শারজাহর মাঠে কি আসলেই মিরপুরের ছায়া?
এমনিতে শারজাহর মাঠ আকারে বেশ ছোট। বছরের মাঝামাঝি সময়টায় এখানে বড় রানের ম্যাচ দেখা যায় অহরহ। তবে অতি ব্যবহার আর বছরের এই সময়ের বিচারে শারজাহর উইকেট এখন বড় আলোচনায়। শারজাহর উইকেট থেকে রান বের করা বেশ কঠিন। এতে কি আছে মিরপুরে শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সঙ্গে কোন মিল? খানিকটা তলিয়ে দেখা যাক।
আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে নামবে বাংলাদেশ। তার আগের দিন উইকেট নিয়ে বেশ আশাবাদ শুনিয়ে গেলেন বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, 'শারজাহর উইকেট ঢাকার মত। আশা করি এটা কালকের ম্যাচে আমাদের সহায়তা করবে।'
ঢাকার মতো উইকেট মানে হচ্ছে মন্থর আর টার্নিং। যেখানে স্পিনাররাই রাখবেন মূখ্য ভূমিকা। কিন্তু শারজাহতে বিশ্বকাপ, আইপিএলসহ গত কয়েকট ম্যাচ তলিয়ে দেখলেই এমন ছবি খাপে খাপে মিলে না। স্পিনাররা এখানে ভালো করেন বটে তবে একই সঙ্গে দারুণ প্রভাব রাখেন পেসাররাও। উইকেট কিছুটা মন্থর হলেও হালকা ঘাস থাকায় বল খুব আহামরি টার্ন করে না। এতে বরং ছোট ছোট স্যুয়িং আদায় করে সুবিধা যায় পেসারদের দিকে।
ডমিঙ্গো অবশ্য পরে যোগ করেন, উঁচু পেসাররা এখানে নিতে পারেন সুবিধা। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে কয়েক বছর আগে খেলতে এসে মরনে মরকেলের সুবিধা পাওয়ার কথা স্মরণ করেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে আইপিএল আনরিক নরকিয়া, হার্শাল প্যাটেলদের দারুণ বল করতে দেখা গেছে শারজায়।
এমনকি সব শেষ যে ম্যাচ হয়েছে শারজায় সেখানেও গতিময় পেসারদের সাফল্য পেতে দেখা গেছে। নেদারল্যান্ডকে অল্প রানে গুটিয়ে দিতে লেগ স্পিনার ভানিন্দু হাসারাঙ্গা ৯ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন বটে তবে তাকে ছাপিয়ে সেরা বোলার পেসার লাহিরু কুমারা। মাত্র ৭ রানেই তার শিকার ছিল ৩ উইকেট।
মিরপুরের উইকেট আরও অনেক বেশি মন্থর এবং একই সঙ্গে টার্নিং। মিরপুরে পেসাররা একটু বাড়তি গতিতে বল করলেই মার খাওয়ার শঙ্কা থাকে। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক এরকম বল করে বেশ কিছু রান বিলিয়েছিলেন। কিন্তু শারজায় গতিময় বোলারদেরও মারা হয় কঠিন।
শারজার মাঠে আরেকটি মূল জায়গায় হচ্ছে পাওয়ার প্লে। এখানে পাওয়ার প্লেতে রান উঠে বেশ ভালো গতিতে। পাওয়ার প্লে আভাস দেয় বড় রানের। কিন্তু পাওয়ার প্লে পেরিয়ে যাওয়ার পর রান তোলা হয়ে যায় কঠিন। নামিবিয়ার বিপক্ষে আয়ারল্যান্ড পাওয়ার প্লেতে করেছিল বিনা উইকেটে ৫৫ রান। ১৭০ রানের আভাস তখন স্পষ্ট। কিন্তু পরে তারা করতে পারে কেবল ১২৫ রান। ম্যাচের আয়ু বাড়তেই ব্যাটসম্যানদের কাজটা হয়েছে কঠিন।
শারজার উইকেটে তাই বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে কৌশলী এক ম্যাচ। একাদশ তৈরি করা থেকে ম্যাচের পরিকল্পনার অতি ছোট বিষয়ও রাখতে পারে বড় ভূমিকা।
Comments