কাভারে শেখ মাহেদি হাসানকে ক্যাচিং অনুশীলন করিয়ে সাজঘরমুখী হন মাধেভেরে। ফলে প্রথম ওভারেই জোড়া ধাক্কায় জিম্বাবুয়েকে চাপে ফেলে দেন মোসাদ্দেক।
টি-টোয়েন্টিতে কখনোই দুই উইকেটের বেশি না পাওয়া মোসাদ্দেক দ্বিতীয় ওভারে ফিরে ফের শিকার ধরেন। এবার সাজঘরে পাঠান জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে। তবে এ উইকেটে অবদানটা বেশি লিটন দাসের। মোসাদ্দেকের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়েছিলেন আরভিন। তবে স্লিপে বুলেট গতির ক্যাচ দারুণ দক্ষতায় তালুবন্দি করেন লিটন।
মোসাদ্দেক জাদু চলে পরের ওভারেও। এবার অভিজ্ঞ ব্যাটার শেন উইলিয়ামসকে শিকার করেন তিনি। তার বলে বোলারদের মাথার উপর দিয়ে এগিয়ে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টা করেছিলেন উইলিয়ামস। তবে টাইমিংয়ে হেরফের করে ক্যাচ তুলে দেন বোলারের হাতে।
পাওয়ার পরও দুর্দান্ত মোসাদ্দেক। চতুর্থ ওভারে এসে পঞ্চম শিকার করেন তিনি। অফস্টাম্পের বাইরের বলে স্লগ সুইপ করেছিলেন মিল্টন শুম্বা। স্কয়ার লেগে দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ লুফে নেন হাসান মাহমুদ। পেয়ে যান টি-টোয়েন্টি তো বটেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্যারিয়ারেই প্রথম ফাইফার পান তিনি।
এরপর রাজার প্রতিরোধ। সঙ্গী হিসেবে পান রায়ান বার্লকে। গড়েন ৮০ রানের দারুণ এক জুটি। মূলত এ জুটিতে ভর করেই লড়াইয়ে ফেরে জিম্বাবুয়ে। শুরুতে কিছুটা দেখে শুনে খেলেন। ১৩তম ওভারে পার্টটাইম স্পিনার আফিফ হোসেন বোলিংয়ে আসলে তার উপর চড়াও হন এ দুই ব্যাটার। সে ওভারে ১২ রান তুলে চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন। এরপর প্রায় নিয়মিতই বাউন্ডারি তুলে নেন তারা। ১৮তম ওভারে বার্লকে বোল্ড করে এ জুটি ভাঙেন হাসান। মোস্তাফিজুর রহমানের করা পরের ওভারে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আকাশে বল তুলে দেন রাজা। মুনিম শাহরিয়ারের দারুণ ক্যাচে শেষ হয় এ ব্যাটারের লড়াই।
টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি তুলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬২ রানের ইনিংস খেলেন রাজা। ৫৩ বলের লড়াকু ইনিংসটি তিনি সাজান ৪টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে। বার্লের ব্যাট থেকে আসে ২ রান। ৩১ বলে ৩টি চারের সাহায্যে এ রান করেন এ অলরাউন্ডার। এছাড়া লুক জংবি কেবল দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন। ১১ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
Comments